ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দেশের অর্থনীতির গতি চার মাস ধরেই উত্থান-পতনের মধ্যে রয়েছে। এক মাসে বাড়ে তো পরের মাসে আবার কমে যায়। যেমন গত জুলাইয়ে অর্থনীতির গতি বেড়েছিল, কিন্তু আগস্টে আবার তা কিছুটা কমেছে। যদিও অর্থনীতি সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে।
পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্সের (পিএমআই) সার্বিক মান গত জানুয়ারিতে ছিল ৬৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট। পরের তিন মাসে পিএমআই মান ধারাবাহিকভাবে কমেছে। মে মাসে তা বেড়ে ৫৮ দশমিক ৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়। জুনে আবার কমে। জুলাইয়ে পিএমআই মান বেড়ে হয় ৬১ দশমিক ৫ পয়েন্ট। সর্বশেষ আগস্টে ৩ দশমিক ২ পয়েন্ট কমে পিএমআই মান ৫৮ দশমিক ৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। পিএমআইয়ের সার্বিক মান কমে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, কৃষি ও নির্মাণ খাতের সূচক সংকোচনের ধারায় চলে গেছে। উৎপাদন ও সেবা খাতের সূচকের সম্প্রসারণ ধারায় থাকলেও উভয় খাতেই গতি আগস্টে কমেছে। কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা- অর্থনীতির এই অন্যতম প্রধান চার খাতের ৪০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয়, পণ্যের ক্রয়াদেশ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূলত পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হয়। সূচকের মান ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং ৫০-এর নিচে হলে সংকোচন বোঝায়। আর মান ৫০ থাকলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট খাতে ওই মাসে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের শতবর্ষী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ যৌথভাবে পিএমআই প্রণয়ন করছে। সোমবার,(০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রোববার দুপুরে আগস্টের পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচকটি প্রণয়নে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কার্যালয় (এফসিডিও) ও সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড মেটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম)।
দেখা যাচ্ছে, কৃষি ব্যবসা খাতে ১০ মাস সম্প্রসারণের পর সংকোচনে ফিরে গেছে। গত জুলাইয়ে কৃষি ব্যবসার সূচকের মান ছিল ৫৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট। আগস্টে তা কমে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৭।
উৎপাদন খাত ১২ মাস ধরে সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে, তবে গতি কমেছে। এই খাতে নতুন ক্রয়াদেশ, রপ্তানি, কারখানার কাঁচামাল ক্রয়, উৎপাদন ও পণ্য সরবরাহকারীর সূচকগুলো সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে। তবে কর্মসংস্থান সূচক তিন মাস ধরে সংকোচন ধারায় আছে। গত জুলাইয়ে উৎপাদন খাতের সূচকের মান ছিল ৬১ দশমিক ৯ পয়েন্ট। গত মাসে তা কমে হয়েছে ৬০ দশমিক ৬।
নির্মাণ খাত জুলাইয়ে সম্প্রসারণের ধারায় ফিরলেও আগস্টে আবার সংকোচনে চলে গেছে। জুলাইয়ে নির্মাণ খাতের সূচকের মান ছিল ৫২ দশমিক ৫ পয়েন্ট, যা গত মাসে কমে ৪৯ পয়েন্ট হয়েছে। নির্মাণ খাতে নতুন ব্যবসা, নির্মাণ কার্যক্রম ও ইনপুট খরচের সূচকে সম্প্রসারণ হয়েছে। তবে ক্রয়াদেশের ব্যাকলগ সূচক সংকোচনের ধারায় রয়েছে।
কর্মসংস্থান সূচক টানা চার মাস ধরে সংকোচনের ধারায় রয়েছে।
সেবা খাত ১১ মাস ধরে সম্প্রসারণ চলছে। তবে গতি কম। এই খাতে নতুন ব্যবসা, ব্যবসা কার্যক্রম, কর্মসংস্থান এবং ইনপুট খরচের সূচক সম্প্রসারণে রয়েছে। জুলাইয়ে নির্মাণ খাতের সূচকের মান ছিল ৬৪ দশমিক ৬ পয়েন্ট। গত মাসে তা কমে হয়েছে ৬১ দশমিক ৩ পয়েন্ট।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘টানা ১১ মাস ধরে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে। তবে গতিমন্দা আছে। দীর্ঘ সময় ধরে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে কৃষি ও নির্মাণ খাত সংকোচনের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে উৎপাদন ও সেবা খাত সীমিত প্রবৃদ্ধি বজায় রাখলেও গত আগস্টে রপ্তানি আয়ের পতনের কারণে গতি কমছে।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশের অর্থনীতির গতি চার মাস ধরেই উত্থান-পতনের মধ্যে রয়েছে। এক মাসে বাড়ে তো পরের মাসে আবার কমে যায়। যেমন গত জুলাইয়ে অর্থনীতির গতি বেড়েছিল, কিন্তু আগস্টে আবার তা কিছুটা কমেছে। যদিও অর্থনীতি সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে।
পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্সের (পিএমআই) সার্বিক মান গত জানুয়ারিতে ছিল ৬৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট। পরের তিন মাসে পিএমআই মান ধারাবাহিকভাবে কমেছে। মে মাসে তা বেড়ে ৫৮ দশমিক ৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়। জুনে আবার কমে। জুলাইয়ে পিএমআই মান বেড়ে হয় ৬১ দশমিক ৫ পয়েন্ট। সর্বশেষ আগস্টে ৩ দশমিক ২ পয়েন্ট কমে পিএমআই মান ৫৮ দশমিক ৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। পিএমআইয়ের সার্বিক মান কমে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, কৃষি ও নির্মাণ খাতের সূচক সংকোচনের ধারায় চলে গেছে। উৎপাদন ও সেবা খাতের সূচকের সম্প্রসারণ ধারায় থাকলেও উভয় খাতেই গতি আগস্টে কমেছে। কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা- অর্থনীতির এই অন্যতম প্রধান চার খাতের ৪০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয়, পণ্যের ক্রয়াদেশ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূলত পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হয়। সূচকের মান ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং ৫০-এর নিচে হলে সংকোচন বোঝায়। আর মান ৫০ থাকলে বুঝতে হবে সংশ্লিষ্ট খাতে ওই মাসে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের শতবর্ষী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ যৌথভাবে পিএমআই প্রণয়ন করছে। সোমবার,(০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রোববার দুপুরে আগস্টের পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচকটি প্রণয়নে সহযোগিতা করছে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কার্যালয় (এফসিডিও) ও সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড মেটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম)।
দেখা যাচ্ছে, কৃষি ব্যবসা খাতে ১০ মাস সম্প্রসারণের পর সংকোচনে ফিরে গেছে। গত জুলাইয়ে কৃষি ব্যবসার সূচকের মান ছিল ৫৩ দশমিক ৮ পয়েন্ট। আগস্টে তা কমে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৭।
উৎপাদন খাত ১২ মাস ধরে সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে, তবে গতি কমেছে। এই খাতে নতুন ক্রয়াদেশ, রপ্তানি, কারখানার কাঁচামাল ক্রয়, উৎপাদন ও পণ্য সরবরাহকারীর সূচকগুলো সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে। তবে কর্মসংস্থান সূচক তিন মাস ধরে সংকোচন ধারায় আছে। গত জুলাইয়ে উৎপাদন খাতের সূচকের মান ছিল ৬১ দশমিক ৯ পয়েন্ট। গত মাসে তা কমে হয়েছে ৬০ দশমিক ৬।
নির্মাণ খাত জুলাইয়ে সম্প্রসারণের ধারায় ফিরলেও আগস্টে আবার সংকোচনে চলে গেছে। জুলাইয়ে নির্মাণ খাতের সূচকের মান ছিল ৫২ দশমিক ৫ পয়েন্ট, যা গত মাসে কমে ৪৯ পয়েন্ট হয়েছে। নির্মাণ খাতে নতুন ব্যবসা, নির্মাণ কার্যক্রম ও ইনপুট খরচের সূচকে সম্প্রসারণ হয়েছে। তবে ক্রয়াদেশের ব্যাকলগ সূচক সংকোচনের ধারায় রয়েছে।
কর্মসংস্থান সূচক টানা চার মাস ধরে সংকোচনের ধারায় রয়েছে।
সেবা খাত ১১ মাস ধরে সম্প্রসারণ চলছে। তবে গতি কম। এই খাতে নতুন ব্যবসা, ব্যবসা কার্যক্রম, কর্মসংস্থান এবং ইনপুট খরচের সূচক সম্প্রসারণে রয়েছে। জুলাইয়ে নির্মাণ খাতের সূচকের মান ছিল ৬৪ দশমিক ৬ পয়েন্ট। গত মাসে তা কমে হয়েছে ৬১ দশমিক ৩ পয়েন্ট।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘টানা ১১ মাস ধরে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে। তবে গতিমন্দা আছে। দীর্ঘ সময় ধরে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে কৃষি ও নির্মাণ খাত সংকোচনের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে উৎপাদন ও সেবা খাত সীমিত প্রবৃদ্ধি বজায় রাখলেও গত আগস্টে রপ্তানি আয়ের পতনের কারণে গতি কমছে।’