alt

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

অর্র্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

নিত্যপণ্যের বাজারে দামের আগুন যেন থামছেই না। পরপর কয়েক সপ্তাহ সবজির বাজারে অস্থিরতার সঙ্গে যোগ হয়েছে মুরগি ও চালের বাড়তি দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে শুক্রবার, (১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে ক্রেতাদের মুখে শোনা গেছে এক ধরনের অসহায়ত্বের সুর। আলু ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। শুধু সবজিই নয়; মাছ, শাক, ডাল, আটা, ময়দার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও গত দুই সপ্তাহে একাধিকবার বেড়েছে যা সাধারণ ক্রেতাদের হাঁসফাঁস খাওয়ার মতো অবস্থায় ফেলেছে।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি

স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে মাছ-মাংস

বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে

গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে সবজির দাম অনেক বেশি। বাজারে ৮০-১০০ টাকার নিচে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা আধা কেজি করে সবজি কিনছেন। ফলে বিক্রেতারা বলছেন, তাদের বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- শুধু সবজিই নয়, নিত্যপণ্যের বাজারে আলু ছাড়া অনেক পণ্যের দামই এখন চড়া। বাজারে আলু ও পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া কষ্টকর। নতুন গোলাকৃতির বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা, কচুর লতি বাজারভেদে দাম ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজি ধুন্দল কিনতে হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। ঝিঙা, পটোল, ঢেঁড়সও ৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারে এখনও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে আলুর দাম। এ সবজিটি ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারগুলোতে। এছাড়া বাজারে কম দামের সবজির মধ্যে রয়েছে শুধু পেঁপে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাকের দামও বেশি এখন বাজারে। লাল শাক, কলমি বা হেলেঞ্চা শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, পুঁইশাক কিনতে চাইলে প্রতি আঁটিতে ৩০-৪০ টাকা খরচ পড়ছে ভোক্তাদের।

বাড়তি দামের প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে বাজারে সবজি আসার আগ পর্যন্ত এমন বাড়তি দামই থাকবে। বর্তমানে সবজির সরবরাহ খুবই কম, সরবরাহ বাড়তে শুরু করলে সবজির দাম কমে আসবে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়, বাজারে সরবরাহ কম। ফলে সবজির দাম বেড়ে গেছে।

বাজারে চালের দাম এখনও বাড়তি। অবশ্য গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দুই টাকা কমেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চালের দাম এখন ৭৫-৯৫ টাকা। ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা। তবে বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম এলাকাভেদে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির ডিম (লাল) যেখানে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও কিছু খুচরা দোকানে এখনও এক হালি ডিম ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে মাছের দামও ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল-ডাল, শাক-সবজির দাম আগেই বাড়তি, তার ওপর সব ধরনের মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। ভরা মৌসুমেও ইলিশের সরবরাহ কম, দাম তাই আকাশচুম্বী। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কাঁচাবাজার আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে সামুদ্রিক ও খাল-নদীর বেশ কয়েকটি মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। সুপারশপগুলোতেও চড়া দামে মাছ বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, শুক্রবার বাজারে কোরাল বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকায়, আইড় ৬০০-৭৫০ টাকায়। চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) আকারভেদে ৭৫০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ছোট চিংড়ির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা।

এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০-৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ২৫০-২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে দুই-আড়াই কেজি ওজনের চাষের রুই প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

ইলিশের মৌসুম হলেও বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়। অল্প যে পরিমাণ আসছে, দাম এত বেশি যে সাধারণ ভোক্তার পক্ষে কেনা প্রায় অসম্ভব। খুচরা বাজারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০-২৫০০ টাকায়। ৫০০-৭০০ গ্রাম ইলিশ মিলছে ১৫০০ টাকায়, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকায় এবং বড় ইলিশ (২-২.৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩৫০০ টাকায়।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারের সব পণ্যের দাম একসঙ্গে বাড়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’ অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তাদের খুচরা দামে প্রভাব ফেলছে।’

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

ছবি

অর্থ বিভাগের পরিপত্র: ৯ মাসে ৬০ শতাংশ খরচ করতে না পারলে অর্থছাড় বন্ধ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে মিতসুবিশি’র নতুন এক্সপ্যান্ডার ব্ল্যাক সিরিজ

ছবি

বেসিসের নতুন প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান

ছবি

দারাজ বাংলাদেশের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯.৯ অ্যানিভার্সারি মেগা সেল

ছবি

শাওমি বাজারে নিয়ে এলো রেডমি প্যাড ২

ছবি

নভেম্বরের মধ্যেই একীভূত হবে পাঁচ ব্যাংক

ছবি

আইএমএফ-এর এমডি’র সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও কনফারেন্স ১৬ সেপ্টেম্বর

ছবি

স্যালভো কেমিক্যালের শেয়ার ইস্যুর প্রস্তাব ফের বাতিল করলো বিএসইসি

ছবি

সর্ববৃহৎ-অত্যাধুনিক ওয়াটার প্রোডাকশন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করলো আকিজ ভেঞ্চার

ছবি

বহুজাতিক কোম্পানির অর্থপাচার ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারি, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ছবি

পুনঃঅর্থায়ন তহবিল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকের চুক্তি সই

ছবি

বিভিন্ন ধরনের বন্ডে সংশোধনী আনতে যাচ্ছে বিএসইসি

ছবি

শেয়ারে কারসাজি, ছয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা, একজন ৫ বছর নিষিদ্ধ শেয়ারবাজারে

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ করতে জাপান আগ্রহী: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেবে এনবিআর: চেয়ারম্যান

ছবি

আটাব নির্বাচন: প্যানেল প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন প্রশাসক

ছবি

‘অনলাইন রিটার্নের সঙ্গে ব্যাংক হিসাবের সংযোগে ভয়ের কিছু নেই’

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে টেকনো মেগাবুক টি১ ১৫.৬

ছবি

শেয়ারবাজারে ৯ দিন পর হাজার কোটির নিচে লেনদেন

ছবি

ব্যাংক গ্যারান্টি দিলে বন্ড সুবিধা পাবেন আংশিক রপ্তানিকারকেরা

ছবি

ঢাকায় আসছেন মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিদল

ছবি

শেখ হাসিনার পূবালী ব্যাংকের লকার জব্দ করেছে এনবিআর

ছবি

স্বর্ণের দামে আবার নতুন রেকর্ড, ভরি ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৭ টাকা

ছবি

উত্তরা ব্যাংকে নতুন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক

ছবি

সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ গাড়ি কেনা হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

নতুন দুই মডেলের ওয়ালটন ব্র্যান্ডের তাকিওন ই-বাইক এখন বাজারে

ছবি

বিতর্কিত ভিডিওর জেরে চাকরি গেল বিএফআইইউ প্রধানের

ছবি

পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কমিটি

ছবি

নারীর ঘরের কাজ ও সেবাযত্নের আর্থিক মূল্য বছরে ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা

ছবি

এইচএস কোড ভুল থাকলেও মালামাল খালাসে জটিলতা কাটছে

ছবি

শেয়ারবাজারে ঢালাও পতন

tab

news » business

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

অর্র্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিত্যপণ্যের বাজারে দামের আগুন যেন থামছেই না। পরপর কয়েক সপ্তাহ সবজির বাজারে অস্থিরতার সঙ্গে যোগ হয়েছে মুরগি ও চালের বাড়তি দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে শুক্রবার, (১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে ক্রেতাদের মুখে শোনা গেছে এক ধরনের অসহায়ত্বের সুর। আলু ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। শুধু সবজিই নয়; মাছ, শাক, ডাল, আটা, ময়দার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও গত দুই সপ্তাহে একাধিকবার বেড়েছে যা সাধারণ ক্রেতাদের হাঁসফাঁস খাওয়ার মতো অবস্থায় ফেলেছে।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি

স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে মাছ-মাংস

বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে

গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে সবজির দাম অনেক বেশি। বাজারে ৮০-১০০ টাকার নিচে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা আধা কেজি করে সবজি কিনছেন। ফলে বিক্রেতারা বলছেন, তাদের বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- শুধু সবজিই নয়, নিত্যপণ্যের বাজারে আলু ছাড়া অনেক পণ্যের দামই এখন চড়া। বাজারে আলু ও পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া কষ্টকর। নতুন গোলাকৃতির বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা, কচুর লতি বাজারভেদে দাম ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজি ধুন্দল কিনতে হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। ঝিঙা, পটোল, ঢেঁড়সও ৮০ টাকার আশপাশে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারে এখনও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে আলুর দাম। এ সবজিটি ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঢাকার বাজারগুলোতে। এছাড়া বাজারে কম দামের সবজির মধ্যে রয়েছে শুধু পেঁপে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাকের দামও বেশি এখন বাজারে। লাল শাক, কলমি বা হেলেঞ্চা শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, পুঁইশাক কিনতে চাইলে প্রতি আঁটিতে ৩০-৪০ টাকা খরচ পড়ছে ভোক্তাদের।

বাড়তি দামের প্রসঙ্গে সবজি বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। নতুন করে বাজারে সবজি আসার আগ পর্যন্ত এমন বাড়তি দামই থাকবে। বর্তমানে সবজির সরবরাহ খুবই কম, সরবরাহ বাড়তে শুরু করলে সবজির দাম কমে আসবে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়, বাজারে সরবরাহ কম। ফলে সবজির দাম বেড়ে গেছে।

বাজারে চালের দাম এখনও বাড়তি। অবশ্য গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দুই টাকা কমেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চালের দাম এখন ৭৫-৯৫ টাকা। ব্রি-২৮ চাল ৬২ টাকা ও মোটা ধরনের স্বর্ণা চাল ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা। তবে বাজারে প্রতি ডজন ডিমের দাম এলাকাভেদে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির ডিম (লাল) যেখানে ১৫০ টাকায় বিক্রি হতো, তা এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যদিও কিছু খুচরা দোকানে এখনও এক হালি ডিম ৫০ টাকা রাখা হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে মাছের দামও ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল-ডাল, শাক-সবজির দাম আগেই বাড়তি, তার ওপর সব ধরনের মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। ভরা মৌসুমেও ইলিশের সরবরাহ কম, দাম তাই আকাশচুম্বী। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কাঁচাবাজার আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে সামুদ্রিক ও খাল-নদীর বেশ কয়েকটি মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। সুপারশপগুলোতেও চড়া দামে মাছ বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যে জানা গেছে, শুক্রবার বাজারে কোরাল বিক্রি হয়েছে ৮০০-৯০০ টাকায়, আইড় ৬০০-৭৫০ টাকায়। চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) আকারভেদে ৭৫০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ছোট চিংড়ির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০০-১২০০ টাকা।

এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০-৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ২৫০-২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে দুই-আড়াই কেজি ওজনের চাষের রুই প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

ইলিশের মৌসুম হলেও বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়। অল্প যে পরিমাণ আসছে, দাম এত বেশি যে সাধারণ ভোক্তার পক্ষে কেনা প্রায় অসম্ভব। খুচরা বাজারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০-২৫০০ টাকায়। ৫০০-৭০০ গ্রাম ইলিশ মিলছে ১৫০০ টাকায়, এক কেজির কিছু কম ওজনের ইলিশ ১৮০০-২০০০ টাকায় এবং বড় ইলিশ (২-২.৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৩০০০-৩৫০০ টাকায়।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০-৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারের সব পণ্যের দাম একসঙ্গে বাড়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।’ অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় তাদের খুচরা দামে প্রভাব ফেলছে।’

back to top