বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সবজির দামও বাড়ছে লাগাতার। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।
সীমিত আয়ের সঙ্গে বাজারের খরচ মেলানো এখন তাদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব ও বাজার মনিটরিং দুর্বল হওয়ায় প্রতিদিনই তারা নতুন করে চাপের মুখে পড়ছেন।
অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকার ওপরে
আমদানি বেশি হলেও পেঁয়াজের দামে সেভাবে কমেনি।
অধিকাংশ মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে, ইলিশের দাম বেড়েছে
শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। মাস শেষে যা পাই তাতে ভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল মিটিয়েই টানাটানি চলে।
এখন বাজারে গেলে দেখি চাল, ডাল, তেল সবকিছুর দামই হু-হু করে বাড়ছে। আগে যেখানে এক হাজার টাকায় সপ্তাহের বাজার হতো, এখন দুই হাজার টাকাতেও কুলায় না। সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে।’
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। অবশ্য গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দেড় টাকা কমেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৭২-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইলের দাম ৭৫-৯৫ টাকা। এছাড়া ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, এখন এক কেজি প্যাকেটজাত আটা কোম্পানিভেদে ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা। খোলা আটার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন কোম্পানির ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০-৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। ভালো মানের মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন দাম উঠেছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। প্রতি প্যাকেট চায়ের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া দামে আটকে থাকা সবজির বাজারে খুব একটা হেরফের নেই। প্রতি কেজি বেগুন ১০০-১৪০, করলা ৯০-১০০, কচুর লতি ৮০-১০০, ঢেঁড়স ৭০-৮০, কচুমুখি ৫০-৬০, পেঁপে ৩০-৪০ এবং চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রায় এক মাস ধরে কাঁচামরিচের দাম বাড়তি। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকা কেজি।
আমদানি বেশি হলেও পেঁয়াজের দামে সেভাবে কমেনি। এখনও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। যদিও কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। যেখানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে রসুনের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি আগে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৫০-১৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, ‘আমরা তো পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনে আনছি। যেটা বেশি দামে কিনছি, সেটা তো কম দামে বিক্রি করা সম্ভব না। অনেক সময় ক্রেতারা আমাদের ওপর দোষ চাপায়, কিন্তু আসল চাপটা আমরা নিজেরাই সামলাই। দাম বাড়লে ক্রেতা যেমন কমে যায়, তেমনি আমাদেরও আয় কমে যায়। বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আমাদেরও কষ্ট লাঘব হবে না।’
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে। সোনালি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহেও একই দামে এগুলো বিক্রি হয়েছে। মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, ‘ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ডজনে ৫ টাকা কমেছে। তবে এক হালি ডিম কিনতে ক্রেতাদের ৫০ টাকাই গুনতে হচ্ছে। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে দাম আগের মতোই রয়েছে।’
ইলিশের মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলছে, বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশও মিলছে। অথচ দামে লাগামছাড়া ঘোড়া ছুটছে উল্টোপথে। সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা।
বাজারে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। ৭০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ মিলছে এক হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। এছাড়া প্রতি কেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়।
প্রতি কেজি রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকায়, শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকায়, পাবদা মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এছাড়া পাঙাশ, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকায়। ছোট মাছের মধ্যে কাজলি, ট্যাংরা, চিংড়ি ও বাটা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১২০০ টাকা প্রতি কেজি।
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সবজির দামও বাড়ছে লাগাতার। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।
সীমিত আয়ের সঙ্গে বাজারের খরচ মেলানো এখন তাদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব ও বাজার মনিটরিং দুর্বল হওয়ায় প্রতিদিনই তারা নতুন করে চাপের মুখে পড়ছেন।
অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকার ওপরে
আমদানি বেশি হলেও পেঁয়াজের দামে সেভাবে কমেনি।
অধিকাংশ মাছ বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে, ইলিশের দাম বেড়েছে
শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। মাস শেষে যা পাই তাতে ভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল মিটিয়েই টানাটানি চলে।
এখন বাজারে গেলে দেখি চাল, ডাল, তেল সবকিছুর দামই হু-হু করে বাড়ছে। আগে যেখানে এক হাজার টাকায় সপ্তাহের বাজার হতো, এখন দুই হাজার টাকাতেও কুলায় না। সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে।’
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। অবশ্য গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দেড় টাকা কমেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৭২-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইলের দাম ৭৫-৯৫ টাকা। এছাড়া ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, এখন এক কেজি প্যাকেটজাত আটা কোম্পানিভেদে ৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা। খোলা আটার দাম ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। একইভাবে বিভিন্ন কোম্পানির ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০-৭৫ টাকা। খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। ভালো মানের মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন দাম উঠেছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। প্রতি প্যাকেট চায়ের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া দামে আটকে থাকা সবজির বাজারে খুব একটা হেরফের নেই। প্রতি কেজি বেগুন ১০০-১৪০, করলা ৯০-১০০, কচুর লতি ৮০-১০০, ঢেঁড়স ৭০-৮০, কচুমুখি ৫০-৬০, পেঁপে ৩০-৪০ এবং চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রায় এক মাস ধরে কাঁচামরিচের দাম বাড়তি। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকা কেজি।
আমদানি বেশি হলেও পেঁয়াজের দামে সেভাবে কমেনি। এখনও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। যদিও কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম রাখা হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। যেখানে দেশি পেঁয়াজ ৬৫-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে রসুনের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি আগে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৫০-১৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, ‘আমরা তো পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে কিনে আনছি। যেটা বেশি দামে কিনছি, সেটা তো কম দামে বিক্রি করা সম্ভব না। অনেক সময় ক্রেতারা আমাদের ওপর দোষ চাপায়, কিন্তু আসল চাপটা আমরা নিজেরাই সামলাই। দাম বাড়লে ক্রেতা যেমন কমে যায়, তেমনি আমাদেরও আয় কমে যায়। বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত আমাদেরও কষ্ট লাঘব হবে না।’
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে। সোনালি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহেও একই দামে এগুলো বিক্রি হয়েছে। মুরগির ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, ‘ডিমের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ডজনে ৫ টাকা কমেছে। তবে এক হালি ডিম কিনতে ক্রেতাদের ৫০ টাকাই গুনতে হচ্ছে। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে দাম আগের মতোই রয়েছে।’
ইলিশের মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলছে, বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশও মিলছে। অথচ দামে লাগামছাড়া ঘোড়া ছুটছে উল্টোপথে। সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০০-৩০০ টাকা।
বাজারে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। ৭০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ মিলছে এক হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। এছাড়া প্রতি কেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়।
প্রতি কেজি রুই ও কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকায়, শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকায়, পাবদা মিলছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এছাড়া পাঙাশ, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকায়। ছোট মাছের মধ্যে কাজলি, ট্যাংরা, চিংড়ি ও বাটা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১২০০ টাকা প্রতি কেজি।