image
নরসিংদী : নিম্ন আয়ের মানুষেরা ফুটপাতে শীতবস্ত্র কিনতে ব্যস্ত -সংবাদ

নরসিংদীতে জেকে বসেছে শীত

বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, নরসিংদী

নরসিংদীতে জেকে বসেছে শীত। হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। শীতের কারণে মানুষ ঘর থেকে বাইরে কম আসায় নিম্ন আয়ের মানুষের আয় কমতে শুরু করেছে।

বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন শিশু, বয়ষ্ক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। হাড়কাঁপানো কনকনে এই শীতের কারণে বাইরে কাজ করতে পারছেনা কর্মজীবী মানুষ। নরসিংদীতে গত ৪/৫ দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে অনেক। সকাল থেকে দিনভর সূর্যের দেখা মিলছে না। সকালে ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে যান বাহনে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুরনো কাপড়ের দোকানে বেশ ভিড় বেড়েছে। শীতের সকালে খড়-কুটো দিয়ে আগুন পোহানো গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য। পৌষের শীতে সবাই গরমের পোশাকে জবুথবু। সূর্য ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে বাড়ির আঙিনায় সকাল সন্ধ্যায় আগুন পোহানোর দৃশ্য দেখা যায়। প্রচণ্ড শীতে আগুন পোহানোর দৃশ্যটি সবার কাছে পরিচিত, সেটা হলো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আগুন পোহানো। এমন চিত্র শুধু গ্রামেই দৃশ্যমান।

শহরের জেলখানা মোড় এলাকার পিঠা বিক্রেতা মালেক বলেন, শীতকাল আসায় আমার পিঠার দোকানে বেচাকেনা বেড়েছে। কিন্তু শীত হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় পিঠা বিক্রি কমতে শুরু করেছে। শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় মানুষ ঘর থেকে বাইরে কম আসছে। এ কারণেই পিঠা বিক্রি কম হচ্ছে। দুইদিন আগেও পিঠা বিক্রি করেছি ১৬’শ টাকার। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করেছে সাড়ে ৬’শ টাকার। শীত বাড়তে থাকলে বিক্রি আরও কমে যাবে।

কেউ দাঁড়িয়ে কেউ বসে, যে, যেভাবে পারছেন আগুনের তাপ পোহাচ্ছেন। শৈত্যপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা সবার। হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় সবাই জবুথবু- শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার একই হাল। শীত থেকে বাঁচার সাধ্য কারও নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। জেলাজুড়ে এক সপ্তাহ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন তারা। শীতের তীব্রতা ও ঘন কুয়াশায় সকালে কৃষকরা আলু, বেগুন, সিম ও বিভিন্ন সবজিখেতের জমিতে পরিচর্যা করতে যেতে পারছেন না। ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা। শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া এলাকা কয়েক জন কৃষক তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আগুন তাপানোর আয়োজনটা সাধারণত করে থাকে বাচ্চারাই। যদিও সে আয়োজন উপভোগ করে সবাই। তবে আগুন পোহাতে গিয়ে গাঁয়ের মানুষের দুর্ভোগও কম না। প্রায়ই সংবাদপত্রে সে খবর উঠে আসে। পুড়ে দগ্ধ, পুড়ে মৃত্যু পর্যন্ত হয় মানুষের। তারপরও শীতের প্রকোপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ আগুন পোহায়। আমরা জানি যতক্ষণ আগুলের পাশে থাকবো ততক্ষণ শীত থেকে বাঁচা যাবে।এ ছাড়া কুয়াশায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের বোরো ধানের বীজতলা। ছোট মুরগির বাচ্চা নিয়ে বিপাকে আছেন পল্ট্রী খামারিরা। আগুন জ্বালিয়ে অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে। গরম কাপরের চাহিদা বেড়েছে বিভিন্ন বিপণী বিতান ও ফুটপাতের দোকানগুলোতে।

নরসিংদী ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা. এ.এন.এম মিজানুর রহমান বলেন, তীব্র শীতে ঠান্ডা জাতীয় রোগ বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। শীতজনিত রোগ প্রচুর হচ্ছে। ব্রঙ্কাইটিজ, নিউমোনিয়া, শ্বাসজনিত রোগ, বাতজনিত রোগ বেড়ে যায়। যাদের আগে থেকেই শ্বাসজনিত রোগ ও বাতজনিত রোগ আছে তাদের এ সমস্যা আরও বেড়ে যায় শীতে। এ কারণে বয়স্ক ও শিশুদের এ সময় প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনোই ভালো। আর বাইরে যদি যেতেই হয় গরম কাপড় দিয়ে শরীর, কান, নাক ও মুখ ঢেকে যাবে।

তিনি আরও বলেন, বয়স্ক মানুষের ঘরের ভেতরটাও রুম হিটার দিয়ে গরম রাখতে পারলে ভালো। যেকোনো বাচ্চার জ্বরের সঙ্গে যদি সামান্য শ্বাসকষ্ট ও কাশি হয় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কারণ নিউমোনিয়া বেড়ে গেছে। এ ধরনের রোগীদের আইসিইউ লাগে। অক্সিজেন লাগে।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

সম্প্রতি