alt

আবুধাবিতে আগুনে নিহতদের মরদেহ ফিরে পেতে চান স্বজনরা

প্রতিনিধি, নোয়াখালী : বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শারজাহতে আসবাবপত্রের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রবাসীদের মরদেহ দ্রুত ফিরে পেতে চান স্বজনরা।

মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর পেয়ে নোয়াখালীর সেনবাগে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা অসহায় পরিবারগুলো দ্রুত মরদেহ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তাও চেয়েছেন।

সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, আবুধাবির শারজাহতে মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

আগুনে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মারা যান, সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নের পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের আবু তাহের পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আব্দুল কাদেরর ছেলে মো. ইউছুপ মিয়া (৪৩), একই এলাকার বড়বাড়ির মীর আহম্মদের বড় ছেলে তারেক হোসেন বাদল (৪০) ও পলতি হারিছ মিয়ার বাড়ির আবদুল ওহাবের ছেলে মো. রাসেল (৩০)।

এ ঘটনায় নিহত আরেকজনের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়. তার নাম সুমন।

নিহত ইউছুপের ছোট ভাই ডা. গোলাম রসুল জানান, ২৫ বছর আগে তার বড় ভাই জীবিকার সন্ধানে আবুধাবিতে পাড়ি জমান। বছরখানেক আগে তিনি ধার দেনা করে আবুধাবির শারজাহতে সামাইয়া পাঁচ নম্বর এলাকায় একটি সোফা ফ্যাক্টরির ব্যবসা শুরু করেন।

“সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকজনকে নিয়ে যান বড় ভাই। মঙ্গলবার ঘটনার সময় তারা চারজন ঘুমিয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে ফ্যাক্টরি পুড়ে যায় এবং তারা চারজনই দগ্ধ হয়ে মারা যান। ”

পাশে তার অপর ভাই আনোয়ার হোসেনের ফ্যাক্টরিও পুড়ে যায়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান গোলাম রসুল।

এদিকে পিতাকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ ইউছুপের দুই সন্তান।

ইউছুপের শতবর্ষী মা মহব্বতের নেছা শেষবারের মতো ছেলেকে দেখার আকুতি জানান সরকারের কাছে।

দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতে আসেন স্বজনরা। একই এলাকার তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা তার বাবা মীর আহাম্মদ। তার তিন ছেলের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। তাই ১০ মাস আগে ধার-দেনা করে বাদলকে আবুধাবি পাঠান তিনি।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতে বাড়ির পাশের ইউছুপের কাছে বেড়াতে যান বাদল। কিন্তু সেখানেই আগুনে পুড়ে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

“বাদলের তিন ছেলে লেখাপড়া করছে। তাদের কি হবে? কীভাবে এত ধার শোধ করব?” প্রশ্ন সন্তান হারা এই পিতার।

একই ইউনিয়নের রাসেলের বাড়িতেও স্বজনদের কান্নার রোল। সন্তানকে হারিয়ে নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম জ্ঞান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।

রাসেলের চাচা সাহাব উদ্দিন জানান, রাসেলের কোনো ভূমি বা বসতঘরও নেই। তার মা, স্ত্রী ও এক সন্তান চাচা আবদুস ছাত্তারের ঘরে থাকেন। তার কন্যা সন্তানটি প্রতিবন্ধী।

“এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিল মাসে ধার-দেনা ও কিস্তি নিয়ে রাসেল আবুধাবিতে ইউছুপের সোফা ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে যায়। সেই কিস্তির টাকাও এখনো পরিশোধ করতে পারেননি রাসেল। তার মধ্যেই সে মারা গেল।”

নিঃস্ব এই পরিবারটির জন্য সরকারি সহয়তার ব্যবস্থার অনুরোধ করেন তিনি।

ছবি

মদনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৩ দোকান পুড়ে ছাই

ছবি

টেকনাফের অপহৃত ব্যবসায়ী মুক্তিপণে ফিরেছে

ছবি

নারায়ণগঞ্জে মুক্তিপণ দাবি, পরদিন মিলল লাশ

ছবি

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা: নামে আছেন, কাজে নেই!

ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ে তৌহিদি জনতার হামলায় বাউল সমর্থকদের প্রতিবাদী সমাবেশ পণ্ড, আহত ২

ছবি

ধান মাড়াই মেশিন তৈরির অন্যতম স্থান কালীগঞ্জ, দিন-রাত এক হয় কারিগরদের

রংপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন; ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকারের নজরদারি কার্যকর

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথে অবরোধ, মশাল মিছিল ও সমাবেশের ডাক

ছবি

শেরপুরে চায়না কমলার ডালে ঝুলে আছে মাসুদের স্বপ্ন

ছবি

বাগেরহাটে বেসরকারিভাবে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন

ছবি

সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের

ছবি

গোয়ালন্দে তারুণ্যের পিঠা উৎসব

ছবি

বিল ডাকাতিয়ার মানুষের জীবন সংগ্রাম

ছবি

সাতক্ষীরার উপকূলের লবণাক্ত মাটিতে নতুন আশা বিনা ধান-১০

ছবি

হবিগঞ্জে নার্স-মিডওয়াইফদের অবস্থান কর্মসূচি

ছবি

গৌরনদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৫

ছবি

রৌমারীতে ‘মিডডে মিল’ কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

উল্লাপাড়ায় ঘুষ-স্বজনপ্রীতির অভিযোগে মাদরাসার সুপারসহ ৪ জন বরখাস্ত

বটিয়াঘাটায় প্রাণী সম্পদ মেলা অনুষ্ঠিত

ছবি

বাগেরহাটে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

ছবি

কুষ্টিয়ায় গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ৯টি অবৈধ ইটভাটা

ছবি

দরপতনেও ভাটা পরেনি আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

ছবি

দশমিনায় বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ

ছবি

শাহজাদপুরে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ছবি

বরগুনায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত

ছবি

বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মিলাদ

ডিমলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহের কর্মসূচীর উদ্বোধন

ছবি

সরকারি জায়গায় বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের গুরুতর অভিযোগ

ছবি

ভালুকায় ভারতীয় মদ বোঝাই পিকআপ জব্দ

ছবি

গৌরনদীতে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গা মন্দিও ভাঙার অভিযোগ

ছবি

স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিল উপজেলা প্রশাসন উদ্বোধন হলো আধুনিক শিশু পার্ক

মহেশপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ফেন্সিডিল উদ্ধার ও নারী আটক

ছবি

কুলাউড়ায় আমন ধান কাটার ব্যস্ততা, সোনালী ফসল ঘরে তুলতে উৎসবমুখর কৃষক

ছবি

শেরপুরে টিসিবির ২৪৮ বস্তা চাল জব্দ, ডিলার আটক

ছবি

নড়াইলে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষরা ছেলেকে হত্যা করেছে, দাবি মায়ের

ছবি

আত্রাইয়ে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ পালিত

tab

আবুধাবিতে আগুনে নিহতদের মরদেহ ফিরে পেতে চান স্বজনরা

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির শারজাহতে আসবাবপত্রের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রবাসীদের মরদেহ দ্রুত ফিরে পেতে চান স্বজনরা।

মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর পেয়ে নোয়াখালীর সেনবাগে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা অসহায় পরিবারগুলো দ্রুত মরদেহ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তাও চেয়েছেন।

সেনবাগ থানার ওসি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, আবুধাবির শারজাহতে মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

আগুনে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে মারা যান, সেনবাগের ডমুরুয়া ইউনিয়নের পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের আবু তাহের পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আব্দুল কাদেরর ছেলে মো. ইউছুপ মিয়া (৪৩), একই এলাকার বড়বাড়ির মীর আহম্মদের বড় ছেলে তারেক হোসেন বাদল (৪০) ও পলতি হারিছ মিয়ার বাড়ির আবদুল ওহাবের ছেলে মো. রাসেল (৩০)।

এ ঘটনায় নিহত আরেকজনের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়. তার নাম সুমন।

নিহত ইউছুপের ছোট ভাই ডা. গোলাম রসুল জানান, ২৫ বছর আগে তার বড় ভাই জীবিকার সন্ধানে আবুধাবিতে পাড়ি জমান। বছরখানেক আগে তিনি ধার দেনা করে আবুধাবির শারজাহতে সামাইয়া পাঁচ নম্বর এলাকায় একটি সোফা ফ্যাক্টরির ব্যবসা শুরু করেন।

“সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার জন্য এলাকার বেশ কয়েকজনকে নিয়ে যান বড় ভাই। মঙ্গলবার ঘটনার সময় তারা চারজন ঘুমিয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে ফ্যাক্টরি পুড়ে যায় এবং তারা চারজনই দগ্ধ হয়ে মারা যান। ”

পাশে তার অপর ভাই আনোয়ার হোসেনের ফ্যাক্টরিও পুড়ে যায়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান গোলাম রসুল।

এদিকে পিতাকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ ইউছুপের দুই সন্তান।

ইউছুপের শতবর্ষী মা মহব্বতের নেছা শেষবারের মতো ছেলেকে দেখার আকুতি জানান সরকারের কাছে।

দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতে আসেন স্বজনরা। একই এলাকার তারেক হোসেন বাদলের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা তার বাবা মীর আহাম্মদ। তার তিন ছেলের মধ্যে দুজনই প্রতিবন্ধী। তাই ১০ মাস আগে ধার-দেনা করে বাদলকে আবুধাবি পাঠান তিনি।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতে বাড়ির পাশের ইউছুপের কাছে বেড়াতে যান বাদল। কিন্তু সেখানেই আগুনে পুড়ে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

“বাদলের তিন ছেলে লেখাপড়া করছে। তাদের কি হবে? কীভাবে এত ধার শোধ করব?” প্রশ্ন সন্তান হারা এই পিতার।

একই ইউনিয়নের রাসেলের বাড়িতেও স্বজনদের কান্নার রোল। সন্তানকে হারিয়ে নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম জ্ঞান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।

রাসেলের চাচা সাহাব উদ্দিন জানান, রাসেলের কোনো ভূমি বা বসতঘরও নেই। তার মা, স্ত্রী ও এক সন্তান চাচা আবদুস ছাত্তারের ঘরে থাকেন। তার কন্যা সন্তানটি প্রতিবন্ধী।

“এর মধ্যে গত বছরের এপ্রিল মাসে ধার-দেনা ও কিস্তি নিয়ে রাসেল আবুধাবিতে ইউছুপের সোফা ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে যায়। সেই কিস্তির টাকাও এখনো পরিশোধ করতে পারেননি রাসেল। তার মধ্যেই সে মারা গেল।”

নিঃস্ব এই পরিবারটির জন্য সরকারি সহয়তার ব্যবস্থার অনুরোধ করেন তিনি।

back to top