‘বড় বড় খেলাপিরাই সাত, আট, নয়বার করে ঋণ পুনঃ তফসিল করতে পারছেন বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ফরাসউদ্দিন।’ তিনি বলেন, ‘এর ফলে আরও খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তাই খেলাপি ঋণ কমতে হলে পুনঃ তফসিল ঋণ বন্ধ করতে হবে।’
গতকাল বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফরাসউদ্দিন এসব কথা বলেন। বইটি তাঁর লেখা।
ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। কী করণীয়, কী বর্জনীয় এসব বলার জন্যই এই বই লেখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বড় অর্থনীতিবিদ নই। তবু মনে করি, প্রচলিত পথে দারিদ্র্য বিমোচনের পরিবর্তে শিল্পায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘জিডিপির আকার যদি ৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪৬০ বিলিয়ন ডলার হয়ে থাকে, মাথাপিছু আয় যদি বেড়ে থাকে, তাহলে রাজস্ব আয় কেন বাড়বে না; আমার কাছে এটা বড় সমস্যা বলে মনে হয়।’
তিনি আরও বরেন, ‘অর্থনীতিবিদেরা জ্ঞানী; গণমাধ্যমে বা টেলিভিশনে তাঁরা কথা বলেন। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের উচিত, আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের কথা শোনা; সেটা করা গেলে খুব ভালো হতো।’
বাজেটঘাটতি নিয়ে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, অনেক উৎসের মতো বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা হয়; কিন্তু টাকার যখন অবমূল্যায়ন হয়, তখন দায় বেড়ে যায়। ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া শাঁখের করাতের মতো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হলে মূল্যস্ফীতি হবে, ব্যাংক থেকে দেওয়া হলে ব্যক্তি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পেশাজীবীদের সবাই ঠিকমতো কর দেন বলে মনে করেন না ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, কৃষি খাত এখন বাণিজ্যভিত্তিক হচ্ছে। দুই বছরের নোটিশ দিয়ে তাঁদেরও করের আওতায় আনা যেতে পারে।
এ ছাড়া সমীক্ষা করা ছাড়া সরকারি কোনো খাতে বিনিয়োগ করা উচিত নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, আড়াই থেকে তিন বছর ধরে সুদের হার ৯-৬ এবং বহুপক্ষীয় মুদ্রা বিনিময় হার থাকার কারণে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সময় লাগবে। এ ধরনের বিনিময় হার বিশ্বের কোথাও নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ঋণখেলাপি ও মুদ্রা পাচারকারীরা একই সূত্রে গাঁথা। এসব সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে পারলে তিনি সেগুলো দূর করার পদক্ষেপ নেবেন বলে মনে করেন ফরাসউদ্দিন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদ সাংবিধানিক করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেছেন, নিদেনপক্ষে গভর্নর পদে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া সমীচীন। ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো করার পক্ষে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শামস্ রহমান। বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
‘বড় বড় খেলাপিরাই সাত, আট, নয়বার করে ঋণ পুনঃ তফসিল করতে পারছেন বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ফরাসউদ্দিন।’ তিনি বলেন, ‘এর ফলে আরও খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তাই খেলাপি ঋণ কমতে হলে পুনঃ তফসিল ঋণ বন্ধ করতে হবে।’
গতকাল বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীর করণীয়’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফরাসউদ্দিন এসব কথা বলেন। বইটি তাঁর লেখা।
ফরাসউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। কী করণীয়, কী বর্জনীয় এসব বলার জন্যই এই বই লেখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বড় অর্থনীতিবিদ নই। তবু মনে করি, প্রচলিত পথে দারিদ্র্য বিমোচনের পরিবর্তে শিল্পায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘জিডিপির আকার যদি ৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪৬০ বিলিয়ন ডলার হয়ে থাকে, মাথাপিছু আয় যদি বেড়ে থাকে, তাহলে রাজস্ব আয় কেন বাড়বে না; আমার কাছে এটা বড় সমস্যা বলে মনে হয়।’
তিনি আরও বরেন, ‘অর্থনীতিবিদেরা জ্ঞানী; গণমাধ্যমে বা টেলিভিশনে তাঁরা কথা বলেন। রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের উচিত, আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের কথা শোনা; সেটা করা গেলে খুব ভালো হতো।’
বাজেটঘাটতি নিয়ে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, অনেক উৎসের মতো বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা হয়; কিন্তু টাকার যখন অবমূল্যায়ন হয়, তখন দায় বেড়ে যায়। ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া শাঁখের করাতের মতো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হলে মূল্যস্ফীতি হবে, ব্যাংক থেকে দেওয়া হলে ব্যক্তি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পেশাজীবীদের সবাই ঠিকমতো কর দেন বলে মনে করেন না ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, কৃষি খাত এখন বাণিজ্যভিত্তিক হচ্ছে। দুই বছরের নোটিশ দিয়ে তাঁদেরও করের আওতায় আনা যেতে পারে।
এ ছাড়া সমীক্ষা করা ছাড়া সরকারি কোনো খাতে বিনিয়োগ করা উচিত নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর।
মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, আড়াই থেকে তিন বছর ধরে সুদের হার ৯-৬ এবং বহুপক্ষীয় মুদ্রা বিনিময় হার থাকার কারণে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক সময় লাগবে। এ ধরনের বিনিময় হার বিশ্বের কোথাও নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ঋণখেলাপি ও মুদ্রা পাচারকারীরা একই সূত্রে গাঁথা। এসব সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে পারলে তিনি সেগুলো দূর করার পদক্ষেপ নেবেন বলে মনে করেন ফরাসউদ্দিন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদ সাংবিধানিক করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেছেন, নিদেনপক্ষে গভর্নর পদে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া সমীচীন। ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো করার পক্ষে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য শামস্ রহমান। বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।