alt

সারাদেশ

ভর্তুকি কমাতে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ চুক্তির আহ্বান সিপিডির

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

শুধু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের জন্য দেশে বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি। গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলছে, এর বড় কারণ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি-পরিকল্পনা আর চুক্তি’। এতেই বেড়েছে ব্যয়, যুদ্ধের কারণে যা হয়ে গেছে ‘কয়েকগুণ’। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ‘নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২২ (খসড়া) : এটি কি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হবে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সিডিপির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিপিডি আরও বলছে, বিদ্যুতের বড় ঘাটতি মেটাতে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের প্রয়োজন ছিল, তবে বর্তমানে আইনটি ‘অদক্ষতার’ জায়গা তৈরি করছে। সংস্থাটির মতে, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের ফলে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ‘বাড়তি ব্যয়’ করতে হচ্ছে। কোন কোন ‘পক্ষ’ পাচ্ছে বাড়তি সুবিধাও। তাই অবিলম্বে আইনটি বাতিল করার দাবি জানিয়ে সিপিডি আরও বলছে, ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তিতে গেলে বাড়তি ভর্তুকির চাপ থেকে সরকার সরে আসতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২০০৯ সালে জরুরি বিদ্যুৎ আইনের প্রয়োজন ছিল। ওই সময় বড় রকমের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, সেটা মেটানোর জন্য চুক্তির দরকার ছিল। এরপর চারবার রিনিউ হয়েছে ওই আইন। আমরা মনে করি, এখন যে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এরকম চুক্তির আর প্রয়োজন নেই।’

দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন-২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন থেকে সরকারের সরে আসা দরকার। এই আইন বিভিন্নভাবে সমস্যা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি নিয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, এর আগেও যেগুলো হয়েছে- সেগুলো এখন সরকারের জন্য বড় রকমের মাথাব্যথার কারণ। এর মূল কারণ এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন। কয়েকবার এর সংশোধন করে এর মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে এই আইন অবলোপন এবং তা থেকে সরে আসা দরকার। যা হলে প্রতিযোগিতামূলক কাঠামোতে আমরা চলে যেতে পারবো।’

সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি সমন্বয় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কাজ করছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির সমন্বয় করা হচ্ছে ভোক্তার ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে। অথচ এর পুরোটা হয়েছে ফল্টি (ভুল) যেসব পলিসি করা হয়েছে এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইনের অধীনে (তার কারণে)। এর ফলে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সেটির দায় ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিয়ে সাবসিডি অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনটি যদি অবলোপন করা হয় এবং সেই অনুযায়ী সব চুক্তির সংশোধনী আনা হয়। নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তির দিকে যদি যাওয়া হয়, তাহলে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যে বাড়তি ভর্তুকি, এখান থেকে ন্যাচারালি সরে আসার সুযোগ রয়েছে। ফসিল ফুয়েল থেকে সরে এসে ধীরে ধীরে রিনিউয়েবল এনার্জির (নবায়নযোগ্য শক্তি) দিকে গেলে বড় রকমের ভর্তুকির চাপ থেকে সরে আসার সুযোগ রয়েছে।’

নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২২ এর খুঁটিনাটি তুলে ধরে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এতে জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যেসব চুক্তি হচ্ছে, সেগুলো কতটা স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে তা আলোচনা হয়েছে। সরকারের রাজনৈতিক লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি আহরণ, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবায়ন পর্যায়ে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন নীতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের কথা বলা হয়েছে। শুধু সোলার বলেই ছেড়ে দেয়া হয়নি। রুফটফ সোলার, নেট মিটারিং, মিনি গ্রিড, ন্যানো গ্রিড, সোলার ইরিগেশন, চার্জিং স্টেশন, স্ট্রিট লাইটে রিনিউয়েবল এনার্জি, ফ্লোটিং সোলার সিস্টেম- এরকমভাবে ডিটেইল বলা আছে। একইভাবে উইন্ড এনার্জি, বায়োমাস এনার্জি, বায়ো ফুয়েলের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির কিছু নতুন উৎসের কথাও এখানে বলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আগামীতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এতে কিছু টার্গেটের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির ক্ষেত্রে কিছু টার্গেট দেয়া হয়েছে।’

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর কথা এতে উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্রেডাকে এখানে নোডাল এজেন্সি বলা হয়েছে। আমরাও তাই মনে করি। কিন্তু স্রেডাকে সব ধরনের ক্যাপাসিটি দিতে হবে। বড় পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রস্তাবনা দেখভাল করার ও অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা স্রেডাকে দেয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কার দরকার আছে। তবে এই সংস্কার আবার খসড়া প্রস্তাবে অনুপস্থিত।’

তিনি বলেন, ‘নতুন নীতিতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের আবার নীতি সংস্কার হয়েছে। মন্ত্রণালয় তার হতে কর্তৃত্ব নিয়ে ফেলছে। এর ফলে এখানে জ্বালানি নীতিতে যে গাইডলাইন দেয়া আছে রেগুলেটরি কমিশনের দাম নির্ধারণে ক্ষেত্রে, আর সরকার এখন যেভাবে দাম নির্ধারণ করেছে তাতে এটা এখন উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করছে। আমরা মনে করি, ট্যারিফ সেটিংয়ে রেগুলেটরি কমিশনেই ফিরে যাওয়া উচিত। নির্গমন সংশ্লিষ্ট টার্গেটগুলোকেও এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আইনটি না থাকলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে না। আমরা শুনে এসেছি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে কম। অথচ নতুন চুক্তির অধীনে আমরা যে ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ আনা শুরু করলাম, সেটার মূল্য তো ১৫ টাকা। এটা তো বোধগম্য না কী করে এরকম মূল্য, এরকম জায়গায় আমরা চুক্তি করতে পারি।’

জ্বালানি চুক্তি খোলামেলা হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন চুক্তির ডকুমেন্টস আমরা পাই না। কী রেটে চুক্তিগুলো করা হচ্ছে- জনগণের সেটা জানার অধিকার রয়েছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সমৃদ্ধ হতে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফাঁকা চর, বাড়ির ছাদ কিংবা রেলওয়ের খোলা জমিতে সোলার বসিয়ে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মালবাহী ট্রেন উদ্ধারের পর এবার লাইনচ্যুত কক্সবাজার এক্সপ্রেস

ছবি

তেলমাছড়া অভয়ারণ্যে দুর্লভ প্রজাতির ভালুকের বিচরণ, সতর্কতা জারি

বারহাট্টায় ধানের দাম কম, হতাশ কৃষকরা

হরিণ শিকারের ফাঁদ ও কাঁকড়া ধরার চারু উদ্ধার

ধানের খড় নিয়ে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশত

পাট খেত দিয়ে ধান নেয়ায় বিরোধ, আহত ১

খামারের সহস্রাধিক মুরগির বাচ্চা মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা

স্পিরিট পান করে দুজনের মৃত্যু

ছাতকে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

বিষপ্রয়োগে কৃষকের ১২০০ হাঁস মেরে ফেলার অভিযোগ

পাঁচ জেলায় সড়কে রেলে শিশুসহ ৮ জনের মৃত্যু

ঝগড়ার পর স্ত্রীসহ নিজের গায়ে আগুন দিলেন স্বামী

অগ্নিকাণ্ডে কৃষকের গবাদিপশুসহ বসতবাড়ি ছাই

ছবি

ডলু খালের পাড় ভেঙে বিলীন সড়ক, ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

ছবি

ব্রিজের নিচ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৮০ প্যাকেট মাংস উদ্ধার

নবাবগঞ্জে ৩ শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ

দুজনকে কৃত্রিম পা দিয়ে সহায়তা করল নাগরিক উন্নয়ন ফোরাম

ছবি

মাদক ব্যবসায়ীর বিচার দাবিতে মানববন্ধন

উখিয়া-টেকনাফে মাদকদ্রব্যসহ অস্ত্র উদ্ধার

ছবি

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

ময়মনসিংহে কৃষি উন্নয়নে সেমিনার

সিরাজগঞ্জে কষ্টি পাথরের মূর্তিসহ আটক ৩

পটুয়াখালীতে ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু

শেরপুরে মোটরসাইকেল চাপায় শিশুর মৃত্যু

ছবি

ভাঙা সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন, দুর্ভোগে জনসাধারণ

বেরোবিতে বাস চুরি ছয় মাসেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

ছবি

ইউএনওর প্রত্যাহার চেয়ে লংমার্চ

ছবি

সড়কের জমিতে অবৈধ স্টেডিয়াম ঘণ্টাভিত্তিক মাঠ ভাড়া বাণিজ্য

গঙ্গাচড়ায় বোরোর নমুনা শস্য কর্তন

চাঁদপুরের অধিকাংশ প্রাইভেট ক্লিনিকের লাইসেন্স অনুযায়ী নেই বেড ও নার্স

ছবি

সংবাদ প্রকাশের পর কালিহাতীতে পুনরায় রাস্তা সংস্কার শুরু

অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীকে জরিমানা ৫০ হাজার টাকা

পূর্বধলায় নিখোঁজ যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের যন্ত্রপাতি জব্দ

ছবি

জনতার বাধা ডিঙিয়ে নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র আইভী গ্রেপ্তার

ছবি

মিষ্টি কুমড়ার মিষ্টি হাসি চাষির মুখে

tab

সারাদেশ

ভর্তুকি কমাতে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে’ চুক্তির আহ্বান সিপিডির

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

শুধু ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের জন্য দেশে বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়েনি। গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলছে, এর বড় কারণ বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি-পরিকল্পনা আর চুক্তি’। এতেই বেড়েছে ব্যয়, যুদ্ধের কারণে যা হয়ে গেছে ‘কয়েকগুণ’। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ‘নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২২ (খসড়া) : এটি কি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম হবে?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সিডিপির পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিপিডি আরও বলছে, বিদ্যুতের বড় ঘাটতি মেটাতে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের প্রয়োজন ছিল, তবে বর্তমানে আইনটি ‘অদক্ষতার’ জায়গা তৈরি করছে। সংস্থাটির মতে, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনের ফলে সরকারকে বিপুল পরিমাণ ‘বাড়তি ব্যয়’ করতে হচ্ছে। কোন কোন ‘পক্ষ’ পাচ্ছে বাড়তি সুবিধাও। তাই অবিলম্বে আইনটি বাতিল করার দাবি জানিয়ে সিপিডি আরও বলছে, ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তিতে গেলে বাড়তি ভর্তুকির চাপ থেকে সরকার সরে আসতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২০০৯ সালে জরুরি বিদ্যুৎ আইনের প্রয়োজন ছিল। ওই সময় বড় রকমের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, সেটা মেটানোর জন্য চুক্তির দরকার ছিল। এরপর চারবার রিনিউ হয়েছে ওই আইন। আমরা মনে করি, এখন যে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এরকম চুক্তির আর প্রয়োজন নেই।’

দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন-২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন থেকে সরকারের সরে আসা দরকার। এই আইন বিভিন্নভাবে সমস্যা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি নিয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, এর আগেও যেগুলো হয়েছে- সেগুলো এখন সরকারের জন্য বড় রকমের মাথাব্যথার কারণ। এর মূল কারণ এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইন। কয়েকবার এর সংশোধন করে এর মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়েছে। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে এই আইন অবলোপন এবং তা থেকে সরে আসা দরকার। যা হলে প্রতিযোগিতামূলক কাঠামোতে আমরা চলে যেতে পারবো।’

সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি সমন্বয় নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কাজ করছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির সমন্বয় করা হচ্ছে ভোক্তার ওপর দায় চাপিয়ে দিয়ে। অথচ এর পুরোটা হয়েছে ফল্টি (ভুল) যেসব পলিসি করা হয়েছে এই দ্রুত জ্বালানি সরবরাহ আইনের অধীনে (তার কারণে)। এর ফলে বিপুল পরিমাণে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সেটির দায় ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দিয়ে সাবসিডি অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আইনটি যদি অবলোপন করা হয় এবং সেই অনুযায়ী সব চুক্তির সংশোধনী আনা হয়। নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে- এমন চুক্তির দিকে যদি যাওয়া হয়, তাহলে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যে বাড়তি ভর্তুকি, এখান থেকে ন্যাচারালি সরে আসার সুযোগ রয়েছে। ফসিল ফুয়েল থেকে সরে এসে ধীরে ধীরে রিনিউয়েবল এনার্জির (নবায়নযোগ্য শক্তি) দিকে গেলে বড় রকমের ভর্তুকির চাপ থেকে সরে আসার সুযোগ রয়েছে।’

নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি-২০২২ এর খুঁটিনাটি তুলে ধরে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘এতে জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যেসব চুক্তি হচ্ছে, সেগুলো কতটা স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে করা হচ্ছে তা আলোচনা হয়েছে। সরকারের রাজনৈতিক লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি আহরণ, তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বাস্তবায়ন পর্যায়ে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন নীতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের কথা বলা হয়েছে। শুধু সোলার বলেই ছেড়ে দেয়া হয়নি। রুফটফ সোলার, নেট মিটারিং, মিনি গ্রিড, ন্যানো গ্রিড, সোলার ইরিগেশন, চার্জিং স্টেশন, স্ট্রিট লাইটে রিনিউয়েবল এনার্জি, ফ্লোটিং সোলার সিস্টেম- এরকমভাবে ডিটেইল বলা আছে। একইভাবে উইন্ড এনার্জি, বায়োমাস এনার্জি, বায়ো ফুয়েলের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির কিছু নতুন উৎসের কথাও এখানে বলা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আগামীতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কথা বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এতে কিছু টার্গেটের কথা বলা হয়েছে। রিনিউয়েবল এনার্জির ক্ষেত্রে কিছু টার্গেট দেয়া হয়েছে।’

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর কথা এতে উল্লেখ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্রেডাকে এখানে নোডাল এজেন্সি বলা হয়েছে। আমরাও তাই মনে করি। কিন্তু স্রেডাকে সব ধরনের ক্যাপাসিটি দিতে হবে। বড় পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রস্তাবনা দেখভাল করার ও অনুমতি দেয়ার ক্ষমতা স্রেডাকে দেয়া উচিত। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কার দরকার আছে। তবে এই সংস্কার আবার খসড়া প্রস্তাবে অনুপস্থিত।’

তিনি বলেন, ‘নতুন নীতিতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের আবার নীতি সংস্কার হয়েছে। মন্ত্রণালয় তার হতে কর্তৃত্ব নিয়ে ফেলছে। এর ফলে এখানে জ্বালানি নীতিতে যে গাইডলাইন দেয়া আছে রেগুলেটরি কমিশনের দাম নির্ধারণে ক্ষেত্রে, আর সরকার এখন যেভাবে দাম নির্ধারণ করেছে তাতে এটা এখন উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করছে। আমরা মনে করি, ট্যারিফ সেটিংয়ে রেগুলেটরি কমিশনেই ফিরে যাওয়া উচিত। নির্গমন সংশ্লিষ্ট টার্গেটগুলোকেও এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আইনটি না থাকলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে কোন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হবে না। আমরা শুনে এসেছি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের মূল্য সবচেয়ে কম। অথচ নতুন চুক্তির অধীনে আমরা যে ভারত থেকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ আনা শুরু করলাম, সেটার মূল্য তো ১৫ টাকা। এটা তো বোধগম্য না কী করে এরকম মূল্য, এরকম জায়গায় আমরা চুক্তি করতে পারি।’

জ্বালানি চুক্তি খোলামেলা হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন চুক্তির ডকুমেন্টস আমরা পাই না। কী রেটে চুক্তিগুলো করা হচ্ছে- জনগণের সেটা জানার অধিকার রয়েছে।’ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সমৃদ্ধ হতে কৃষিজমি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফাঁকা চর, বাড়ির ছাদ কিংবা রেলওয়ের খোলা জমিতে সোলার বসিয়ে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।’

back to top