alt

অর্থ-বাণিজ্য

ঋণখেলাপিদের ৪ বার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয় : বিআইডিএস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪

ঋণখেলাপিদের একে একে চারবার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। তিনি বলেছেন, ‘খেলাপিদের চারবার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয়। চারবার এই সুযোগ দেয়া হলে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই চারবারে প্রায় ১০-১২ বছর লেগে যায়। এতে দেশের অর্থনীতিতে অনেক পরিবর্তন আসে।’ শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি খেলাপি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে, এই বিষয়ে সরকার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের খেলাপি রয়েছে। আগে আমাদের সেই দুই ধরনের খেলাপি আলাদা করতে হবে। এক ধরনের খেলাপি হলো, প্রকৃত খেলাপি। যে কোনো একটা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন এবং লস করেছেন। তিনি আসলে বুঝতে পারেননি যে ব্যবসাটা তার জন্য নয়। তিনি এই ভুল দ্বিতীয়বার করবেন না। অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার পরিচয় আছে যারা প্রথম ব্যবসায় লোকসান করেছিলেন। তারপর পরের ব্যবসায় লাভবান হয়েছেন। তিনি হলেন প্রকৃত খেলাপি। তাকে সুযোগ দেয়া উচিত।’

আরেক ধরনের খেলাপির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরেক ধরনের খেলাপি আছে যাদেরকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি বলা হয়। এই ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের শক্ত হাতে ধরতে হবে। এজন্য আগে কারা প্রকৃত খেলাপি আর কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি সেটা আলাদা করতে হবে।’

ব্যাংক কমিশন বা কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের কথা বলে আসছি। সেটা হলে এই খাতের অনিয়ম কিছুটা হলেও দূর হবে।’

কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে ট্যাক্স রেট বেঁধে দেয়া আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। এই রেট অবশ্যই গ্রাহকের সম্পদের পরিমাণের ওপর হওয়া উচিত। ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া ‘ট্যাক্স ইকুইটি’র (কর ন্যায্যতা) খেলাপ বলে মনে করি।’

বিনায়ক সেন বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে গ্রাহকের বৈধ আয়ও অপ্রদর্শিত আয় হতে পারে। এক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া দরকার। তবে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শনের সুযোগে একেবারে ট্যাক্স মওকুফ করা কিংবা একটি নির্দিষ্ট রেট বেঁধে দেয়ার পক্ষে নই আমরা। আমাদের অবস্থান মধ্যবর্তী।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকের কাছে যে পরিমাণ অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ থাকবে সেই সম্পদের পরিমাণ অনুযায়ী ট্যাক্স নির্ধারণ করা উচিত। সেটা হতে পারে ১৫ শতাংশ, আবার হতে পারে ২০, ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। ১৫ শতাংশ ট্যাক্স বেঁধে দেয়া ট্যাক্স ইকুইটির খেলাপ বলে মনে করি।’

বিআইডিএস এর গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসাইন মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলেন, ‘সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা একটি অন্যতম কৌশল। বিভিন্ন দেশের এমনটা করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বাড়িয়ে দিলে মূল্যস্ফীতি কমে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে তেমনটা হচ্ছে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ঋণের মধ্যে বেশি অংশ হলো ভোক্তাঋণ। আর খুব কম অংশ হলো শিল্পঋণ। বাংলাদেশে এটা উল্টা। বাংলাদেশের মোট ঋণের অধিকাংশই হলো শিল্পঋণ। ভোক্তাঋণ খুব সামান্য। তাই সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবে সেটা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

বিআইডিএস এর আরেকজন গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল দেশের শিল্পনীতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘একটা দেশের দীর্ঘমেয়াদে শিল্প কোন দিকে যাবে সেটার একটা দিকনির্দেশনা থাকা দরকার। সেটা ৫ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে, ১০ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে বা ৫০ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে। সেটা ছাড়া টেকসই শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব নয়। আমাদের দেশে যেটা হচ্ছে, আগে যেকোনো ভাবে একটা খাত আলোচনায় আসছে। তারপর সেটা নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। সেটা চলতে থাকলে বাজার ব্যবস্থা যেদিকে যাবে আমাদের শিল্পও সেদিকে যাবে। তখন সেটাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে না। অর্থাৎ বাজার যেটা ভালো মনে করবে সেভাবে এগিয়ে যাবে। সেটা ঠিক নয়।’

বিভিন্ন দেশের অটোমোবাইল শিল্পের উদারহণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল, চীন, ভারত অনেক আগে থেকে গাড়ি বানানো শুরু করেছে। তারা যখন শুরু করেছে তখন সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি সত্যি কিন্তু অনেক আগে থেকে শুরু করার কারণে ধীরে ধীরে তারা শিখেছে কিভাবে মানসম্মত গাড়ি বানাতে হয়। এরপর যখন নিজেরা যোগ্য হয়েছে তখন তারা এই খাতে ভালো উৎপদন দিতে পেরেছে। এমনটা হলে সংকটে দেশ আটকে যায় না। যেমন এখন রিজার্ভ সংকট রয়েছে। এখন যদি বিলাসপণ্য আমদানি বন্ধ করে ডলার সাশ্রয় করা হয় তাহলে রিজার্ভ বাড়বে। কিন্তু দেশে এসব পণ্য তৈরি না করলে তো সেটার আমদানি বন্ধ করা যাবে না।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গবেষণা পরিচালক ড. এসএম জুলফিকার আলি, ড, মোহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।

ছবি

মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই, গরু-খাসি-মুরগি স্থিতিশীল

ছবি

সিপিডি ডায়ালগ : মূল্য কাঠামোর সংস্কারে জ্বালানি তেলের দাম কমবে কমপক্ষে ১০ টাকা

ছবি

২০৩০ সাল নাগাদ ৫ হাজার সেমিকন্ডাক্টর প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান করবে উল্কাসেমি

ছবি

ভিসাকার্ড পেমেন্টে ফুডপ্যান্ডায় ছাড়

ছবি

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সঙ্গে বেসিসের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

ছবি

শ্রমিকদের বেতন দিতে ৬০ কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছে বেক্সিমকো

ছবি

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা

ছবি

বাংলালিংকের মাইবিএল অ্যাপে রয়্যাল এনফিল্ড বাইক জেতার সুযোগ

ছবি

ব্যক্তি থাকুক আর না থাকুক, প্রতিষ্ঠান থাকবে, প্রতিষ্ঠান চলবে: গভর্নর

আয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়লো এক মাস

ছবি

তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে স্লিম থ্রিডি-কার্ভড ডিজাইনের স্মার্টফোন ইনফিনিক্স ‘হট৫০ প্রো প্লাস’

ছবি

রাজশাহী অঞ্চলে আলু বীজের সংকট, দিশেহারা কৃষক, জরুরি সভা

ছবি

মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ এর বিজয়ীদের নাম ঘোষণা

ছবি

ভয়েস সার্চেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে দরকারি সেবা বিকাশ অ্যাপে

ছবি

খেলাপি ঋণ বেড়ে ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, তিন মাসে বৃদ্ধি ৭৩ হাজার কোটি

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা এক মাস বাড়ানো হলো

ছবি

রমজান উপলক্ষে ১১ ধরনের খাদ্যপণ্যে এলসি মার্জিন শিথিল

ছবি

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ

ছবি

প্রতিবন্ধী গ্রাহকদের সেবা প্রদানে রবি’র বিশেষ উদ্যোগ

ছবি

বাংলাদেশে আর্থিক খাতে সংকট ও পুনরুদ্ধার: স্বল্পমেয়াদি সংস্কার নিয়ে আশাবাদী অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

সিটিআইটি মেলায় আসুস ল্যাপটপে বিশেষ অফার

ছবি

‘অনুপমা, তুমিই গড়বে দেশ’: ধানমন্ডিতে চলছে নারী উদ্যোক্তা মেলা

ছবি

আসছে শীত তবুও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি

ছবি

এনআরবিসি চেয়ারম্যান তমাল ও আদনানসহ ৩ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ

ছবি

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও গ্রামীণফোনের মধ্যে চুক্তি

ছবি

বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি টিকিট দিচ্ছে এয়ার এ্যাস্ট্রা

ছবি

আদানির বিদ্যুৎ আমদানিতে ৪০ কোটি ডলারের শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ এনবিআরের

ছবি

দুর্বল ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মোকাবেলায় ৬ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার সহায়তা

সিলেটে টাকা না পেয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে গ্রাহকদের তালা

ছবি

যুগপূর্তিতে কাজের স্বীকৃতি পেলো কেয়ারটিউটরসের কর্মীরা

ছবি

দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইনে টেকনোর অফার

ছবি

বাজারে ব্রাদার এর নতুন প্রিন্টার টোনার

ছবি

ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে সরকারি কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক

ছবি

জবি প্রকল্প সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করলে সমস্যা নেই: শিক্ষা উপদেষ্টা

ছবি

স্লিম থ্রিডি কার্ভড স্মার্টফোন আনছে ইনফিনিক্স

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ঋণখেলাপিদের ৪ বার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয় : বিআইডিএস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪

ঋণখেলাপিদের একে একে চারবার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। তিনি বলেছেন, ‘খেলাপিদের চারবার পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়া ঠিক নয়। চারবার এই সুযোগ দেয়া হলে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই চারবারে প্রায় ১০-১২ বছর লেগে যায়। এতে দেশের অর্থনীতিতে অনেক পরিবর্তন আসে।’ শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি খেলাপি ঋণ বেড়ে রেকর্ড ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে, এই বিষয়ে সরকার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের খেলাপি রয়েছে। আগে আমাদের সেই দুই ধরনের খেলাপি আলাদা করতে হবে। এক ধরনের খেলাপি হলো, প্রকৃত খেলাপি। যে কোনো একটা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন এবং লস করেছেন। তিনি আসলে বুঝতে পারেননি যে ব্যবসাটা তার জন্য নয়। তিনি এই ভুল দ্বিতীয়বার করবেন না। অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার পরিচয় আছে যারা প্রথম ব্যবসায় লোকসান করেছিলেন। তারপর পরের ব্যবসায় লাভবান হয়েছেন। তিনি হলেন প্রকৃত খেলাপি। তাকে সুযোগ দেয়া উচিত।’

