image

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে কাশেম মিয়ার পরিবার

বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের সিংজুরী গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে কাশেম মিয়া (৩২) শুভযাত্রা পরিবহন চালিয়ে মা, স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে সুখে সাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতেন। কিন্তু একটি সড়ক দুঃর্ঘটনায় তার দুটি পা পুরো থেতলে যায়। পর্যায়ত্রুমে চিকিৎসকরা তার ২টি পা কেটে ফেলেন। চিকিৎসায় প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। চিকিৎসার জন্য আরো প্রায় ৫লাখ টাকা প্রয়োজন। সংসারের সবকিছু হারিয়ে বর্তমানে চিকিৎসার টাকা জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। ফলে পুরো পরিবারে নেমে এসেছে ঘোড় অন্ধকার। পরিবারের লোকজন নিয়ে বর্তমানে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, কাশেম মিয়া ঢাকা- থেকে মানিকগঞ্জ থেকে গুলিস্থান শুভযাত্রা পরিবহনে দীর্ঘদিন যাবৎ গাড়ি চালিয়ে জীবন ধারন করতেন। গত ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাথুলী নামক স্থানে আন্তঃ জেলা ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংর্ঘষে তার দুটি পা থেতলে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে মানিকগঞ্জ সদর পরে ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ৬ মাস চিকিৎসা করার পরে কোন উন্নত্তি না হওয়ায় তার প্রথমে বাম পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় চিকিৎসকরা। ৬-৭টি অপারেশন করার পরেও ডান পাটি ভাল হয়নি। ডান পার বিভিন্ন স্থানে পচন ধরে যায়। পরে তার ডান পা কেটে ফেলার সিন্ধান্ত নেয় চিকিৎসকরা । এক বছরের ব্যবধানে তার দুটি পা কেটে ফেলা হয়। বর্তমানে পা দুটি হারিয়ে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পরেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে বাড়িতে থাকেন কাশেম মিয়া। বর্তমানে একা চলাফেরা করার সার্মথ্য নেই তার। ভাংগাচুরা একটি হুইল চেয়ারে তার একমাত্র অবলম্বন। প্রকৃতির ডাকে বাইরে যাবার সার্মথ্য নেই। তার স্ত্রী সার্বক্ষনিক দেখাশুনা করেন। চিকিৎসার জন্য নিজের বাড়ি, ঘড়, সঞ্চিত টাকা এবং আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে এ পর্যন্ত পায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এখনো শাররীক অবস্থার আশানুরুপ উন্নত্তি না হওয়ায় পুনরায় চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হওয়ার জন্য আরো প্রায় ৪/৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে কাশেম মিয়া চিকিৎসা ব্যয় ভার বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে। দুটি পায়ের অসহনীয় যন্ত্রনায় সার্বক্ষনিক কাতরাচ্ছেন তিনি। দিন রাত্রি বিছানায় শুয়ে ছটপট করেন। স্বামীর করুন দশায় তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন। তার স্ত্রী বলেন, দিন যত যাচ্ছে ততই আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কোনোভাবেই আর টাকা জোগার করতে পারছিনা। চোখের সামনে এমন করুন দশা, অসহায় হয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারছিনা। এদিকে চিকিৎসার খরচ অপর দিকে সংসারের ছেলে মেয়েদের ভরন পোষনে তার জীবনযাত্রার মান থমকে দাড়িয়েছে। ২টি পা হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ঘিওর বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে দোকানে দোকানে সাহায়্যের হাত বাড়ায় কাশেম। তবে যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসার চলেনা। এর পরে ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং তার ওষুধপত্র চিকিৎসা চলবে কী ভাবে। অপুষ্টি,ও দুর্বলতায় ছেলে মেয়ে টিকমত কথা বলতে পারেনা। যে যা পারে তাদের সহযোগিতা করে । গত এক বছর ধরে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে বেছেঁ থাকার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে বাড়ি, ঘড় না থাকায় এক বছর যাবৎ অন্যের বাড়িতে ছাপরা ঘড় তুলে মা, ছেলে, মেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে বহু কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছে কাশেম।

এ অবস্থায় সে নিজের জীবন রক্ষার্থে সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান ব্যক্তিদের প্রতি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। মানুষের আর্থিক সাহায্যই হয়তো কাশেমের জীবন রক্ষা করতে পারবে। এমন আবেদন করেছেন তিনি। তাকে সহযোগিতা করা জন্য তার ব্যবহৃত ০১৭৯৮-৩৩০৬৫৩ নাম্বার মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেন।

সম্প্রতি