গত সপ্তাহে নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস মানুষেরা আরও চাপে পড়েছেন। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি রক্ষায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এই পরিস্থিতি।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুন বাগিচা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ও মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৯০ থেকে ২১৫ টাকায়। এছাড়া সোনালি জাতের মুরগি ৩১৫ থেকে ৩৩০ টাকা, আর দেশি মুরগি ৫৩০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
এক মাস হতে চললেও সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ডিম-আলু-পেঁয়াজ। বরং এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম এক হালি ৫৫ টাকা আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
শুক্রবারই কারওয়ান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। পরিচিত দোকানে বাজার দরের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা কমে কিনতে পেরেছেন ব্রয়লার মুরগি। দিনকাল কেমন যাচ্ছে? প্রশ্ন করলে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘খারাপ, খুব খারাপ। ভালো নেই। দিনকাল ভালো আছে এখন? আয়ের লগে ব্যয় মিলে না, ব্যয়ের লগে আয় মিলেনা। এখন সবারই একই অবস্থা। যে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস মাছ মানুষ খায় না, তারও কেজি ২৪০ টাকা। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো খাবার দরকার নাই। নরমাল খাইয়া চলতে হইবো। এক কেজি গরুর মাংস কেনা সম্ভব? আটশ’ টাকা কেজি।’
এই পরিস্থিতিতে সৎ উপার্জনকারীদের পক্ষে জীবন চালানো অসম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘সবকিছুই তো বাড়তি। সামনে কি আছে আল্লাহই জানে,’ বলেন তিনি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শুক্রবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ১০০ টাকা। এক বছর আগে যা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অর্থাৎ গত এক বছরে দাম বেড়েছে ১০৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। পাশাপাশি শুক্রবারের দেশি রসুনের দর ছিল ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, এক বছর আগে কেজিপ্রতি যার দাম ছিল ৭০ থেকে ৯০ টাকা। বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। এর আগে, দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয়া হয় ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা।
তবে ডিম-আলু-পেঁয়াজের বেঁধে দেয়া সেই দাম কার্যকর করা সম্ভব হয়নি- স্বীকার করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিজেই। গত ৬ অক্টোবর রংপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘আমরা যে টার্গেট নির্ধারণ করেছিলাম তা অ্যাচিভ করা যায়নি।’
এরপর গত ৮ অক্টোবর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভা শেষে সাংবাদিকেরা কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করেন, পেঁয়াজ ও আলুর বাজার দর নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে কি না।
মন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘আমরা এখনো যথেষ্ট তৎপর রয়েছি। সরাসরি উৎপাদনের পার্ট হচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের। বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। মন্ত্রিপরিষদ পদ্ধতিতে মন্ত্রীদের যৌথভাবে দায়িত্ব রয়েছে। সব বিপর্যয়ের জন্য এখানে মন্ত্রীরাই দায়ী। সুতরাং আমরা মোটেই হাল ছেড়ে দেইনি। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছেন। তারা সঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ করছেন না। এটা একটা বড় অন্তরায়। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করলে তারা সাপ্লাইই দেয় না। এত অসহযোগিতা সত্ত্বেও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
‘সামনে শীতকাল আসছে। ফলে প্রচুর সবজি আসবে। এতে করে সব ধরনের সবজির দামই কমে আসবে,’ বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি দুনিয়ায় কারোরই নেই। বাজারের সিন্ডিকেট যদি দেখতে পারতাম, ধরতে পারতাম, তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারতাম। সিন্ডিকেট ধরা যায় না, অধরা থেকে যায়।’
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পর বাজারে এখনও পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ বাড়েনি। তাই বেশিরভাগ সবজিই বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। আর লাল গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। করলা কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা , পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা আর লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সালাদের গাজর ও টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
সবজির দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে সবজির যে দাম বাড়ছে সেই দামেই আছে। তারপর আর তেমন দাম কমেনি। সরবরাহ কমেছে।’
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও ওজনভেদে চাষের পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।
খোলা বাজারে বিআর আটাশের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি দরে আর মিনিকেট জাতের চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। পাশাপাশি খোলা বাজারে খোলা আটা কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকা আর খোলা ময়দা ৬০ টাকায়।
এছাড়া চিনি, জিরা-মসলাসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম এখনো বাড়তি।
এর আগে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান সংবাদকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অতি লোভ দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির কারণ। ক্যাবিনেটে ৬২ শতাংশই ব্যবসায়ী। তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যের নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মনিটরিংয়ে এর প্রতিফলন থাকার কথা। অর্থাৎ সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা থাকার কথা। কিন্তু সেটা হয়নি। দেশে একটি বিশৃঙ্খল বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।’
শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩
