alt

আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে: বিনায়ক সেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে। আর এই আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

আইসিডিডিআরবির ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার বিনায়ক সেন খানা আয়–ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, দেশে এখন গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫০। শহরাঞ্চলে গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫৪ আর গ্রামাঞ্চলে তা শূন্য দশমিক ৪৫। একই সঙ্গে দেশে ভোগের ক্ষেত্রেও অসমতা বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে ভোগ অসমতার ক্ষেত্রে গিনি সহগ ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪; শহরাঞ্চলে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩৫৬ আর গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে যা ছিল শূন্য দশমিক ২৯১।

গিনি সহগের মান শূন্য হলে বোঝা যায়, সমাজে চূড়ান্ত সমতা আছে। ১ হলে বোঝা যায় চূড়ান্ত অসমতা আছে; শূন্য দশমিক ৫০ অতিক্রম করলে বোঝা যায়, দেশে উচ্চ অসমতা আছে। অর্থাৎ দেশে এখন উচ্চ অসমতা বিরাজ করছে।

এই পরিস্থিতিতে দেশে বর্তমানে যে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে, তা ঠিক এই অসমতা মোকাবিলা করার মতো নয়, অর্থাৎ বৈষম্যে তার তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না বলে মন্তব্য করেন বিনায়ক সেন।

তিনি ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, তখন দেশের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ছিল। তথ্যে দেখা যায়, গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে এ নিয়ে বড় ব্যবধান আছে; গ্রামাঞ্চলের ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় থাকলেও শহরাঞ্চলের মাত্র ১০ দশমিক ১ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, যদিও শহরাঞ্চলে অসমতা বেশি।

বিনায়ক সেন আরও বলেন, বৈষম্য বাড়ছে—সাধারণভাবে এই কথার অর্থ হলো ধনী আরও ধনী হচ্ছে আর দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে অসমতার প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন। তাঁর ভাষ্য, দেশে দরিদ্র ও অদরিদ্র উভয় শ্রেণির মানুষের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু অদরিদ্র শ্রেণির উন্নতির হার বেশি।

সেমিনারে ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা এবং নিয়ামকসমূহ: সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন সংঘাত দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তবে এর আগে গত এক দশকে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বিনায়ক সেন দারিদ্র্যের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরেন এবং তা থেকে উত্তরণে বেশ কিছু নীতিগত প্রস্তাব তুলে ধরেন। স্মার্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই প্রবৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সেসব নীতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি।

বিনায়ক সেন উপস্থাপনায় দেখান, সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর-জিডিপির অনুপাত কমে যাচ্ছে। ২০০০-০১ সালে দেশে কর–জিডিপির অনুপাত ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০১০-১১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ, সে বছর জিডিপির অনুপাতে সরকারি ব্যয় ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, কিন্তু সরকারি ব্যয়-জিডিপির অনুপাত বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ কারণে সরকারের ব্যয়ের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।

ছবি

পাঁচ বেসরকারি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার প্রথম ধাপে প্রশাসক বসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পেছানোর বিরোধিতা করছে

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন নামলো ৬শ’ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

ব্যবসা মাঝে মন্থর ছিল, এখন একটু ভালো: অর্থ উপদেষ্টা.

ছবি

অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরে আশাবাদী জাপানি রাষ্ট্রদূত

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সভা: একীভূত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বসছে প্রশাসক

ছবি

বিজিএমইএ–মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক: শুল্ক কমাতে আহ্বান

ছবি

জুলাই-আগস্টে এডিপি বাস্তবায়ন ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ

ছবি

বিবিএসের নাম পরিবর্তন ও তদারক পরিষদ রাখার সুপারিশ

ছবি

শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করার তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের

ছবি

নগদ অর্থের ব্যবহার কমাতে আসছে একীভূত পেমেন্ট সিস্টেম: গভর্নর

ছবি

আড়াই মাসে ১৩৯ কোটি ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে আবেদনের সময় বাড়লো ২ নভেম্বর পর্যন্ত

ছবি

পুঁজিবাজারে সূচকের নামমাত্র উত্থান, লেনদেন আরও তলানিতে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে খরচ বাড়লো ৪১ শতাংশ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ভি সিরিজের নতুন ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

ছবি

বাংলাদেশে ব্লুটুথ হেডফোন ও ডেটা কেবল তৈরির কারখানা করবে চীন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার নিয়ম

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে অপো এ৫ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

tab

আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে: বিনায়ক সেন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য বাড়ছে। আর এই আয় বৈষম্য বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন।

আইসিডিডিআরবির ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার বিনায়ক সেন খানা আয়–ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, দেশে এখন গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫০। শহরাঞ্চলে গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৫৪ আর গ্রামাঞ্চলে তা শূন্য দশমিক ৪৫। একই সঙ্গে দেশে ভোগের ক্ষেত্রেও অসমতা বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে ভোগ অসমতার ক্ষেত্রে গিনি সহগ ছিল শূন্য দশমিক ৩৩৪; শহরাঞ্চলে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩৫৬ আর গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে যা ছিল শূন্য দশমিক ২৯১।

গিনি সহগের মান শূন্য হলে বোঝা যায়, সমাজে চূড়ান্ত সমতা আছে। ১ হলে বোঝা যায় চূড়ান্ত অসমতা আছে; শূন্য দশমিক ৫০ অতিক্রম করলে বোঝা যায়, দেশে উচ্চ অসমতা আছে। অর্থাৎ দেশে এখন উচ্চ অসমতা বিরাজ করছে।

এই পরিস্থিতিতে দেশে বর্তমানে যে সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে, তা ঠিক এই অসমতা মোকাবিলা করার মতো নয়, অর্থাৎ বৈষম্যে তার তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না বলে মন্তব্য করেন বিনায়ক সেন।

তিনি ২০১৬ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপের সূত্রে বলেন, তখন দেশের ২৭ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ছিল। তথ্যে দেখা যায়, গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে এ নিয়ে বড় ব্যবধান আছে; গ্রামাঞ্চলের ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার সামাজিক সুরক্ষার আওতায় থাকলেও শহরাঞ্চলের মাত্র ১০ দশমিক ১ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, যদিও শহরাঞ্চলে অসমতা বেশি।

বিনায়ক সেন আরও বলেন, বৈষম্য বাড়ছে—সাধারণভাবে এই কথার অর্থ হলো ধনী আরও ধনী হচ্ছে আর দরিদ্র আরও দরিদ্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে অসমতার প্রকৃতি কিছুটা ভিন্ন। তাঁর ভাষ্য, দেশে দরিদ্র ও অদরিদ্র উভয় শ্রেণির মানুষের অবস্থার উন্নতি হয়েছে, কিন্তু অদরিদ্র শ্রেণির উন্নতির হার বেশি।

সেমিনারে ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য প্রবণতা এবং নিয়ামকসমূহ: সাম্প্রতিক প্রমাণ থেকে অন্তর্দৃষ্টি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন সংঘাত দেশের দারিদ্র্য পরিস্থিতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তবে এর আগে গত এক দশকে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বিনায়ক সেন দারিদ্র্যের প্রধান কারণগুলো তুলে ধরেন এবং তা থেকে উত্তরণে বেশ কিছু নীতিগত প্রস্তাব তুলে ধরেন। স্মার্ট সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, টেকসই প্রবৃদ্ধি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সেসব নীতি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি।

বিনায়ক সেন উপস্থাপনায় দেখান, সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর-জিডিপির অনুপাত কমে যাচ্ছে। ২০০০-০১ সালে দেশে কর–জিডিপির অনুপাত ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ২০১০-১১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ১০ দশমিক ৪ শতাংশ, সে বছর জিডিপির অনুপাতে সরকারি ব্যয় ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ।

২০২০-২১ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাত ছিল ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, কিন্তু সরকারি ব্যয়-জিডিপির অনুপাত বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ কারণে সরকারের ব্যয়ের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।

back to top