image
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : ওষুধ ছিটিয়ে বীজতলা রক্ষার চেষ্টায় কৃষক -সংবাদ

ফুলবাড়ীতে সূর্যের আলো না পেয়ে নষ্ট হচ্ছে বীজতলা

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার প্রভাবে বোরো ধানের বীজতলায় দেখা দিয়েছে মারাত্মক সমস্যা। সূর্যের আলো না পাওয়ায় অনেক বীজতলার চারা হলুদ হয়ে যাচ্ছে, কোথাও চারা গজাচ্ছে না, আবার কোথাও চারাগাছ মরে যাচ্ছে। এতে আসন্ন বোরো মৌসুম নিয়ে গভীর উদ্বেগে পড়েছেন কৃষকেরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া বিরাজ করায় বীজতলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।

আলাদিপুর গ্রামের বোরো চাষি তারাপদ রায় বলেন, ঘন কুয়াশা ও প্রচ- শীতের কারণে সূর্যের আলো ঠিকমতো পাচ্ছে না বীজতলা। এতে চারাগাছ দুর্বল হয়ে পড়ছে, অনেক ক্ষেত্রে নষ্টও হয়ে যাচ্ছে।

গোয়ালপাড়া গ্রামের কৃষক পরীক্ষিত চন্দ্র রায় জানান, চারাগুলো একটু বড় হওয়ার পরই কুয়াশা ও শীতের কারণে হলুদ হয়ে যেতে শুরু করেছে। দ্রুত আবহাওয়ার উন্নতি না হলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তখন বাইরে থেকে চারা কিনে জমিতে লাগাতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

কাঁটাবাড়ী গ্রামের বর্গাচাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, এক কাঠা বীজতলা তৈরি করতে আড়াই হাজার টাকার মতো খরচ হয়। যদি এই শীত ও কুয়াশায় চারা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পরে চারা কিনতে গিয়ে আরও বেশি টাকা গুনতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে বীজতলায় ওষুধ স্প্রে করছি।

একই গ্রামের বোরো চাষি হিরেন্দ্রনাথ বর্মন জানান, শীত ও কুয়াশার কারণে চারা নষ্ট হচ্ছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও যদি চারাগাছ বাঁচানো না যায়, তাহলে বাড়তি খরচে চারা কিনে ধান রোপণ করতে হবে। এমনিতেই সব ধরনের কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ফুলবাড়ী উপজেলায় ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৪ হাজার ৯৭০ মেট্রিক টন এবং ধান আকারে ৯৭ হাজার ৪৫৫ মেট্রিক টন। এ জন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮৬ হেক্টর জমি। তবে অতিরিক্ত শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কিছু বীজতলার চারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশার সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চারার মাথায় জমে থাকা শিশির সকালে ঝরিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। এসব ব্যবস্থা নিলে বোরো চারার বড় ধরনের ক্ষতি হবে না। তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি