alt

করোনা : আক্রান্তের ৫৯.৭৫ শতাংশ ঢাকায়

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২

ঢাকা মেডিকেলে ভর্তির জন্য আসা করোনা রোগী -সংবাদ

করোনার ভয়ঙ্কর ডেল্টার তান্ডব সময়ে শনাক্তের হারের রেকর্ডকে পেছনে ফেলে অতি সংক্রমণশীল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কবলে পড়ে দেশে শনাক্তের হারের সর্বোচ্চ রেকর্ড অবস্থানে পৌঁছেছে। একদিনে সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা করোনা শনাক্ত হারে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। দেশে এর আগে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দিন ছিল ২০২০ সালের ১২ জুলাই। ওইদিন শনাক্তের হার ছিল ৩৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, যা এতদিনে সর্বোচ্চ ছিল।

এদিকে, দেশে এ নিয়ে টানা চারদিন ১৫ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৪৪০ জনের। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময়, গত বছরের ২৮ জুলাই ১৬ হাজার ২৩০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মহামারীর মধ্যে সেটাই সর্বোচ্চ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭১ জনে।

এর পাশাপাশি আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। একদিনে করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। এক দিনে মৃত্যুর এই সংখ্যা সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। একদিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল সর্বশেষ ৯ অক্টোবর, সেদিন ২১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৩০৮ জনে।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) করোনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়, শনাক্ত হয় ১৫ হাজার ৮০৭ জন, শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তার আগের দিন বুধবার ১৫ হাজার ৫২৭ জন ও মঙ্গলবার ১৬ হাজার ৩৩ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৩২৬ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৯ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৭২ হাজার ১০৩ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৫৮ হাজার। গত ২০ জানুয়ারি ছিল ৮০ হাজার ৯২৬ জন। অর্থাৎ, মাত্র এক সপ্তাহে সক্রিয় রোগী বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

ডেল্টার ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল গত বছরের শেষে। ডিসেম্বরে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ঘোরাফেরা করছিল ২০০ থেকে ৩০০’র ঘরে। শনাক্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের নিচে।

কিন্তু বিশ্বে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার শুরুর পর জানুয়ারির শুরু থেকে বাংলাদেশেও আবার দ্রুত উঠতে থাকে সংক্রমণের গ্রাফ। জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, এখন তা ১৫ হাজারের বেশি থাকছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও থাকছে ৩০ শতাংশের উপরে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।

এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৯ হাজার ২২৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৫৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগেরদিনও এ বিভাগে ৯ হাজার ৭৬৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, যা ছিল দিনের মোট আক্রান্তের ৬১ শতাংশের বেশি।

গত কয়েক মাস ধরেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর একটি বড় অংশ থাকে ঢাকার। তবে গত সপ্তাখানেক ধরে দেশের অন্য জেলাতেও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

একদিনে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৮১১৩ জন, ফরিদপুরে ১২০ জন, গাজীপুরে ১৭৭ জন, গোপালগঞ্জে ১১৫ জন, কিশোরগঞ্জে ১০৮ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৭৬ জন এবং নরসিংদীতে ১৫২ জন এবং টাঙ্গাইলে ১০২ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ১১৬১ জন, কক্সবাজারে ৩৪২ জন, নোয়াখালীতে ১০০, চাঁদপুরে ১২২ জন এবং কুমিল্লায় ২৪৩ জন, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ৩৭৮ জন, নওগাঁয় ১২০ জন, পাবনায় ২০৯ জন, বগুড়ায় ১৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় ২৬০ জন, কুষ্টিয়ায় ২১৩ জন, সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় ৪৩৫ জন, মৌলভীবাজারে ১১১ জন, বরিশাল জেলায় ১৯৪ জন, রংপুর জেলায় ১১৯ জন, দিনাজপুর জেলায় ১১০ জন এবং ময়মনসিংহে ২৮৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে এক দিনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৮৬৫টি ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৫৫টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬৫৩টি।

এসব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ২৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬ হাজার ২৬৮টি। এনিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো এক কোটি ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৪ লাখ ১১ হাজার ৮১২টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৩৩টি।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ, ১২ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৭ জন সরকারি ও তিনজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃতদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর, দুইজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর এবং একজনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

২৪ ঘণ্টায় যারা করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচজন ঢাকা বিভাগের। এরপর দুইজন করে মারা গেছেন রাজশাহী ও সিলেটে। এ ছাড়া একজন করে মারা গেছেন বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে। তবে খুলনা ও রংপুরে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কেউ মারা যাননি।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। গেল বছরের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

ছবি

সেন্টমার্টিনে জেলের জালে ধরা পড়লো ৩২ কেজি ওজনের পোপা মাছ

ছবি

বঙ্গবন্ধু, হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৮৮০ স্থাপনার নাম পরিবর্তন, সংকলন প্রকাশ

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনা: একই পরিবারের ৪ জনসহ দুই জেলায় নিহত ৫

গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ভাসমান অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

মব ভায়োলেন্সে মুচি সম্প্রদায়ের দুইজনকে হত্যার প্রধান আসামি টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার

ছবি

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রেলপথ অবরোধ

ছবি

রুমায় জোত পারমিটের আড়ালে কাঠ পাচার

ছবি

ভূমিকম্প: উৎপত্তিস্থল এলাকার ফাটল থেকে নমুনা সংগ্রহ, কমিটি গঠন

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ফাটল ধরা ভবনে আবার কম্পন, আতঙ্কিত শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ছবি

সিরাজগঞ্জের যমুনার সুস্বাদু মাছের চাহিদা দেশব্যাপি

ছবি

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

ছবি

কেশবপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ বিতরণ

ছবি

পানি নিষ্কাশন না করে আপারভদ্রার ক্রসবাঁধ বন্ধের দাবি

ছবি

দেড় মাসে নাগেশ্বরীতে নদী ভেঙনে তিন শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন

ছবি

ঝালকাঠির পলাতক আসামি টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার

ছবি

গোপালগঞ্জে আমন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে ব্রিধান ১০৩

ছবি

কটিয়াদীতে লেবু চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

ছবি

নবীগঞ্জে সুপারি পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ছবি

ডিভাইডার নেই, পার্শ্ব রাস্তা বন্ধ রায়গঞ্জে ৭ মাসে ১০ জনের মৃত্যু

ছবি

ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থলের নিকটে পলাশে যত অঘটন

ছবি

ভূমিকম্পে সিদ্ধিরগঞ্জের শতাধিক ভবনে ফাটল, হেলে পড়েছে বহু ভবন

ছবি

দুর্গাপুরে ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার গ্রেপ্তার

ছবি

রূপাইছড়া রাবার বাগানে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি

যশোরে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

মোহনগঞ্জে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

ডুমুরিয়ায় বিদ্যালয় ভবন পরিত্যাক্ত, পাঠদান চলছে দোচালা ঘরে

ছবি

বরগুনায় ৪ ভুয়া চিকিৎসকের জেল-জরিমানা

ছবি

গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের দুর্ভোগ নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

এবারও ভোটার হয়নি সিলেট বিভাগের হিজড়া জনগোষ্ঠী

ছবি

পবিপ্রবিতে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূ-কম্পন পরিমাপ যন্ত্রটি অচল

ছবি

ফটিকছড়িতে রবি মৌসুমে প্রণোদনা পেল ৭৩০ কৃষক

ছবি

গৌরীপুরে নারী সমাবেশে হামলার বিচার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

ছবি

লৌহজংয়ে জলাবদ্ধতায় আলু আবাদে অনিশ্চয়তায় কৃষক

ছবি

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

ছবি

মোংলায় সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সর্বসাধারণের জন্য নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ উন্মুক্ত .

ছবি

সিরাজগঞ্জে ট্রান্সফরমার চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক

tab

করোনা : আক্রান্তের ৫৯.৭৫ শতাংশ ঢাকায়

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ঢাকা মেডিকেলে ভর্তির জন্য আসা করোনা রোগী -সংবাদ

শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২

করোনার ভয়ঙ্কর ডেল্টার তান্ডব সময়ে শনাক্তের হারের রেকর্ডকে পেছনে ফেলে অতি সংক্রমণশীল ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কবলে পড়ে দেশে শনাক্তের হারের সর্বোচ্চ রেকর্ড অবস্থানে পৌঁছেছে। একদিনে সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা করোনা শনাক্ত হারে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। দেশে এর আগে সর্বোচ্চ সংক্রমণের দিন ছিল ২০২০ সালের ১২ জুলাই। ওইদিন শনাক্তের হার ছিল ৩৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, যা এতদিনে সর্বোচ্চ ছিল।

এদিকে, দেশে এ নিয়ে টানা চারদিন ১৫ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৪৪০ জনের। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময়, গত বছরের ২৮ জুলাই ১৬ হাজার ২৩০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মহামারীর মধ্যে সেটাই সর্বোচ্চ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭১ জনে।

এর পাশাপাশি আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। একদিনে করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ২০ জন। এক দিনে মৃত্যুর এই সংখ্যা সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। একদিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল সর্বশেষ ৯ অক্টোবর, সেদিন ২১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৩০৮ জনে।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) করোনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়, শনাক্ত হয় ১৫ হাজার ৮০৭ জন, শনাক্তের হার ছিল ৩১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তার আগের দিন বুধবার ১৫ হাজার ৫২৭ জন ও মঙ্গলবার ১৬ হাজার ৩৩ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানিয়েছিল অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৩২৬ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৯ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৭২ হাজার ১০৩ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৫৮ হাজার। গত ২০ জানুয়ারি ছিল ৮০ হাজার ৯২৬ জন। অর্থাৎ, মাত্র এক সপ্তাহে সক্রিয় রোগী বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।

ডেল্টার ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল গত বছরের শেষে। ডিসেম্বরে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ঘোরাফেরা করছিল ২০০ থেকে ৩০০’র ঘরে। শনাক্তের হার নেমে এসেছিল ২ শতাংশের নিচে।

কিন্তু বিশ্বে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার শুরুর পর জানুয়ারির শুরু থেকে বাংলাদেশেও আবার দ্রুত উঠতে থাকে সংক্রমণের গ্রাফ। জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, এখন তা ১৫ হাজারের বেশি থাকছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও থাকছে ৩০ শতাংশের উপরে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।

এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৯ হাজার ২২৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৫৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগেরদিনও এ বিভাগে ৯ হাজার ৭৬৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, যা ছিল দিনের মোট আক্রান্তের ৬১ শতাংশের বেশি।

গত কয়েক মাস ধরেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর একটি বড় অংশ থাকে ঢাকার। তবে গত সপ্তাখানেক ধরে দেশের অন্য জেলাতেও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

একদিনে ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৮১১৩ জন, ফরিদপুরে ১২০ জন, গাজীপুরে ১৭৭ জন, গোপালগঞ্জে ১১৫ জন, কিশোরগঞ্জে ১০৮ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৭৬ জন এবং নরসিংদীতে ১৫২ জন এবং টাঙ্গাইলে ১০২ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ১১৬১ জন, কক্সবাজারে ৩৪২ জন, নোয়াখালীতে ১০০, চাঁদপুরে ১২২ জন এবং কুমিল্লায় ২৪৩ জন, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ৩৭৮ জন, নওগাঁয় ১২০ জন, পাবনায় ২০৯ জন, বগুড়ায় ১৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এছাড়া খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় ২৬০ জন, কুষ্টিয়ায় ২১৩ জন, সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় ৪৩৫ জন, মৌলভীবাজারে ১১১ জন, বরিশাল জেলায় ১৯৪ জন, রংপুর জেলায় ১১৯ জন, দিনাজপুর জেলায় ১১০ জন এবং ময়মনসিংহে ২৮৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে এক দিনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তির তথ্য বলছে, ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৮৬৫টি ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৫৫টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫৭টি ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৬৫৩টি।

এসব ল্যাবে পরীক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন বুথ থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ২৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৬ হাজার ২৬৮টি। এনিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো এক কোটি ২৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫টিতে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৮৪ লাখ ১১ হাজার ৮১২টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৩৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৩৩টি।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ, ১২ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৭ জন সরকারি ও তিনজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃতদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর, দুইজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছর এবং একজনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

২৪ ঘণ্টায় যারা করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচজন ঢাকা বিভাগের। এরপর দুইজন করে মারা গেছেন রাজশাহী ও সিলেটে। এ ছাড়া একজন করে মারা গেছেন বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগে। তবে খুলনা ও রংপুরে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কেউ মারা যাননি।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। গেল বছরের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

back to top