অব্যাহত লোকসানের কারণ দেখিয়ে গত জুন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিককে অবসরে পাঠিয়ে এগুলো বন্ধ করে দেয় সরকার। ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এসব পাটকলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে দাবি করে এগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পুনরায় চালুর আহ্বান জানিয়েছেন পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও প্রবীণ শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।
প্রবীণ এই শ্রমিক নেতা বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের চাহিদা যখন বাড়ছে, তখনই সরকার পাটকলগুলো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেখানো হয়েছে, তার বেশিরভাগই ভুল তথ্য ও ধারণার ওপর করা হয়েছে। এছাড়া লোকসানের জন্য পাট সময় মতো না কেনা, যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন না করাসহ আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করে আসছেন শ্রমিক নেতারা।
ঢাকার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সহিদুল্লাহর মতে, পাটকলগুলো বন্ধ করার মানে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম উপাদানকে ধ্বংস করা। ভুল নীতি ও দুর্নীতি পরিহার করে সঠিক নীতি, পদ্ধতি ও কর্মপন্থা ঠিক করতে পারলে দেশের পাটগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালে প্রবর্তিত মোড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হলে দেশের ভেতরেই পাটপণ্যের বিপুল চাহিদা সৃষ্টি হবে। এছাড়া নতুন যন্ত্রপাতি কিনে পাটকলগুলো চালু করা হলে গড় উৎপাদন ৬০ ভাগ বেড়ে যাবে বলেও দাবি করেন তিনি। এই শ্রমিক নেতা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করায় স্থায়ী, বদলি ও ক্যাজুয়াল সব মিলিয়ে প্রায় ৫১ হাজার পাটকল শ্রমিক বেকার হয়েছে। পাট চাষ, প্রক্রিয়াকরণ, পাট ও পাট জাতীয় বিভিন্ন উপকরণ তৈরি ও বাণিজ্যের সঙ্গে প্রায় চার কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। তাই আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো পুনরায় চালুর দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পিপিপি বা লিজ না দিয়ে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিযোগের মাধ্যমে আধুনিকায়নের মাধ্যমে পাটকলগুলো লাভজনক করা সম্ভব। ‘পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান, আসলাম খান, শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মছিউদদ্দৌলা, হাফিজ জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, কেএফডি শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুল করিম, আমিন জুট মিলস শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা, আমিন জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম, আমিন পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, এশিয়াটিক কটন মিলস শ্রমিক লীগ সভাপতি যদু মোহন দাশ, সিজিএমসিএল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক: পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ
অপরাধ ও দুর্নীতি: ব্যাগভর্তি জাল টাকা, হাসপাতালে বিল দেয়ার সময় আটক তিন
সারাদেশ: সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি