কুষ্টিয়ায় ঈগল পরিবহনের যাত্রীবাহী নৈশকোচে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও একজন যাত্রীর ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশের মতো কুষ্টিয়ায় বেশ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে নৈশকোচ যাত্রীদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা সদর থেকে দিবা ও নৈশকোচ মিলিয়ে অনেকগুলো এসি ও নন এসি বাস চলাচল করে। কিন্তু কোনদিন এমন ঘটনা ঘটেনি বলে বাসযাত্রী, বাস মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সূত্রে জানা গেছে।
কুষ্টিয়া জেলার প্রাগপুর থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল একপ্রেসের বাসটি কুষ্টিয়া শহরে প্রবেশ না করে ভেড়ামারা হয়ে চলাচল করে। ঈগল পরিবহনের বাসটির মালিক পাবনা জেলার। বাস ডাকাতি ও প্রতিবাদকারী যাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আকতার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু এমন ঘটনা এই প্রথম। তনি বলেন, কুষ্টিয়া থেকে যে নৈশকোচগুলো ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যায়, সে বাসগুলো ছেড়ে যাওয়ার আগে জেলা পুলিশের উদ্যোগে সব যাত্রীদের চেহারা ভিডিও করে রাখা হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট উপজেলা সদরের কাউন্টার ছাড়া রাস্তার কোথাও থেকে নৈশকাচে যাত্রী তোলার বিষয়ে আমরা সতর্কতা অবলম্বন করি। কোন যাত্রীকে রাস্তা থেকে তোলার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, মাত্র দুই তিন যাত্রী নিয়ে প্রাগপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসটি পথের মাঝে অনেকগুলো যাত্রী তুলেছিল। এতে যাত্রীদের সঠিক পরিচয় জানা বেশ মুশকিল হয়। তবে এখানে বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের গাফিলতি আছে কি না তা যাচাই করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
কুষ্টিয়া থেকে নিয়মিত ঢাকা যাতায়াত করেন এমন কয়েকজন নৈশকোচ যাত্রীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় ২৫ জন যাত্রীর সামনে একজন গার্মেন্টকর্মীকে ডাকাতরা ডাকাতি ও ধর্ষণ করল এটি বর্বরতার চরম নিদর্শন। আমরা অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে নৈশকোচে যাতায়াত করে থাকি এমন ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত।
রাইয়ান রহমান নামে এক নৈশকোচ যাত্রী বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা চলাচলকারী কোচগুলো এখন কম সময় লাগছে। ফেরিঘাটে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। তাই আমরা অনেক স্বস্তিতেই ঢাকা চিটাগাং যাতায়াত করছি। কিন্তু এমন ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। সাবিহা রাশনা নামে এক যাত্রী বলেন, এমন ঘটনায় এখন নৈশকোচে কোন মহিলা যাত্রী উঠতেই অনিচ্ছা প্রকাশ করবেন। তাই বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন, কুষ্টিয়া ঢাকা দুটি রুট দিয়ে বাস চলাচল করে। একটি যমুনা সেতু হয়ে আরেকটি রাজবাড়ী গোয়ালন্দ ঘাট হয়ে। দুটি সড়কই বেশ ব্যস্ত। দিনে রাতে মিলিয়ে শত শত বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এমন ব্যস্ত সড়কে তিন ঘণ্টা যাবত ডাকাতদের তান্তবে বাসের চালক বা হেলপাররা জড়িত থাকতে পারে। তিনি বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২
কুষ্টিয়ায় ঈগল পরিবহনের যাত্রীবাহী নৈশকোচে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও একজন যাত্রীর ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশের মতো কুষ্টিয়ায় বেশ আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে নৈশকোচ যাত্রীদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলা এবং জেলা সদর থেকে দিবা ও নৈশকোচ মিলিয়ে অনেকগুলো এসি ও নন এসি বাস চলাচল করে। কিন্তু কোনদিন এমন ঘটনা ঘটেনি বলে বাসযাত্রী, বাস মালিক সমিতির নেতা ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সূত্রে জানা গেছে।
কুষ্টিয়া জেলার প্রাগপুর থেকে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল একপ্রেসের বাসটি কুষ্টিয়া শহরে প্রবেশ না করে ভেড়ামারা হয়ে চলাচল করে। ঈগল পরিবহনের বাসটির মালিক পাবনা জেলার। বাস ডাকাতি ও প্রতিবাদকারী যাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আকতার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু এমন ঘটনা এই প্রথম। তনি বলেন, কুষ্টিয়া থেকে যে নৈশকোচগুলো ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যায়, সে বাসগুলো ছেড়ে যাওয়ার আগে জেলা পুলিশের উদ্যোগে সব যাত্রীদের চেহারা ভিডিও করে রাখা হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট উপজেলা সদরের কাউন্টার ছাড়া রাস্তার কোথাও থেকে নৈশকাচে যাত্রী তোলার বিষয়ে আমরা সতর্কতা অবলম্বন করি। কোন যাত্রীকে রাস্তা থেকে তোলার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, মাত্র দুই তিন যাত্রী নিয়ে প্রাগপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসটি পথের মাঝে অনেকগুলো যাত্রী তুলেছিল। এতে যাত্রীদের সঠিক পরিচয় জানা বেশ মুশকিল হয়। তবে এখানে বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের গাফিলতি আছে কি না তা যাচাই করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
কুষ্টিয়া থেকে নিয়মিত ঢাকা যাতায়াত করেন এমন কয়েকজন নৈশকোচ যাত্রীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় ২৫ জন যাত্রীর সামনে একজন গার্মেন্টকর্মীকে ডাকাতরা ডাকাতি ও ধর্ষণ করল এটি বর্বরতার চরম নিদর্শন। আমরা অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে নৈশকোচে যাতায়াত করে থাকি এমন ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত।
রাইয়ান রহমান নামে এক নৈশকোচ যাত্রী বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা চলাচলকারী কোচগুলো এখন কম সময় লাগছে। ফেরিঘাটে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। তাই আমরা অনেক স্বস্তিতেই ঢাকা চিটাগাং যাতায়াত করছি। কিন্তু এমন ঘটনা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। সাবিহা রাশনা নামে এক যাত্রী বলেন, এমন ঘটনায় এখন নৈশকোচে কোন মহিলা যাত্রী উঠতেই অনিচ্ছা প্রকাশ করবেন। তাই বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির কুষ্টিয়া জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন, কুষ্টিয়া ঢাকা দুটি রুট দিয়ে বাস চলাচল করে। একটি যমুনা সেতু হয়ে আরেকটি রাজবাড়ী গোয়ালন্দ ঘাট হয়ে। দুটি সড়কই বেশ ব্যস্ত। দিনে রাতে মিলিয়ে শত শত বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এমন ব্যস্ত সড়কে তিন ঘণ্টা যাবত ডাকাতদের তান্তবে বাসের চালক বা হেলপাররা জড়িত থাকতে পারে। তিনি বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান।