image
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) : কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে বীজতলা -সংবাদ

গজারিয়ায় শৈত্য প্রবাহে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় বোরো বীজতলা

বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ)

চলতি শীত মৌসুমে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্তের ও ক্ষতির মুখে পরার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে কোন কোন এলাকায় তৈরি বোরো বীজতলার চারা বিবর্ণ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় কৃষকের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ।

কোল্ড ইনজুরি কারণে বীজতলার চারা নষ্ট হলে চলতি বোরো মৌসুমে চারার সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

গজারিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় ১৫৯ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরী ও ২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলার লক্ষীপুরা গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজ তলা নিয়ে চিন্তায় আছি। শীত ও কুয়াশা বেশি দিন থাকলে কোল্ড ইনজুরীতে চারা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় কৃষিবিভাগের পরামর্শে বীজতলায় সালফার জাতীয় সার স্প্রে করা হয়েছে। এছাড়াও জমিতে পানিসেচ এর ব্যবস্থা ও পলিথিন দিয়ে বীজ তলা ঢেকে রাখায় ক্ষতি অনেকটাই কমার সম্ভবনা রয়েছে। টেংগারচর গ্রামের কৃষক আফতাব আলী জানান, আমি প্রায় ২৪ শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছি, গত কয়েকদিন যাবৎ তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা নিয়ে চিন্তায় আছি।

আলী হোসেন নামে এক কৃষক বলেন, শৈত্য প্রবাহ ও কুয়াশা বিদ্যমান থাকলে বীজতলার চারা মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের ক্ষতির মুখে পরতে হবে।

গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক বলেন, গত কয়েক দিন ধরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা চলমান রয়েছে আর এ থেকে বোরো বীজতলা রক্ষায় জন্য কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বীজতলায় সকালে রশি টেনে শিশির ঝরানো, বিকালে পানি দেয়া এবং সকালে বের করে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রয়োজনে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শও দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলায় এর প্রভাব পরতে পারে। ইতোমধ্যেই কোল্ড ইনজুরি থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য কৃষকদের সালফার জাতীয় সার স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছ।

তাছাড়াও বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়াসহ বীজতলায় বিকালে পানি দিয়ে সকালে বের করে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। গজারিয়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার প্রভাবে বোরো ধানের বীজতলায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে দাবী করেছে কৃষি বিভাগ।

সূর্যের পর্যাপ্ত আলো ও তাপ না পাওয়ায় অনেক বীজতলার চারা হলুদ বর্ণ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আবার কোথাও চারা গজাচ্ছে না, আবার কোথাও চারাগাছ মরে যাচ্ছে। এতে আসন্ন বোরো মৌসুমে চারা সংকট হওয়ার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষকেরা।

রায়পাড়া গ্রামের বোরো চাষি আসলামউদ্দীন বলেন, ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ডণ্ড শীতের কারণে সূর্যের আলো ঠিকমতো পাচ্ছে না বীজতলা। এতে চারাগাছ দুর্বল হয়ে পড়ছে, অনেক ক্ষেত্রে নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। কয়েকজন কৃষক জানান, চারাগুলো একটু বড় হওয়ার পরই কুয়াশা ও শীতের কারণে হলুদ হয়ে যেতে শুরু করেছে। দ্রুত আবহাওয়ার উন্নতি না হলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তখন বাইরে থেকে চারা কিনে জমিতে রোপণ করতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। যদি এই শীত ও কুয়াশায় চারা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে চারা কিনতে গিয়ে আরও বেশি টাকা গুনতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে বীজতলায় ওষুধ স্প্রে করছি।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি