alt

কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহাল

ইজারা ছাড়াই প্রভাবশালীদের দখলে জলমহাল, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া : বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহাল -সংবাদ

কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জেলার সর্ববৃহৎ জলমহাল বিগত দুইবছরেরও অধিক লিজবিহীন ভোগ দখল করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে নিবন্ধিত প্রকৃত মৎস্য সমিতিভুক্ত অন্তত একহাজার পরিবার জীবিকা হারিয়ে পথে বসেছে। প্রভাবশালীদের দাপট ও আইনী মারপ্যাচসহ নানা কারসাজিতে এই টানা দু’বছর জলমহালের ইজারা বন্ধে রাজস্ব ক্ষতিসহ প্রকৃত মৎস্যজীবীরা মাছচাষ, আহরণ ও বিপননে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া মাছ উৎপাদন-সংরক্ষণের এই অভয়াশ্রমে দেশী প্রজাতির মাছ উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহতসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকৃত মৎস্যজীবীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্গত কালিগঙ্গা-বাদলবাসা নামক ৬৫.৮৩ এশর আয়তনের বৃহৎ জলমহালটি দেশীয় প্রজাতির রুই, কাতলা, কই, চাপিলা, সরপুটি, মলা, পাবদাসহ অন্যান্য মাছচাষ ও সংরক্ষণের অভয়াশ্রম। এছাড়া এই জলমহালটি এলাকার বিপুল মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু ক্ষমতার দাপট ও নানা কারসাজিতে টানা দুই বছরের অধিক ওই জলমহালটি লিজবিহীন দখলে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। এতে জলমহাল তীরবর্তী প্রকৃত জেলে, মৎস্যচাষী, মৎস্য আহরণ ও বিপণনের সাথে জড়িত অনন্ত ১০০০ প্রকৃত মৎস্যজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। বৃহৎ এই জলমহালটিতে ইজারা বন্ধে মাছ থমকে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনসহ জেলাবাসীর আমিষের চাহিদা মেটাতে সরকারি উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে। এতে একদিকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ত্বড়িৎ পদক্ষেপের অভাবে প্রভাবশালীরা বছরের পর বছর জলমহালটি দখলে রেখে হাতিয়ে নিচ্ছে অঢেল টাকা। এছাড়া ২০০৯ সালের জলমহাল ব্যবস্থাপনা আইন মতে, কোন কারণে লিজবন্ধ থাকলেও খাসকালেকশনের মাধ্যমে জলমহালটি বন্দোবস্ত দেয়ার নির্দেশনাও মানা হচ্ছেনা।

২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি (বাংলা ৩ মাঘ, ১৪২৯) কুষ্টিয়ার ডিসি অফিসের রাজস্ব শাখার জারীকৃত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি মতে জলমহালটি তিনবছরই যারা নিতে আগ্রহীদের অনলাইনে আবেদন করার সর্বশেষ সময় সীমা ছিল ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী (বাংলা ২৫ মাঘ, ১৪২৯)। কিন্তু প্রভাবশালীদের দাপটে ইজারা গ্রহণে আগ্রহীদের কেউ টেন্ডারে অংশ গ্রহণ কিংবা সিডিউল জমা দেয়নি। এদিকে টেন্ডার আহবানের পর পরই মৎসজীবী দাবীদার এক প্রভাবশালী উচ্চ আদালতে রীট করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারী কালিগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহালের ইজারা কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। ফলে আইনী জটিলতাসহ নানা কারসাজিতে চুক্তিপত্র ছাড়াই প্রভাবশালীরাএকছত্র আধিপত্য বিস্তার করে দুই বছরেরও অধিক দেশি মাছ চাষ-সংরক্ষণের অভয়াশ্রম এই জলমহালটি দখলে রেখে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল মুনাফা। এতে ‘জাল যার, জলা তার’ সরকার ঘোষিত নীতি লংঘনে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ-অসন্তোষ ।

কালিগঙ্গা-বাদলবাসা মৎস্য সমবায় সমিতির (নিবন্ধিত) সভাপতি মো. আবু হানিফ মোল্লা জানান, প্রকৃত মৎসজীবীরা এই জলমহাল থেকে এখন বিতাড়িত। প্রভাবশালীদের কালো থাবায় এই জলমহালের সাথে জড়িত অনন্তঃ এক হাজার মৎসজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। জলমহালটি প্রকৃত মৎসজীবীদের হাতে ফিরিয়ে দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কুমারখালী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বিল-বাওড় মৎস উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সরকারের সাথে আন্তজার্তিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ-ড্যানিডা) সাথে ১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রয়ারি ভুমি ও মৎস্য-প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৫০ বছর মেয়াদী চুক্তি হয়। দশ বছর পর চুক্তি নবায়নের শর্ত ছিল। কিন্তু ঐ চুক্তির আওতায় ইফাদ কর্তৃপক্ষ ৩০ বছর পর প্রকল্পের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। ২০২১ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভুমি মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত চিঠিতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে ইজারার জন্য টেন্ডার দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে টেন্ডার আহবান করা হলে ইফাদের সুফলভোগী সদস্য দাবিদার প্রভাবশালীদের আইনী মারপ্যাচে জলমহালটি ইজারা কার্যক্রম থমকে গেছে। জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য-সচিব রেভিনিউ ডেপুটিকালেক্টর (আরডিসি) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, আইনী জটিলতা নিষ্পত্তির জন্য ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রয়ারী উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আইনী বাধা কাটিয়ে খুব শীঘ্রই উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে জলমহালটি মৎসজীবীদের কাছে ইজারা দেওয়ার সর্বাতœক চেষ্টা চলছে।

জেলা প্রশাসক ও জলমহাল কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, উন্মুক্ত টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু টেন্ডার দেয়ার পর পরই এক মৎস্যজীবী উচ্চ আদালতে রিট করায় আপাতত ওই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

ছবি

প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে এমসি কলেজ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

ছবি

চট্টগ্রাম মহানগরীতে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে যুবক খুন

ছবি

তাহিরপুর সীমান্তে বিএসএফের হাতে তিন বাংলাদেশি আটক

ছবি

কাতালগঞ্জে ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে প্রতিপক্ষের হয়রানি

ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে শ্রীমঙ্গলের বিলাস নদী

ছবি

নুরাল পাগলার দরবারে হামলার দুই মাস পর আদালতে নতুন মামলা

ছবি

মামলা করায় নারী শিল্পীকে মারধর, মুখে কালি ও চুল কেটে নির্যাতন

ছবি

পাচার হচ্ছে বিরল প্রজাতির লেমুরসহ বণ্যপ্রাণী, সঙ্গে যাচ্ছে কচ্ছপের হাড়ও

ছবি

মালয়েশিয়া কেড়ে নিলো ১৮ বছর, ফিরে দেখেন স্ত্রী অন্য সংসারে, বাবা-মা পরপারে

ছবি

শনিবার ভয়াল সিডর দিবস, এখনও সিডরের ক্ষত উপকূলে

ছবি

শুক্রবার ও বিভিন্ন জায়গায় পোড়ানো হয় যানবাহন

ছবি

রাজশাহীতে বিচারকের ছেলেকে হত্যার ঘটনায় মামলা

ছবি

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে মানুষ বিক্রির হাট

ছবি

বিপন্ন প্রজাতির ছাতিম ফুলের তীব্র ঘ্রাণে বিমোহিত পথচারী

ছবি

মধুপুর গড়ের লাল মাটিতে কমলা চাষ

ছবি

ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার ডিমোশন

ছবি

লাখাই উপজেলায় আমন ধান ঘরে তোলার অপেক্ষায়

ছবি

বরগুনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই

ছবি

ঝুলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন, এবার বাদীকে আদালত অবমাননার নোটিশ

বাগেরহাটে সামাজিক জবাবদিহিতার টুলস বিষয়ক প্রশিক্ষণ

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এগ্রো ফার্মে চুরি

ছবি

গোয়ালন্দে যৌন উত্তেজক ঔষধ খেয়ে যুবকের মৃত

ছবি

গজারিয়ায় জনবল ঔষধ ও উপকরণ সংকটে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ব্যাহত

ছবি

৩৮ বছরেও নেই অগ্রগতি, উদ্যোক্তা সংকটে ধুঁকছে লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরী

ছবি

কক্সবাজারের হোটেল কক্ষে পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার

ছবি

টঙ্গীবাড়ীতে কাঠের পুল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ

ছবি

ডিমলায় ভূমি দস্যদের অবৈধ দখলে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে নদীগুলো

ছবি

কলারোয়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি

ছবি

অল্পের জন্য রক্ষা শতশত মানুষের প্রাণ

ঘুষ নিয়েও নথির দিতে অস্বীকার : সেবাগ্রহীতাকে মারধর

চট্টগ্রামে প্রতারণার মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

উলিপুরে হাতিয়া গণ-হত্যা দিবস পালিত

চান্দিনায় দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ ডাকাত গ্রেপ্তার

নাজিরপুরে গাজাঁসেবির ৬ মাসের কারাদণ্ড

ছবি

নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা মাসুদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

কলমাকান্দায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ছাগল ও উপকরণ বিতরণ

tab

কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহাল

ইজারা ছাড়াই প্রভাবশালীদের দখলে জলমহাল, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহাল -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

কুষ্টিয়ায় কাঙ্গীগঙ্গা-বাদলবাসা জেলার সর্ববৃহৎ জলমহাল বিগত দুইবছরেরও অধিক লিজবিহীন ভোগ দখল করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে নিবন্ধিত প্রকৃত মৎস্য সমিতিভুক্ত অন্তত একহাজার পরিবার জীবিকা হারিয়ে পথে বসেছে। প্রভাবশালীদের দাপট ও আইনী মারপ্যাচসহ নানা কারসাজিতে এই টানা দু’বছর জলমহালের ইজারা বন্ধে রাজস্ব ক্ষতিসহ প্রকৃত মৎস্যজীবীরা মাছচাষ, আহরণ ও বিপননে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া মাছ উৎপাদন-সংরক্ষণের এই অভয়াশ্রমে দেশী প্রজাতির মাছ উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহতসহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকৃত মৎস্যজীবীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার অন্তর্গত কালিগঙ্গা-বাদলবাসা নামক ৬৫.৮৩ এশর আয়তনের বৃহৎ জলমহালটি দেশীয় প্রজাতির রুই, কাতলা, কই, চাপিলা, সরপুটি, মলা, পাবদাসহ অন্যান্য মাছচাষ ও সংরক্ষণের অভয়াশ্রম। এছাড়া এই জলমহালটি এলাকার বিপুল মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু ক্ষমতার দাপট ও নানা কারসাজিতে টানা দুই বছরের অধিক ওই জলমহালটি লিজবিহীন দখলে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। এতে জলমহাল তীরবর্তী প্রকৃত জেলে, মৎস্যচাষী, মৎস্য আহরণ ও বিপণনের সাথে জড়িত অনন্ত ১০০০ প্রকৃত মৎস্যজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। বৃহৎ এই জলমহালটিতে ইজারা বন্ধে মাছ থমকে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনসহ জেলাবাসীর আমিষের চাহিদা মেটাতে সরকারি উদ্যোগ ব্যাহত হচ্ছে। এতে একদিকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ত্বড়িৎ পদক্ষেপের অভাবে প্রভাবশালীরা বছরের পর বছর জলমহালটি দখলে রেখে হাতিয়ে নিচ্ছে অঢেল টাকা। এছাড়া ২০০৯ সালের জলমহাল ব্যবস্থাপনা আইন মতে, কোন কারণে লিজবন্ধ থাকলেও খাসকালেকশনের মাধ্যমে জলমহালটি বন্দোবস্ত দেয়ার নির্দেশনাও মানা হচ্ছেনা।

২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি (বাংলা ৩ মাঘ, ১৪২৯) কুষ্টিয়ার ডিসি অফিসের রাজস্ব শাখার জারীকৃত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি মতে জলমহালটি তিনবছরই যারা নিতে আগ্রহীদের অনলাইনে আবেদন করার সর্বশেষ সময় সীমা ছিল ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী (বাংলা ২৫ মাঘ, ১৪২৯)। কিন্তু প্রভাবশালীদের দাপটে ইজারা গ্রহণে আগ্রহীদের কেউ টেন্ডারে অংশ গ্রহণ কিংবা সিডিউল জমা দেয়নি। এদিকে টেন্ডার আহবানের পর পরই মৎসজীবী দাবীদার এক প্রভাবশালী উচ্চ আদালতে রীট করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারী কালিগঙ্গা-বাদলবাসা জলমহালের ইজারা কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। ফলে আইনী জটিলতাসহ নানা কারসাজিতে চুক্তিপত্র ছাড়াই প্রভাবশালীরাএকছত্র আধিপত্য বিস্তার করে দুই বছরেরও অধিক দেশি মাছ চাষ-সংরক্ষণের অভয়াশ্রম এই জলমহালটি দখলে রেখে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল মুনাফা। এতে ‘জাল যার, জলা তার’ সরকার ঘোষিত নীতি লংঘনে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ-অসন্তোষ ।

কালিগঙ্গা-বাদলবাসা মৎস্য সমবায় সমিতির (নিবন্ধিত) সভাপতি মো. আবু হানিফ মোল্লা জানান, প্রকৃত মৎসজীবীরা এই জলমহাল থেকে এখন বিতাড়িত। প্রভাবশালীদের কালো থাবায় এই জলমহালের সাথে জড়িত অনন্তঃ এক হাজার মৎসজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। জলমহালটি প্রকৃত মৎসজীবীদের হাতে ফিরিয়ে দিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কুমারখালী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বিল-বাওড় মৎস উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সরকারের সাথে আন্তজার্তিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ-ড্যানিডা) সাথে ১৯৯৬ সালের ৬ ফেব্রয়ারি ভুমি ও মৎস্য-প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৫০ বছর মেয়াদী চুক্তি হয়। দশ বছর পর চুক্তি নবায়নের শর্ত ছিল। কিন্তু ঐ চুক্তির আওতায় ইফাদ কর্তৃপক্ষ ৩০ বছর পর প্রকল্পের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়। ২০২১ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভুমি মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত চিঠিতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে ইজারার জন্য টেন্ডার দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে টেন্ডার আহবান করা হলে ইফাদের সুফলভোগী সদস্য দাবিদার প্রভাবশালীদের আইনী মারপ্যাচে জলমহালটি ইজারা কার্যক্রম থমকে গেছে। জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য-সচিব রেভিনিউ ডেপুটিকালেক্টর (আরডিসি) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, আইনী জটিলতা নিষ্পত্তির জন্য ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রয়ারী উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আইনী বাধা কাটিয়ে খুব শীঘ্রই উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে জলমহালটি মৎসজীবীদের কাছে ইজারা দেওয়ার সর্বাতœক চেষ্টা চলছে।

জেলা প্রশাসক ও জলমহাল কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, উন্মুক্ত টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু টেন্ডার দেয়ার পর পরই এক মৎস্যজীবী উচ্চ আদালতে রিট করায় আপাতত ওই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

back to top