পারিবারিক ব্যবসা শুধু পুঁজি বা শ্রম নয়, এটি প্রজন্মের পর প্রজন্মান্তরে গড়ে ওঠা মূল্যবোধ, অভিজ্ঞতা ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার ফসল। এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। মঙ্গলবার,(০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় পারিবারিক ব্যবসার প্রধান ব্যক্তিরা পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার নানা দিক তুলে ধরেন। তারা বলেন, টেকসই ব্যবসার জন্য শুধু পরিবার নয়, পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত উত্তরাধিকার অপরিহার্য।
যেখানে ‘পারিবারিক মূল্যবোধরে সঙ্গে ভবিষ্যৎ দৃষ্টির মিলন: টেকসই উত্তরাধিকার পরিকল্পনার কৌশল’ শীর্ষক এই সেমিনার আয়োজন করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে এই সেমিনার হয়।
এম এম ইস্পাহানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান ইস্পাহানি বলেন, ‘শেয়ার থাকলেই কেউ নেতৃত্ব পাবেন, এমন ধারণা ভুল। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সঠিক শিক্ষা থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই উত্তরাধিকার পরিকল্পনা তৈরি করা অপরিহার্য।
কেবল বড় ছেলে বা মেয়ে বলে দায়িত্ব দেওয়া ঠিক নয়।’
একই কথা বলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু ছেলে বা মেয়ে বলেই কাউকে সিইও বানানো যাবে না। যিনি সবচেয়ে যোগ্য, তাঁকেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়া ও টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
পারিবারিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে পরিবারের নিজস্ব মূল্যবোধ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। পরিবারে বিশেষ নিয়ম ও মানদ-ও প্রজন্মান্তরে চলে আসে।
সালমান ইস্পাহানি আরও বলেন, ‘প্রথমে একক মালিকানায় ব্যবসা হলেও পরিবারের পরিধি বাড়লে শুধু আত্মীয়স্বজন দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তখন পেশাদার ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে পেশাদারভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’
তপন চৌধুরী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। ব্যবসায় যোগ দেওয়ার পর প্রথমে বাবার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সেই সময় দেখেছেন, কীভাবে প্রতিষ্ঠান চলতে হয়। একবার তাদের পারিবারিক বন্ধু নৈশভোজে বাসায় এসেছিলেন। খাবারের আগে তিনি হঠাৎ বললেন, ‘আপনার ছেলে এত কাজ করছে, কেন তাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বানাচ্ছেন না?’
তপন চৌধুরী বলেন, ‘এটা তার জন্য খুবই বিব্রতকর ছিল। কারণ, আমাদের সংস্কৃতিতে বাবার সামনে এমন প্রস্তাব দেওয়া যায় না। প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায় এ ধরনের দ্বিধা স্বাভাবিক। সে জন্য প্রতিষ্ঠাতা বা চেয়ারম্যানকেই নির্ধারণ করতে হয়, তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে।’
কর্মীরাও পরিবারের মতো হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন তপন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে কাজ করি এবং একে অপরের অবদানের স্বীকৃতি দিই।’
দুই উদ্যোক্তার অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট দেখা যায়, পারিবারিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পরিবারের মূল্যবোধ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত উত্তরাধিকার প্রয়োজন।
শুধু সম্পদ বা শেয়ার থাকা যথেষ্ট নয়; যোগ্য নেতৃত্ব, অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
এমসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান বলেন, ‘পারিবারিক ব্যবসা আমাদের অর্থনীতিতে যুগ যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কর্মসংস্থান, উদ্ভাবন, প্রজন্মান্তরের মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি আগামী দিনে আমাদের মনে রাখতে হবে, উত্তরাধিকার শুধু দায়িত্ব হস্তান্তর নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যাবশ্যক।’
মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পারিবারিক ব্যবসা শুধু পুঁজি বা শ্রম নয়, এটি প্রজন্মের পর প্রজন্মান্তরে গড়ে ওঠা মূল্যবোধ, অভিজ্ঞতা ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার ফসল। এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতৃত্ব নির্বাচন করতে হবে। মঙ্গলবার,(০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় পারিবারিক ব্যবসার প্রধান ব্যক্তিরা পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার নানা দিক তুলে ধরেন। তারা বলেন, টেকসই ব্যবসার জন্য শুধু পরিবার নয়, পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত উত্তরাধিকার অপরিহার্য।
যেখানে ‘পারিবারিক মূল্যবোধরে সঙ্গে ভবিষ্যৎ দৃষ্টির মিলন: টেকসই উত্তরাধিকার পরিকল্পনার কৌশল’ শীর্ষক এই সেমিনার আয়োজন করে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে এই সেমিনার হয়।
এম এম ইস্পাহানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান ইস্পাহানি বলেন, ‘শেয়ার থাকলেই কেউ নেতৃত্ব পাবেন, এমন ধারণা ভুল। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সঠিক শিক্ষা থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই উত্তরাধিকার পরিকল্পনা তৈরি করা অপরিহার্য।
কেবল বড় ছেলে বা মেয়ে বলে দায়িত্ব দেওয়া ঠিক নয়।’
একই কথা বলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু ছেলে বা মেয়ে বলেই কাউকে সিইও বানানো যাবে না। যিনি সবচেয়ে যোগ্য, তাঁকেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়া ও টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।’
পারিবারিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে পরিবারের নিজস্ব মূল্যবোধ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দেওয়া জরুরি। পরিবারে বিশেষ নিয়ম ও মানদ-ও প্রজন্মান্তরে চলে আসে।
সালমান ইস্পাহানি আরও বলেন, ‘প্রথমে একক মালিকানায় ব্যবসা হলেও পরিবারের পরিধি বাড়লে শুধু আত্মীয়স্বজন দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। তখন পেশাদার ব্যবস্থাপনা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান বহু বছর ধরে পেশাদারভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’
তপন চৌধুরী নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। ব্যবসায় যোগ দেওয়ার পর প্রথমে বাবার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। সেই সময় দেখেছেন, কীভাবে প্রতিষ্ঠান চলতে হয়। একবার তাদের পারিবারিক বন্ধু নৈশভোজে বাসায় এসেছিলেন। খাবারের আগে তিনি হঠাৎ বললেন, ‘আপনার ছেলে এত কাজ করছে, কেন তাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বানাচ্ছেন না?’
তপন চৌধুরী বলেন, ‘এটা তার জন্য খুবই বিব্রতকর ছিল। কারণ, আমাদের সংস্কৃতিতে বাবার সামনে এমন প্রস্তাব দেওয়া যায় না। প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায় এ ধরনের দ্বিধা স্বাভাবিক। সে জন্য প্রতিষ্ঠাতা বা চেয়ারম্যানকেই নির্ধারণ করতে হয়, তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে।’
কর্মীরাও পরিবারের মতো হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন তপন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা দল হিসেবে কাজ করি এবং একে অপরের অবদানের স্বীকৃতি দিই।’
দুই উদ্যোক্তার অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট দেখা যায়, পারিবারিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পরিবারের মূল্যবোধ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পিত উত্তরাধিকার প্রয়োজন।
শুধু সম্পদ বা শেয়ার থাকা যথেষ্ট নয়; যোগ্য নেতৃত্ব, অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
এমসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান বলেন, ‘পারিবারিক ব্যবসা আমাদের অর্থনীতিতে যুগ যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কর্মসংস্থান, উদ্ভাবন, প্রজন্মান্তরের মূল্যবোধ ও ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি আগামী দিনে আমাদের মনে রাখতে হবে, উত্তরাধিকার শুধু দায়িত্ব হস্তান্তর নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যাবশ্যক।’