image

বাহুবলে রাতের আঁধারে এক্সকাভেটর

বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব প্রতিনিধি, বাহুবল (হবিগঞ্জ)

হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলায় রাতের আঁধারে অবাধে চলছে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব। প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও কার্যত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় বেপরোয়াভাবে মাটি লুট করে চলেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী চক্র।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনে লোক দেখানো অভিযানের একটি দিনের ছবি ও ভিডিও দিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সপ্তাহব্যাপী ফেসবুকে সক্রিয়তা দেখালেও বাস্তবে রাত নামলেই ফের শুরু হয় মাটি কাটা।

বিশেষ করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ফসলি জমি, টিলা ও সরকারি খাস জমি লক্ষ্য করে রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত একের পর এক এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। এতে কৃষিজমি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, প্রশাসনের একটি অংশের নীরব সম্মতি কিংবা দায়সারা তদারকির কারণেই এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। একদিন অভিযান চালিয়ে জরিমানা বা মেশিন জব্দের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলেও পরবর্তী দিনগুলোতে আর কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ অনুযায়ী অনুমোদন ছাড়া মাটি কাটা সম্পূর্ণ বেআইনি। কৃষিজমি, টিলা, নদী, খাল-বিল বা সরকারি জমি থেকে মাটি উত্তোলন দণ্ডনীয় অপরাধ।

এই আইনে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, অথবা ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এক্সকাভেটরসহ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি জব্দ ও বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতাও প্রশাসনের রয়েছে।

কিন্তু আইন থাকা সত্ত্বেও বাহুবলে তা কার্যকর হচ্ছে না বলেই অভিযোগ সচেতন মহলের। পরিবেশ ও জনজীবনে ভয়াবহ প্রভাব অবৈধ মাটি কাটার ফলে এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ছে, নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি, হুমকির মুখে পড়ছে বসতবাড়ি ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় ও সচেতন মহলের দাবি, রাতের বেলা নিয়মিত ও টেকসই অভিযান দায়সারা ফেসবুক পোস্ট নয়, বাস্তবভিত্তিক নজরদারি।

জড়িত প্রভাবশালী চক্র ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা ও অবৈধ এক্সকাভেটর স্থায়ীভাবে জব্দ করা হোক। এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও স্বচ্ছ তদন্ত এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে জানতে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন চন্দ্র দে কে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি