আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় নির্বাচনের সময় জানতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময় প্রকাশ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও বাজেট সহায়তা আসতে শুরু করেছে।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সোমবার আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি মিলিয়ে ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ ছাড়ের অনুমোদন দেয়। ৪৭০ কোটি ডলারের এই ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ বেশ কিছু দিন ধরে আটকে ছিল শর্তপূরণ না হওয়ার কারণে।
সবশেষ ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তিতে ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করে আইএমএফ। ওই তিন কিস্তিতে মোট ২৩১ কোটি ডলার বাংলাদেশের হাতে এসেছিল। চতুর্থ কিস্তি আসার কথা ছিল ডিসেম্বর মাসে।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং রিজার্ভ কমে যাওয়ার সময় নানা শর্তের কারণে কিস্তিগুলো আটকে ছিল।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের একটা সময় প্রকাশ পাওয়ায় আইএমএফসহ সবাই সন্তুষ্ট হয়েছে। আইএমএফ আমাকে প্রশ্ন করেছিল, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না। আমরা বলেছি হবে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এএফডি, এআইআইবি ঋণ অনুমোদন করেছে। সংস্কার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি দেখে সবাই সন্তুষ্ট।”
তিনি আরও জানান, “ক্রয় কমিটির বৈঠকে গম কেনা হয়েছে। গমের দাম কমে যাওয়ায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।”
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে হরমুজ প্রণালী দিয়ে পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “যুদ্ধের মধ্যেও জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে সাশ্রয় হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে যে দাম ছিল, যুদ্ধ বন্ধের পর তা কমে গেছে। রিটেন্ডারের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ ডলার কমে তেল কেনা গেছে। এতে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা এনার্জি মন্ত্রণালয়ের কৃতিত্ব। তবে মরক্কো ও তিউনিশিয়া থেকে আসা সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। সেখানে আমাদের কিছু করার ছিল না।”
খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “চাল ও গমের রিজার্ভ এখনও সন্তোষজনক। তবুও ৫০ হাজার টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো খাদ্য সংকট না হয়।”
বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা ধীরগতির হলেও বাজেট সহায়তা এবং রপ্তানি আয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “রেমিটেন্সও ভালো আসছে। সৌদি আরবে গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে জেনেছি, আমরা আসছি বলেই তারা টাকা পাঠাচ্ছেন। আগে তারা টাকা পাঠাতে স্বস্তি পেতেন না।”
বৈঠকে কানাডিয়ান করপোরেশনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি সার, তিউনিশিয়ার গ্রুপ কেমিক থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি এবং মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রোপস থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এমওপি সার প্রতিটন ৩৪২ ডলারে, টিএসপি সার প্রতিটন ৫৫০ ডলারে এবং ডিএপি সার প্রতিটন ৭১০ ডলারে কেনা হয়েছে।
জুন মাসে ২৫ হাজার টন গ্যাসোলিন (অকটেন) কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি ব্যারেলের প্রিমিয়াম প্রাইস ধরা হয়েছে ৫.৯৩ ডলার এবং রেফারেন্স প্রাইস ৭৩.৬১ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। তেল সরবরাহ করবে ইন্দোনেশিয়ার বুমি সিয়াক পুসাক জাপিন (বিএসপি)।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৩.৫২ ডলারে এক কার্গো এলএনজি কেনা হচ্ছে ভিটল এশিয়া সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে, যা আসবে ২৮ বা ২৯ জুলাই। এতে ব্যয় হবে ৫৬৯ কোটি ২৯ হাজার ৩৬৩ টাকা।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী জ্বালানি কিনতে সাতটি সরবরাহকারীর নাম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব কোম্পানি হলো—পিটিটিটি (থাইল্যান্ড), এনোক (আরব আমিরাত), পেট্রোচায়না, বিএসপি (ইন্দোনেশিয়া), পিটিএলসিএল (মালয়েশিয়া), ইউনিপে (চীন) ও আইওসিএল (ভারত)।
বৈঠকে দুবাইয়ের সিরিয়াল ক্রপ ট্রেডিং থেকে ৫০ হাজার টন গম ২৭৫ ডলারে কিনতে ১৬৮ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।
বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় নির্বাচনের সময় জানতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময় প্রকাশ পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও বাজেট সহায়তা আসতে শুরু করেছে।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সোমবার আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি মিলিয়ে ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ ছাড়ের অনুমোদন দেয়। ৪৭০ কোটি ডলারের এই ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ বেশ কিছু দিন ধরে আটকে ছিল শর্তপূরণ না হওয়ার কারণে।
সবশেষ ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তিতে ১১৫ কোটি ডলার ছাড় করে আইএমএফ। ওই তিন কিস্তিতে মোট ২৩১ কোটি ডলার বাংলাদেশের হাতে এসেছিল। চতুর্থ কিস্তি আসার কথা ছিল ডিসেম্বর মাসে।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং রিজার্ভ কমে যাওয়ার সময় নানা শর্তের কারণে কিস্তিগুলো আটকে ছিল।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের একটা সময় প্রকাশ পাওয়ায় আইএমএফসহ সবাই সন্তুষ্ট হয়েছে। আইএমএফ আমাকে প্রশ্ন করেছিল, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না। আমরা বলেছি হবে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এএফডি, এআইআইবি ঋণ অনুমোদন করেছে। সংস্কার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি দেখে সবাই সন্তুষ্ট।”
তিনি আরও জানান, “ক্রয় কমিটির বৈঠকে গম কেনা হয়েছে। গমের দাম কমে যাওয়ায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।”
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে হরমুজ প্রণালী দিয়ে পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে এখনো কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “যুদ্ধের মধ্যেও জ্বালানি কেনার ক্ষেত্রে সাশ্রয় হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে যে দাম ছিল, যুদ্ধ বন্ধের পর তা কমে গেছে। রিটেন্ডারের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ ডলার কমে তেল কেনা গেছে। এতে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এটা এনার্জি মন্ত্রণালয়ের কৃতিত্ব। তবে মরক্কো ও তিউনিশিয়া থেকে আসা সারের দাম কিছুটা বেড়েছে। সেখানে আমাদের কিছু করার ছিল না।”
খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “চাল ও গমের রিজার্ভ এখনও সন্তোষজনক। তবুও ৫০ হাজার টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো খাদ্য সংকট না হয়।”
বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা ধীরগতির হলেও বাজেট সহায়তা এবং রপ্তানি আয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “রেমিটেন্সও ভালো আসছে। সৌদি আরবে গিয়ে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে জেনেছি, আমরা আসছি বলেই তারা টাকা পাঠাচ্ছেন। আগে তারা টাকা পাঠাতে স্বস্তি পেতেন না।”
বৈঠকে কানাডিয়ান করপোরেশনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি সার, তিউনিশিয়ার গ্রুপ কেমিক থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি এবং মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রোপস থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এমওপি সার প্রতিটন ৩৪২ ডলারে, টিএসপি সার প্রতিটন ৫৫০ ডলারে এবং ডিএপি সার প্রতিটন ৭১০ ডলারে কেনা হয়েছে।
জুন মাসে ২৫ হাজার টন গ্যাসোলিন (অকটেন) কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি ব্যারেলের প্রিমিয়াম প্রাইস ধরা হয়েছে ৫.৯৩ ডলার এবং রেফারেন্স প্রাইস ৭৩.৬১ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ২০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। তেল সরবরাহ করবে ইন্দোনেশিয়ার বুমি সিয়াক পুসাক জাপিন (বিএসপি)।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৩.৫২ ডলারে এক কার্গো এলএনজি কেনা হচ্ছে ভিটল এশিয়া সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে, যা আসবে ২৮ বা ২৯ জুলাই। এতে ব্যয় হবে ৫৬৯ কোটি ২৯ হাজার ৩৬৩ টাকা।
জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী জ্বালানি কিনতে সাতটি সরবরাহকারীর নাম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব কোম্পানি হলো—পিটিটিটি (থাইল্যান্ড), এনোক (আরব আমিরাত), পেট্রোচায়না, বিএসপি (ইন্দোনেশিয়া), পিটিএলসিএল (মালয়েশিয়া), ইউনিপে (চীন) ও আইওসিএল (ভারত)।
বৈঠকে দুবাইয়ের সিরিয়াল ক্রপ ট্রেডিং থেকে ৫০ হাজার টন গম ২৭৫ ডলারে কিনতে ১৬৮ কোটি ৮২ লাখ ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়।