প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে ভোক্তার ওপর জুলুম না করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসর’স অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যে বাড়তি মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানায় সংগঠনটি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংগঠনটি পক্ষে এসব কথা বলেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী। সম্প্রতি মোবাইল, ইন্টারনেট, রেস্তোরাঁসহ একাধিক পণ্য ও সেবায় বর্ধিত মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। একইভাবে তাদের দাবিও ইতিবাচকভাবে দেখবেন এমন মন্তব্য করে সাংবাদিকদের আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আগের হারে ভ্যাট ও শুল্ক দিতে চাই। এনবিআর চেয়ারম্যান ইতিবাচকভাবে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। সব শুনে তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারটা দেখতে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে এনবিআর আমাদের তড়িৎ সমাধান দিবেন। আমরা এনবিআরকে বুঝিয়েছি। আশা করি, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ভালো একটা সমাধান পাব। মূসকের হার না যাতে না বাড়ানো হয়। আমরা চাই না এই কষ্টের দিনে ভোক্তার ওপর কোনো রকম চাপ আসুক। আমরা সুলভ মূল্যে ভোক্তার হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে চাচ্ছি ।’
বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার না হলে ভোক্তাকে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশের বেশি ভ্যাট বেড়ে গিয়েছে। ৫ টাকার বিস্কুট আগামী দিনে ৭ টাকা দেওয়া লাগবে। ১০ টাকার বিস্কুট আগামী দিনে ১৩ টাকা, ২০ টাকার জুস আগামীতে ২৫ টাকায় কিনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্কের কারণে ভোক্তা ও কৃষকের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে। ক্রেতার পকেট থেকে বাড়তি কত টাকা যাবে, এই পয়েন্টগুলো আমরা তার সামনে তুলে ধরেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্কের কারণে বিস্কুটের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে। জুসে প্রায় ২০ শতাংশ সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি আরোপ হয়েছে। ১৫ শতাংশ ভ্যাটে ছিল। তার ওপর আরও ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ২৫ টাকার জুসে সাড়ে ৭ টাকা দেওয়ার দাবি ছিল সরকারের পক্ষ থেকে। আমরা বিনয়ের সঙ্গে মাফ চেয়েছি। বলেছি, বাংলাদেশের ভোক্তার কাছ থেকে ২০ টাকার জুসে ৭ টাকা নেওয়ার কোন যুক্তি নাই। তাদের বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান জানিয়েছি বাংলাদেশের ভোক্তার ওপর এ ধরনের জুলুম করবেন না।’ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে ভ্যাটের হার বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের ব্যয় বেশি। খাদ্য পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য এই বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।’
পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা গঠনমূলকভাবে সরকারকে বোঝাবো। বার বার বোঝাবো। ডায়ালগ ও সেমিনার করবো। এনবিআর চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারি ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ার পরেও আমরা এখনও পণ্যের দাম বাড়াইনি। আমাদের লস হচ্ছে। আমরা ভীষণভাবে লোকসান দিচ্ছি। আমরা চাইছি এই লোকসানের বোঝা থেকে কারখানাগুলোকে বের করে নিয়ে আসতে পারি। এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে সংগঠনটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে স্মারকলিপি দেয়।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাপার সভাপতি এম এ হাশেম, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, পারটেক্স স্টার গ্রুপের এমডি আজিজ আল মাহমুদ, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মোহাম্মদ বশির, বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়া, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, বাপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। এরমধ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পণ্য বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যসমূহের ওপর মূসক ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ ছিল। তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংঙ্কসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ হারে আরোপ ছিল, তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং আর্টিফিসিয়াল, ফ্লেভার ড্রিংকস ও ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস (নন-কার্বোনেটেড) পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক ০ ছিল এবং তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী পর্যায়ে পূর্বে ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ ছিল যা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। বর্ধিত ভ্যাটের প্রভাব কৃষক থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পড়বে জানিয়ে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ করে বাপার নেতারা।
শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে ভোক্তার ওপর জুলুম না করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসর’স অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যে বাড়তি মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানায় সংগঠনটি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংগঠনটি পক্ষে এসব কথা বলেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী। সম্প্রতি মোবাইল, ইন্টারনেট, রেস্তোরাঁসহ একাধিক পণ্য ও সেবায় বর্ধিত মূসক ও শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। একইভাবে তাদের দাবিও ইতিবাচকভাবে দেখবেন এমন মন্তব্য করে সাংবাদিকদের আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আগের হারে ভ্যাট ও শুল্ক দিতে চাই। এনবিআর চেয়ারম্যান ইতিবাচকভাবে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। সব শুনে তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারটা দেখতে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। সার্বিক দিক বিবেচনা করে এনবিআর আমাদের তড়িৎ সমাধান দিবেন। আমরা এনবিআরকে বুঝিয়েছি। আশা করি, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ভালো একটা সমাধান পাব। মূসকের হার না যাতে না বাড়ানো হয়। আমরা চাই না এই কষ্টের দিনে ভোক্তার ওপর কোনো রকম চাপ আসুক। আমরা সুলভ মূল্যে ভোক্তার হাতে পণ্য পৌঁছে দিতে চাচ্ছি ।’
বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার না হলে ভোক্তাকে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশের বেশি ভ্যাট বেড়ে গিয়েছে। ৫ টাকার বিস্কুট আগামী দিনে ৭ টাকা দেওয়া লাগবে। ১০ টাকার বিস্কুট আগামী দিনে ১৩ টাকা, ২০ টাকার জুস আগামীতে ২৫ টাকায় কিনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্কের কারণে ভোক্তা ও কৃষকের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে। ক্রেতার পকেট থেকে বাড়তি কত টাকা যাবে, এই পয়েন্টগুলো আমরা তার সামনে তুলে ধরেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্কের কারণে বিস্কুটের দাম ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে। জুসে প্রায় ২০ শতাংশ সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি আরোপ হয়েছে। ১৫ শতাংশ ভ্যাটে ছিল। তার ওপর আরও ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ২৫ টাকার জুসে সাড়ে ৭ টাকা দেওয়ার দাবি ছিল সরকারের পক্ষ থেকে। আমরা বিনয়ের সঙ্গে মাফ চেয়েছি। বলেছি, বাংলাদেশের ভোক্তার কাছ থেকে ২০ টাকার জুসে ৭ টাকা নেওয়ার কোন যুক্তি নাই। তাদের বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান জানিয়েছি বাংলাদেশের ভোক্তার ওপর এ ধরনের জুলুম করবেন না।’ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে ভ্যাটের হার বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের ব্যয় বেশি। খাদ্য পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য এই বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।’
পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা গঠনমূলকভাবে সরকারকে বোঝাবো। বার বার বোঝাবো। ডায়ালগ ও সেমিনার করবো। এনবিআর চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারি ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ার পরেও আমরা এখনও পণ্যের দাম বাড়াইনি। আমাদের লস হচ্ছে। আমরা ভীষণভাবে লোকসান দিচ্ছি। আমরা চাইছি এই লোকসানের বোঝা থেকে কারখানাগুলোকে বের করে নিয়ে আসতে পারি। এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যানকে সংগঠনটি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর বর্ধিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে স্মারকলিপি দেয়।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাপার সভাপতি এম এ হাশেম, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, পারটেক্স স্টার গ্রুপের এমডি আজিজ আল মাহমুদ, এসএমসি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ নাসির, রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মোহাম্মদ বশির, বাংলাদেশ বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়া, আকিজ ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের পরিচালক সৈয়দ জহুরুল আলম, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এর চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম, বাপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে দেয়। এরমধ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পণ্য বিস্কুট, কেক, আচার, চাটনি, টমেটো পেস্ট, টমেটো কেচাপ, টমেটো সস, আম, আনারস, পেয়ারা ও কলার পাল্প ইত্যাদি পণ্যসমূহের ওপর মূসক ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ ছিল। তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এছাড়া ফলের রস ও ফ্রুট ড্রিংঙ্কসের ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ হারে আরোপ ছিল, তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং আর্টিফিসিয়াল, ফ্লেভার ড্রিংকস ও ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস (নন-কার্বোনেটেড) পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক ০ ছিল এবং তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী পর্যায়ে পূর্বে ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ ছিল যা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। বর্ধিত ভ্যাটের প্রভাব কৃষক থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পড়বে জানিয়ে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ করে বাপার নেতারা।