বিদেশে অর্থপাচারের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সম্পত্তি কেনার অভিযোগে চৌধুরী নাফিজ সরাফতসহ ৪৫৯ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রথম পর্যায়ে ৭৮ জনের কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
দুদকের উপপরিচালক রাম প্রসাদ মন্ডলের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের অনুসন্ধান দল গত ১৬ এপ্রিল এনবিআরের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে। ওই চিঠিতে ৭৮ জনের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর ও জন্মতারিখসহ ‘টিআইএন সার্টিফিকেট’ এর বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
দুদক বলছে, এই তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্তে অত্যন্ত জরুরি। চিঠিতে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই অনুসন্ধানের মূল ভিত্তি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ ও ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির বিশ্লেষণ, যেখানে বলা হয়েছে—বাংলাদেশি ৪৫৯ ব্যক্তি দুবাইয়ে মোট ৯৭২টি সম্পত্তি কিনেছেন। এসব সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি মার্কিন ডলার।
দুদকের তদন্তের আওতায় থাকা ব্যক্তি চৌধুরী নাফিজ সরাফত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট নানা প্রতিষ্ঠানে প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফতের বিরুদ্ধে বহুবার আর্থিক খাতে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও, এতদিন তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
তবে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্নীতি বিরোধী অভিযান শুরু হলে নাফিজ সরাফত ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়। তার বিরুদ্ধে এখন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন যৌথভাবে তদন্ত চালাচ্ছে।
তথ্য চাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন: আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, হুমায়রা সেলিম, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. রাব্বী খান, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, এস এ খান ইখতেখারুজ্জামান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সৈয়দ ফাহিম আহমেদ, সৈয়দ হাসনাইন, সৈয়দ মাহমুদুল হক, সৈয়দ রুহুল হক, গোলাম মোহাম্মদ ভূঁইয়া, হাজী মোস্তফা ভূঁইয়া, মনজ কান্তি পাল, মো. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মো. মাহবুবুল হক সরকার, মো. সেলিম রেজা, মোহাম্মদ ইলিয়াস বজলুর রহমান, এস ইউ আহমেদ, শেহতাজ মুন্সী খান, এ কে এম ফজলুর রহমান, আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, গুলজার আলম চৌধুরী, হাসান আশিক তাইমুর ইসলাম, হাসান রেজা মহিদুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, এম সাজ্জাদ আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী, মোস্তফা আমির ফয়সাল, রিফাত আলী ভূঁইয়া, সালিমুল হক ঈসা বা হাকিম মোহাম্মদ ঈসা, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান বা সৈয়দ কামরুজ্জামান, সৈয়দ সালমান মাসুদ, সৈয়দ সাইমুল হক, আবদুল হাই সরকার, আহমেদ সামীর পাশা, ফাহমিদা শবনম চৈতি, মো. আবুল কালাম, ফাতেমা বেগম কামাল, মোহাম্মদ আল রুমান খান, মায়নুল হক সিদ্দিকী, মুনিয়া আওয়ান, সাদিক হোসেন মো. শাকিল, আবদুল্লাহ মামুন মারুফ, মোহাম্মদ আরমান হোসেন, মোহাম্মদ শওকত হোসেন সিদ্দিকী, মোস্তফা জামাল নাসের, আহমেদ ইমরান চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন চৌধুরী, নাতাশা নূর মুমু, সৈয়দ মিজান মোহাম্মদ আবু হানিফ সিদ্দিকী, সায়েদা দুররাক সিনদা জারা, আহমেদ ইফজাল চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, ফারজানা আনজুম খান, কে এইচ মশিউর রহমান, এম এ সালাম, মো. আলী হোসেন, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ভরসা, মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ রোহেন কবীর, মনজিলা মোর্শেদ, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সরফুল ইসলাম, আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
সারাদেশ: যশোরে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
অপরাধ ও দুর্নীতি: লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা