ময়মনসিংহের দীপু দাস হত্যা: আরও একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে (২৭) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জড়িত আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, হত্যার পর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া ওই তরুণকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে দীপু হত্যা মামলায় ১৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন চেরাগআলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত তরুণের নাম নীরব ইসলাম অনিক (২০)। তিনি ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা গ্রামের কলিমুল্লাহর ছেলে এবং পাইওনিয়ার নীটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানায় নিটিং অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বুধবার, (৩১ ডিসেম্বর ২০২৫) তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যায়, সাদা শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি দীপুকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে টেনে তুলছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তদন্তকারী দল নীরবকে শনাক্ত করে। দীপু হত্যার ঘটনার পর থেকে নীরব নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাকে ধরতে নেত্রকোনা, বনানী ও গাজীপুরে অভিযানের পর টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আজ বিকেলে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামি নীরব ইসলাম অনিককে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গ্রেপ্তারকৃত ১৮ জনের মধ্যে ১২ জনকে তিন দিন করে এবং বাকি ৬ জনকে দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। ১২ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৫ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ভালুকার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ডুবালিয়াপাড়া এলাকায় গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পাইওনিয়ার নীটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার কর্মী দীপু চন্দ্র দাসকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে কারখানা থেকে এক কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক বিভাজকের একটি গাছে বিবস্ত্র করে ঝুলিয়ে মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। নিহত দীপু চন্দ্র দাস তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। এ ঘটনায় তার ভাই অপু চন্দ্র দাস গত শুক্রবার অজ্ঞাত পরিচয় ১৪০-১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
