শরীয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক মার্জারের উদ্যোগের বিষয়ে আরও দুই ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উভয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বৈঠকে তাদের বর্তমান অবস্থা অবহিত করেন। সকালের বৈঠকে ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে বলে তুলে ধরেন। আর বিকালে ব্যাংক মার্জারের এ পরিকল্পনায় যুক্ত হতে না চাওয়া এক্সিম ব্যাংক পিএলসির কাছ থেকে ‘বিশদ পরিকল্পনা’ চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈঠক শেষে ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ফরিদ উদ্দীন বলেন, বিদেশি অডিট প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষায় যেসব তথ্য উঠে এসেছে বর্তমানে তার চেয়ে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার কোনো কোনো জায়গায় আরও অবনতি হয়েছে।
“আর্থিক অবস্থার বিষয়ে গভর্নর জানতে চেয়েছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে সহমত প্রকাশ করি কিনা। এটাও আমরা বলতে চেষ্টা করেছি যে, নিরীক্ষা প্রতিবেদন এক বছর আগে করা হয়েছে। তাই যে তথ্য দেওয়া রয়েছে এটা এক বছর আগের ফিগার (তথ্য)।”
আগের চেয়ে খুব বেশি উন্নতি না হওয়ার কথা বৈঠকে তুলে ধরার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, পর্ষদ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ব্যাংকটি থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৯২ শতাংশ টাকা তাদের হাতে চলে গেছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেওয়া এসব টাকার বিপরীতে কোনো রকমের আমানত নেই।
”এস আলম গ্রুপ কম করে হলেওতো নিয়ে গেছে ২৬ হাজার কোটি টাকার কম নয়। যাদের কাছে পাওনা তাদেরতো খুঁজেও পাওয়া যায় না।”
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকটির পর্ষদ এস আলমের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়। এরপর ইউনিয়নসহ দুর্বল আরও কয়েকটি ব্যাংকে বিদেশি অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিরীক্ষা করা হয়। তাতে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার চিত্র উঠে এসেছে।
পরে দুর্বল হয়ে পড়া পাঁচটি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার বিবেচনায় একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকও রয়েছে।
একীভূত করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে এদিন এ সভা হয়, যাতে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন গভর্নর।
ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকটিতে ২৬ হাজার কোটি টাকার আমানত রয়েছে। তবে সব সময় তাদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।
পরে এদিন বিকালে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের সময় ব্যাংক খাতের আলোচিত ব্যক্তি নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণ থেকে ১৬ বছর পর মুক্ত হওয়া এক্সিমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন গভর্নর।
বৈঠকের বিষয়ে ব্যাংকটির নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) একটি প্ল্যান চেয়েছে। আমরা একটি প্ল্যান দিয়েছিলাম দুই বছরের। সেটি সংশোধন করে পুনরায় জমা দিতে বলেছেন গভর্নর।’’
বিকাল ৩টা থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “আমরা কীভাবে আগাব, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব- এর একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সুনির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা চেয়েছে। বলেছে, পরিকল্পনা সংশোধন করে নিয়ে আসতে। পরবর্তী বৈঠকে আমরা এটি নিয়ে হাজির হব।”
সংকটাপন্ন পাঁচ শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূতকরণে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল ধারাবাহিক এ বৈঠক করছে। মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়, যেটির পর্ষদও এস আলমের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ব্যাংকটির নতুন পর্ষদ মার্জারে যুক্ত হতে তাদের সম্মতি দিয়ে আসার কথা বলেছে।
বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শরীয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক মার্জারের উদ্যোগের বিষয়ে আরও দুই ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা কথা বলেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উভয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বৈঠকে তাদের বর্তমান অবস্থা অবহিত করেন। সকালের বৈঠকে ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে বলে তুলে ধরেন। আর বিকালে ব্যাংক মার্জারের এ পরিকল্পনায় যুক্ত হতে না চাওয়া এক্সিম ব্যাংক পিএলসির কাছ থেকে ‘বিশদ পরিকল্পনা’ চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈঠক শেষে ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ফরিদ উদ্দীন বলেন, বিদেশি অডিট প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষায় যেসব তথ্য উঠে এসেছে বর্তমানে তার চেয়ে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার কোনো কোনো জায়গায় আরও অবনতি হয়েছে।
“আর্থিক অবস্থার বিষয়ে গভর্নর জানতে চেয়েছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে সহমত প্রকাশ করি কিনা। এটাও আমরা বলতে চেষ্টা করেছি যে, নিরীক্ষা প্রতিবেদন এক বছর আগে করা হয়েছে। তাই যে তথ্য দেওয়া রয়েছে এটা এক বছর আগের ফিগার (তথ্য)।”
আগের চেয়ে খুব বেশি উন্নতি না হওয়ার কথা বৈঠকে তুলে ধরার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, পর্ষদ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ব্যাংকটি থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৯২ শতাংশ টাকা তাদের হাতে চলে গেছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেওয়া এসব টাকার বিপরীতে কোনো রকমের আমানত নেই।
”এস আলম গ্রুপ কম করে হলেওতো নিয়ে গেছে ২৬ হাজার কোটি টাকার কম নয়। যাদের কাছে পাওনা তাদেরতো খুঁজেও পাওয়া যায় না।”
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকটির পর্ষদ এস আলমের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়। এরপর ইউনিয়নসহ দুর্বল আরও কয়েকটি ব্যাংকে বিদেশি অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিরীক্ষা করা হয়। তাতে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার চিত্র উঠে এসেছে।
পরে দুর্বল হয়ে পড়া পাঁচটি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার বিবেচনায় একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকও রয়েছে।
একীভূত করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে এদিন এ সভা হয়, যাতে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন গভর্নর।
ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকটিতে ২৬ হাজার কোটি টাকার আমানত রয়েছে। তবে সব সময় তাদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।
পরে এদিন বিকালে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকারের সময় ব্যাংক খাতের আলোচিত ব্যক্তি নজরুল ইসলাম মজুমদারের নিয়ন্ত্রণ থেকে ১৬ বছর পর মুক্ত হওয়া এক্সিমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন গভর্নর।
বৈঠকের বিষয়ে ব্যাংকটির নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) একটি প্ল্যান চেয়েছে। আমরা একটি প্ল্যান দিয়েছিলাম দুই বছরের। সেটি সংশোধন করে পুনরায় জমা দিতে বলেছেন গভর্নর।’’
বিকাল ৩টা থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “আমরা কীভাবে আগাব, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াব- এর একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সুনির্দিষ্টভাবে পরিকল্পনা চেয়েছে। বলেছে, পরিকল্পনা সংশোধন করে নিয়ে আসতে। পরবর্তী বৈঠকে আমরা এটি নিয়ে হাজির হব।”
সংকটাপন্ন পাঁচ শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূতকরণে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গভর্নরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল ধারাবাহিক এ বৈঠক করছে। মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়, যেটির পর্ষদও এস আলমের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ব্যাংকটির নতুন পর্ষদ মার্জারে যুক্ত হতে তাদের সম্মতি দিয়ে আসার কথা বলেছে।