আরেক ধরনের খেলাপির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরেক ধরনের খেলাপি আছে যাদেরকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি বলা হয়। এই ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের শক্ত হাতে ধরতে হবে। এজন্য আগে কারা প্রকৃত খেলাপি আর কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি সেটা আলাদা করতে হবে।’

ব্যাংক কমিশন বা কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের কথা বলে আসছি। সেটা হলে এই খাতের অনিয়ম কিছুটা হলেও দূর হবে।’

কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে ট্যাক্স রেট বেঁধে দেয়া আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। এই রেট অবশ্যই গ্রাহকের সম্পদের পরিমাণের ওপর হওয়া উচিত। ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া ‘ট্যাক্স ইকুইটি’র (কর ন্যায্যতা) খেলাপ বলে মনে করি।’

বিনায়ক সেন বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে গ্রাহকের বৈধ আয়ও অপ্রদর্শিত আয় হতে পারে। এক্ষেত্রে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া দরকার। তবে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শনের সুযোগে একেবারে ট্যাক্স মওকুফ করা কিংবা একটি নির্দিষ্ট রেট বেঁধে দেয়ার পক্ষে নই আমরা। আমাদের অবস্থান মধ্যবর্তী।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকের কাছে যে পরিমাণ অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ থাকবে সেই সম্পদের পরিমাণ অনুযায়ী ট্যাক্স নির্ধারণ করা উচিত। সেটা হতে পারে ১৫ শতাংশ, আবার হতে পারে ২০, ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। ১৫ শতাংশ ট্যাক্স বেঁধে দেয়া ট্যাক্স ইকুইটির খেলাপ বলে মনে করি।’

বিআইডিএস এর গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসাইন মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলেন, ‘সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা একটি অন্যতম কৌশল। বিভিন্ন দেশের এমনটা করা হয়। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বাড়িয়ে দিলে মূল্যস্ফীতি কমে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে তেমনটা হচ্ছে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক ঋণের মধ্যে বেশি অংশ হলো ভোক্তাঋণ। আর খুব কম অংশ হলো শিল্পঋণ। বাংলাদেশে এটা উল্টা। বাংলাদেশের মোট ঋণের অধিকাংশই হলো শিল্পঋণ। ভোক্তাঋণ খুব সামান্য। তাই সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবে সেটা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।’

বিআইডিএস এর আরেকজন গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল দেশের শিল্পনীতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘একটা দেশের দীর্ঘমেয়াদে শিল্প কোন দিকে যাবে সেটার একটা দিকনির্দেশনা থাকা দরকার। সেটা ৫ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে, ১০ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে বা ৫০ বছরের পরিকল্পনা হতে পারে। সেটা ছাড়া টেকসই শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব নয়। আমাদের দেশে যেটা হচ্ছে, আগে যেকোনো ভাবে একটা খাত আলোচনায় আসছে। তারপর সেটা নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। সেটা চলতে থাকলে বাজার ব্যবস্থা যেদিকে যাবে আমাদের শিল্পও সেদিকে যাবে। তখন সেটাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে না। অর্থাৎ বাজার যেটা ভালো মনে করবে সেভাবে এগিয়ে যাবে। সেটা ঠিক নয়।’

বিভিন্ন দেশের অটোমোবাইল শিল্পের উদারহণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল, চীন, ভারত অনেক আগে থেকে গাড়ি বানানো শুরু করেছে। তারা যখন শুরু করেছে তখন সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি সত্যি কিন্তু অনেক আগে থেকে শুরু করার কারণে ধীরে ধীরে তারা শিখেছে কিভাবে মানসম্মত গাড়ি বানাতে হয়। এরপর যখন নিজেরা যোগ্য হয়েছে তখন তারা এই খাতে ভালো উৎপদন দিতে পেরেছে। এমনটা হলে সংকটে দেশ আটকে যায় না। যেমন এখন রিজার্ভ সংকট রয়েছে। এখন যদি বিলাসপণ্য আমদানি বন্ধ করে ডলার সাশ্রয় করা হয় তাহলে রিজার্ভ বাড়বে। কিন্তু দেশে এসব পণ্য তৈরি না করলে তো সেটার আমদানি বন্ধ করা যাবে না।’

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গবেষণা পরিচালক ড. এসএম জুলফিকার আলি, ড, মোহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।

back to top