প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের “ঘুষ, দুর্নীতি ও পাচার”-এর কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি শূন্যের নিচে নেমে গেছে এবং দেশ এখন “দেনার ভারে জর্জরিত”।
লন্ডনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স—চ্যাথাম হাউজে আয়োজিত এক সংলাপে বুধবার এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রবাসীদের একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, “বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। আমরা একটি ভেঙে পড়া অর্থনীতি পেয়েছি। আমাদের এখন বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের দেনা শোধ করতে হচ্ছে, যেগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, একটি সরকারি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ব্যাংক ও নন-ব্যাংক খাত মিলিয়ে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে”, এবং “ঋণদাতাদের কোনো জামানত ছাড়াই অর্থ দেওয়া হয়েছিল—ফেরতের শর্ত ছাড়াই”।
প্রবাসীদের অবদান ও আন্তর্জাতিক সহায়তা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সংকট মুহূর্তে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সই অর্থনীতিকে বাঁচিয়েছে। “যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ সব দেশ থেকেই প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন—সেই অর্থেই ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘুরে দাঁড়িয়েছে,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে “অপ্রত্যাশিত সমর্থন” পাওয়া গেছে।
“আইএমএফ বলেছিল বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। আমরা সাহস করে সেটা করেছি। ফলাফল মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল,” বলেন ইউনূস।
দুর্নীতি দমন ও সেবা ডিজিটালাইজেশন
বাংলাদেশে “সর্বব্যাপী দুর্নীতির” বিরুদ্ধে লড়াই করতে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান ইউনূস।
একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “পাসপোর্ট সেবাকে পুরোপুরি অনলাইনে আনা হয়েছে। তবে শুরুতে ইচ্ছাকৃতভাবে সার্ভার ডাউন করে রাখা হয়েছিল যাতে দালালদের ভূমিকা বজায় থাকে।”
তিনি জানান, এখন “বাংলাদেশ সার্ভিস সেন্টার” নামে কিয়স্ক চালু করে সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।
রোহিঙ্গা সংকটে ‘রোডম্যাপের’ দাবি
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গার বিষয়ে ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে “রোহিঙ্গাদের ফেরানোর একটি রোডম্যাপ” দিতে হবে।
“আমরা বলছি, ১০ বা ২০ বছর লাগলেও একটা তারিখ দিতে হবে। প্রতিবছর একটি বছর করে কমতে থাকবে। সেটা নিয়েই কাজ করছি।”
তিনি জানান, সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বিশেষ বৈঠকের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
‘অসাধারণ সুযোগ’ মন্তব্য
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং কাঠামোগত সংস্কারের জন্য এই অন্তর্বর্তী সময়কে “একটি ঐতিহাসিক জানালা” বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
“আমাদের কোনো রাজনৈতিক পক্ষ নেই, কোনো ভোট ব্যাংক নেই। আমরা পক্ষপাতহীনভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি—যা কোনো নির্বাচিত সরকার সহজে করতে পারে না,” বলেন ইউনূস।
---
বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের “ঘুষ, দুর্নীতি ও পাচার”-এর কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি শূন্যের নিচে নেমে গেছে এবং দেশ এখন “দেনার ভারে জর্জরিত”।
লন্ডনে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স—চ্যাথাম হাউজে আয়োজিত এক সংলাপে বুধবার এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রবাসীদের একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, “বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। আমরা একটি ভেঙে পড়া অর্থনীতি পেয়েছি। আমাদের এখন বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের দেনা শোধ করতে হচ্ছে, যেগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, একটি সরকারি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ব্যাংক ও নন-ব্যাংক খাত মিলিয়ে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে”, এবং “ঋণদাতাদের কোনো জামানত ছাড়াই অর্থ দেওয়া হয়েছিল—ফেরতের শর্ত ছাড়াই”।
প্রবাসীদের অবদান ও আন্তর্জাতিক সহায়তা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সংকট মুহূর্তে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সই অর্থনীতিকে বাঁচিয়েছে। “যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ সব দেশ থেকেই প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন—সেই অর্থেই ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ঘুরে দাঁড়িয়েছে,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকে “অপ্রত্যাশিত সমর্থন” পাওয়া গেছে।
“আইএমএফ বলেছিল বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। আমরা সাহস করে সেটা করেছি। ফলাফল মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল,” বলেন ইউনূস।
দুর্নীতি দমন ও সেবা ডিজিটালাইজেশন
বাংলাদেশে “সর্বব্যাপী দুর্নীতির” বিরুদ্ধে লড়াই করতে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান ইউনূস।
একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “পাসপোর্ট সেবাকে পুরোপুরি অনলাইনে আনা হয়েছে। তবে শুরুতে ইচ্ছাকৃতভাবে সার্ভার ডাউন করে রাখা হয়েছিল যাতে দালালদের ভূমিকা বজায় থাকে।”
তিনি জানান, এখন “বাংলাদেশ সার্ভিস সেন্টার” নামে কিয়স্ক চালু করে সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।
রোহিঙ্গা সংকটে ‘রোডম্যাপের’ দাবি
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গার বিষয়ে ইউনূস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে “রোহিঙ্গাদের ফেরানোর একটি রোডম্যাপ” দিতে হবে।
“আমরা বলছি, ১০ বা ২০ বছর লাগলেও একটা তারিখ দিতে হবে। প্রতিবছর একটি বছর করে কমতে থাকবে। সেটা নিয়েই কাজ করছি।”
তিনি জানান, সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি বিশেষ বৈঠকের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
‘অসাধারণ সুযোগ’ মন্তব্য
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং কাঠামোগত সংস্কারের জন্য এই অন্তর্বর্তী সময়কে “একটি ঐতিহাসিক জানালা” বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
“আমাদের কোনো রাজনৈতিক পক্ষ নেই, কোনো ভোট ব্যাংক নেই। আমরা পক্ষপাতহীনভাবে ব্যবস্থা নিতে পারি—যা কোনো নির্বাচিত সরকার সহজে করতে পারে না,” বলেন ইউনূস।
---