গত সপ্তাহে নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস মানুষেরা আরও চাপে পড়েছেন। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি রক্ষায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এই পরিস্থিতি।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুন বাগিচা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ও মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৯০ থেকে ২১৫ টাকায়। এছাড়া সোনালি জাতের মুরগি ৩১৫ থেকে ৩৩০ টাকা, আর দেশি মুরগি ৫৩০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।
এক মাস হতে চললেও সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ডিম-আলু-পেঁয়াজ। বরং এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম এক হালি ৫৫ টাকা আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
শুক্রবারই কারওয়ান বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। পরিচিত দোকানে বাজার দরের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা কমে কিনতে পেরেছেন ব্রয়লার মুরগি। দিনকাল কেমন যাচ্ছে? প্রশ্ন করলে সংবাদকে তিনি বলেন, ‘খারাপ, খুব খারাপ। ভালো নেই। দিনকাল ভালো আছে এখন? আয়ের লগে ব্যয় মিলে না, ব্যয়ের লগে আয় মিলেনা। এখন সবারই একই অবস্থা। যে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস মাছ মানুষ খায় না, তারও কেজি ২৪০ টাকা। ’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো খাবার দরকার নাই। নরমাল খাইয়া চলতে হইবো। এক কেজি গরুর মাংস কেনা সম্ভব? আটশ’ টাকা কেজি।’
এই পরিস্থিতিতে সৎ উপার্জনকারীদের পক্ষে জীবন চালানো অসম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘সবকিছুই তো বাড়তি। সামনে কি আছে আল্লাহই জানে,’ বলেন তিনি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শুক্রবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ১০০ টাকা। এক বছর আগে যা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অর্থাৎ গত এক বছরে দাম বেড়েছে ১০৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। পাশাপাশি শুক্রবারের দেশি রসুনের দর ছিল ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, এক বছর আগে কেজিপ্রতি যার দাম ছিল ৭০ থেকে ৯০ টাকা। বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১৫০ শতাংশ। এর আগে, দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেয়া হয় ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা।
তবে ডিম-আলু-পেঁয়াজের বেঁধে দেয়া সেই দাম কার্যকর করা সম্ভব হয়নি- স্বীকার করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিজেই। গত ৬ অক্টোবর রংপুরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘আমরা যে টার্গেট নির্ধারণ করেছিলাম তা অ্যাচিভ করা যায়নি।’
এরপর গত ৮ অক্টোবর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভা শেষে সাংবাদিকেরা কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে জিজ্ঞেস করেন, পেঁয়াজ ও আলুর বাজার দর নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে কি না।
মন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘আমরা এখনো যথেষ্ট তৎপর রয়েছি। সরাসরি উৎপাদনের পার্ট হচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের। বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। তারপরও আমি দায়িত্ব এড়াতে পারি না। মন্ত্রিপরিষদ পদ্ধতিতে মন্ত্রীদের যৌথভাবে দায়িত্ব রয়েছে। সব বিপর্যয়ের জন্য এখানে মন্ত্রীরাই দায়ী। সুতরাং আমরা মোটেই হাল ছেড়ে দেইনি। কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা খুবই অসহযোগিতা করছেন। তারা সঠিকভাবে পণ্য সরবরাহ করছেন না। এটা একটা বড় অন্তরায়। মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করলে তারা সাপ্লাইই দেয় না। এত অসহযোগিতা সত্ত্বেও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
‘সামনে শীতকাল আসছে। ফলে প্রচুর সবজি আসবে। এতে করে সব ধরনের সবজির দামই কমে আসবে,’ বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি দুনিয়ায় কারোরই নেই। বাজারের সিন্ডিকেট যদি দেখতে পারতাম, ধরতে পারতাম, তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারতাম। সিন্ডিকেট ধরা যায় না, অধরা থেকে যায়।’
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পর বাজারে এখনও পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ বাড়েনি। তাই বেশিরভাগ সবজিই বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সবজিই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। আর লাল গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। করলা কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা , পটল ৭০ থেকে ৮০ টাকা আর লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সালাদের গাজর ও টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
সবজির দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আল আমিন বলেন, ‘বৃষ্টির মধ্যে সবজির যে দাম বাড়ছে সেই দামেই আছে। তারপর আর তেমন দাম কমেনি। সরবরাহ কমেছে।’
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও ওজনভেদে চাষের পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।
খোলা বাজারে বিআর আটাশের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি দরে আর মিনিকেট জাতের চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। পাশাপাশি খোলা বাজারে খোলা আটা কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকা আর খোলা ময়দা ৬০ টাকায়।
এছাড়া চিনি, জিরা-মসলাসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম এখনো বাড়তি।
এর আগে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান সংবাদকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অতি লোভ দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির কারণ। ক্যাবিনেটে ৬২ শতাংশই ব্যবসায়ী। তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্যের নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মনিটরিংয়ে এর প্রতিফলন থাকার কথা। অর্থাৎ সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা থাকার কথা। কিন্তু সেটা হয়নি। দেশে একটি বিশৃঙ্খল বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।’