alt

বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপে সুফল মিলছে, ৪ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬০ শতাংশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার সুফলও মিলছে। আমদানি ব্যয় বেশ কমে এসেছে। আর তাতে বাণিজ্য ঘাটতি বেশ খানিকটা কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮০ কোটি ৯০ লাখ (৩.৮১ বিলিয়ন) ডলার যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬০ দশমিক ৪২ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯৬২ কোটি ৪০ লাখ (৯.৬২ বিলিয়ন) ডলার।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে ২ হাজার ২৬ কোটি ৯০ লাখ (১৬.৪৬ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে এই বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ১৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৫ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এই ঘাটতি ৩৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল।

এতে লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্তও কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। তিন মাস শেষে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি (১.১২ বিলিয়ন) ডলার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে ৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ছিল।

আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১৮ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছর। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই কোনো অর্থবছরে ব্যালান্স অব পেমেন্টে এত ঘাটতি দেখা যায়নি। আমদানি কমায় গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই ঘাটতি ৩৩৩ কোটি (৩.৩৩ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসে অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যালান্স অব পেমেন্টে ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে আমদানি ব্যয় বাড়তে শুরু করে। পুরো অর্থবছরে সেই উল্লম্ফন দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়। ওই অর্থবছরে রপ্তানি আয়েও উল্লম্ফন হয়েছিল; ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিটেন্স কমেছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। সে কারণেই ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি চূড়ায় উঠেছিল।

বেশ কয়েক বছর পর ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে রেমিটেন্সের গতিও কিছতা কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা যা ছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-অক্টোবর সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

অন্যদিকে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি বেড়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাই-অক্টোবর সময়ে তা বেড়ে ৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আর্থিক হিসাবে (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট) ঘাটতি বেশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই সূচকে ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সূচকে ১৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত ছিল।

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

ছবি

বাংলাদেশে ব্লুটুথ হেডফোন ও ডেটা কেবল তৈরির কারখানা করবে চীন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার নিয়ম

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে অপো এ৫ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

ছবি

অর্থ বিভাগের পরিপত্র: ৯ মাসে ৬০ শতাংশ খরচ করতে না পারলে অর্থছাড় বন্ধ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে মিতসুবিশি’র নতুন এক্সপ্যান্ডার ব্ল্যাক সিরিজ

ছবি

বেসিসের নতুন প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান

ছবি

দারাজ বাংলাদেশের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯.৯ অ্যানিভার্সারি মেগা সেল

ছবি

শাওমি বাজারে নিয়ে এলো রেডমি প্যাড ২

ছবি

নভেম্বরের মধ্যেই একীভূত হবে পাঁচ ব্যাংক

ছবি

আইএমএফ-এর এমডি’র সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও কনফারেন্স ১৬ সেপ্টেম্বর

ছবি

স্যালভো কেমিক্যালের শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব ফের বাতিল করলো বিএসইসি

ছবি

সর্ববৃহৎ-অত্যাধুনিক ওয়াটার প্রোডাকশন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করলো আকিজ ভেঞ্চার

ছবি

বহুজাতিক কোম্পানির অর্থপাচার ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারি, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ছবি

পুনঃঅর্থায়ন তহবিল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের চুক্তি সই

ছবি

বিভিন্ন ধরনের বন্ডে সংশোধনী আনতে যাচ্ছে বিএসইসি

ছবি

শেয়ারে কারসাজি, ছয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, একজন ৫ বছর নিষিদ্ধ শেয়ারবাজারে

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ করতে জাপান আগ্রহী: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেবে এনবিআর: চেয়ারম্যান

ছবি

আটাব নির্বাচন: প্যানেল প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন প্রশাসক

tab

news » business

বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপে সুফল মিলছে, ৪ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬০ শতাংশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ডলার সংকটের কারণে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। তার সুফলও মিলছে। আমদানি ব্যয় বেশ কমে এসেছে। আর তাতে বাণিজ্য ঘাটতি বেশ খানিকটা কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮০ কোটি ৯০ লাখ (৩.৮১ বিলিয়ন) ডলার যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬০ দশমিক ৪২ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯৬২ কোটি ৪০ লাখ (৯.৬২ বিলিয়ন) ডলার।

জুলাই-অক্টোবর সময়ে ২ হাজার ২৬ কোটি ৯০ লাখ (১৬.৪৬ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৪ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।

অন্যদিকে এই বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ১৬ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৫ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এই ঘাটতি ৩৩ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল।

এতে লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্তও কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। তিন মাস শেষে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি (১.১২ বিলিয়ন) ডলার। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের এই চার মাসে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে ৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি ছিল।

আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১৮ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছর। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই কোনো অর্থবছরে ব্যালান্স অব পেমেন্টে এত ঘাটতি দেখা যায়নি। আমদানি কমায় গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই ঘাটতি ৩৩৩ কোটি (৩.৩৩ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসে অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যালান্স অব পেমেন্টে ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে আমদানি ব্যয় বাড়তে শুরু করে। পুরো অর্থবছরে সেই উল্লম্ফন দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়। ওই অর্থবছরে রপ্তানি আয়েও উল্লম্ফন হয়েছিল; ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিটেন্স কমেছিল ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ। সে কারণেই ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি চূড়ায় উঠেছিল।

বেশ কয়েক বছর পর ২০২০-২১ অর্থবছরে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ। প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত ছিল ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে রেমিটেন্সের গতিও কিছতা কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা যা ছিল ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-অক্টোবর সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

অন্যদিকে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি বেড়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি ছিল ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাই-অক্টোবর সময়ে তা বেড়ে ৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আর্থিক হিসাবে (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট) ঘাটতি বেশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই সূচকে ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি নিয়ে অর্থবছর শেষ হয়। অথচ ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সূচকে ১৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বড় উদ্বৃত্ত ছিল।

back to top