alt

তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা: বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

বাংলাদেশে তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকায় গত বছর অন্তত ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে, এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১৩৩ কোটি থেকে ১৭৮ কোটি ডলার বা অন্তত ২১ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির শূন্য দশমিক ৩ থেকে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘অ্যান আনসাসটেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশের এ আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার ইফফাত মাহমুদ এবং সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেক এ. রাজা। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জাঁ পেসমে, সাউথ এশিয়া হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্র্যাকটিস ম্যানেজার ড. ফেং ঝাও।

১৯৭৬-২০২৩ সালের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ এবং ২০২৪ সালে ১৬ হাজার মানুষকে নিয়ে করা দুই দফা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে অনুভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অবসাদসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিষন্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বাড়ছে।

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর এ সময়ে ঢাকায় বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, ঢাকার তাপমাত্রা জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এখন আর কোনো তাত্ত্বিক বিষয় নয়। এটি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধি একটি বৈশ্বিক ঘটনা হলেও এর প্রভাব বাংলাদেশে অনেক বেশি তীব্র, যা আমাদের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। কেবল গবেষণা প্রতিবেদনে সীমাবদ্ধ না থেকে সুপারিশগুলোকে সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনায় রূপ দিতে হবে। প্রতিটি সংস্থাকে নিজ নিজ ভূমিকা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে এবং জাতীয় পর্যায়ের অংশীদারদের দায়িত্ব নিতে হবে যাতে সুপারিশগুলো কার্যকর পদক্ষেপে পরিণত হয়।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে গেলে সেটা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যারা জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের জন্য দায়ী, ক্ষতিপূরণ তাদের কাছ থেকেই আনতে হবে।’

উষ্ণায়ন স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে যেভাবে

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, তাদের প্রতিবেদন শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতার সঙ্গে তাপের সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। এতে উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে

অংশ নেয়া জনগণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির সমস্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। শীতে যেখানে কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার হার ৩.৩ শতাংশ, গ্রীষ্মে আক্রান্তের হার বেড়ে ৬ শতাংশ হয়েছে। ৬৬ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির প্রবণতা বেশি। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা থাকলে, দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার ২২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ২.৬ শতাংশ ব্যক্তির মধ্যে তাপজনিত ক্লান্তি দেখা গিয়েছিল। ৩৬ বছর থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগণের এবং ৬৬ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণদের মধ্যে গ্রীষ্মকালে তাপজনিত ক্লান্তি সবচেয়ে বেশি ছিল। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায়, তাপজনিত ক্লান্তির সম্ভাবনা ২৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার ৪.৪ শতাংশ ছিল, শীতকালে এটি ছিল ১.৮ শতাংশ। এ রোগে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয় নারী ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রায় ডায়রিয়ার সম্ভাবনা ৪৭.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে উষ্ণায়ন মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। জরিপে দেখা গেছে, শীতে যেখানে বিষণœতায় ভোগার হার ১৬.২ শতাংশ থাকে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশ হয়। একইভাবে শীতে যেখানে অস্থিরতা বা উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার হার ৮.৩ শতাংশ পাওয়া গেছে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এ দুই সমস্যা যথাক্রমে ২৩.৮ শতাংশ এবং ৩৭.১ শতাংশ বেড়ে যায়।

ছবি

পাঁচ বেসরকারি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার প্রথম ধাপে প্রশাসক বসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পেছানোর বিরোধিতা করছে

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন নামলো ৬শ’ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

ব্যবসা মাঝে মন্থর ছিল, এখন একটু ভালো: অর্থ উপদেষ্টা.

ছবি

অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরে আশাবাদী জাপানি রাষ্ট্রদূত

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সভা: একীভূত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বসছে প্রশাসক

ছবি

বিজিএমইএ–মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক: শুল্ক কমাতে আহ্বান

ছবি

জুলাই-আগস্টে এডিপি বাস্তবায়ন ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ

ছবি

বিবিএসের নাম পরিবর্তন ও তদারক পরিষদ রাখার সুপারিশ

ছবি

শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করার তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের

ছবি

নগদ অর্থের ব্যবহার কমাতে আসছে একীভূত পেমেন্ট সিস্টেম: গভর্নর

ছবি

আড়াই মাসে ১৩৯ কোটি ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে আবেদনের সময় বাড়লো ২ নভেম্বর পর্যন্ত

ছবি

পুঁজিবাজারে সূচকের নামমাত্র উত্থান, লেনদেন আরও তলানিতে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে খরচ বাড়লো ৪১ শতাংশ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ভি সিরিজের নতুন ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

ছবি

বাংলাদেশে ব্লুটুথ হেডফোন ও ডেটা কেবল তৈরির কারখানা করবে চীন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার নিয়ম

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে অপো এ৫ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

tab

তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা: বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকায় গত বছর অন্তত ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে, এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১৩৩ কোটি থেকে ১৭৮ কোটি ডলার বা অন্তত ২১ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির শূন্য দশমিক ৩ থেকে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘অ্যান আনসাসটেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশের এ আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার ইফফাত মাহমুদ এবং সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেক এ. রাজা। অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জাঁ পেসমে, সাউথ এশিয়া হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্র্যাকটিস ম্যানেজার ড. ফেং ঝাও।

১৯৭৬-২০২৩ সালের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ এবং ২০২৪ সালে ১৬ হাজার মানুষকে নিয়ে করা দুই দফা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে অনুভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অবসাদসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিষন্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বাড়ছে।

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর এ সময়ে ঢাকায় বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, ঢাকার তাপমাত্রা জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাড়তে থাকা তাপমাত্রা এখন আর কোনো তাত্ত্বিক বিষয় নয়। এটি এখন বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের বাস্তব অভিজ্ঞতা।

তিনি বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধি একটি বৈশ্বিক ঘটনা হলেও এর প্রভাব বাংলাদেশে অনেক বেশি তীব্র, যা আমাদের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। কেবল গবেষণা প্রতিবেদনে সীমাবদ্ধ না থেকে সুপারিশগুলোকে সময়সীমাবদ্ধ কর্মপরিকল্পনায় রূপ দিতে হবে। প্রতিটি সংস্থাকে নিজ নিজ ভূমিকা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে এবং জাতীয় পর্যায়ের অংশীদারদের দায়িত্ব নিতে হবে যাতে সুপারিশগুলো কার্যকর পদক্ষেপে পরিণত হয়।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে গেলে সেটা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যারা জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের জন্য দায়ী, ক্ষতিপূরণ তাদের কাছ থেকেই আনতে হবে।’

উষ্ণায়ন স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে যেভাবে

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, তাদের প্রতিবেদন শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতার সঙ্গে তাপের সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। এতে উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে

অংশ নেয়া জনগণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির সমস্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। শীতে যেখানে কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার হার ৩.৩ শতাংশ, গ্রীষ্মে আক্রান্তের হার বেড়ে ৬ শতাংশ হয়েছে। ৬৬ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির প্রবণতা বেশি। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা থাকলে, দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার ২২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ২.৬ শতাংশ ব্যক্তির মধ্যে তাপজনিত ক্লান্তি দেখা গিয়েছিল। ৩৬ বছর থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগণের এবং ৬৬ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণদের মধ্যে গ্রীষ্মকালে তাপজনিত ক্লান্তি সবচেয়ে বেশি ছিল। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায়, তাপজনিত ক্লান্তির সম্ভাবনা ২৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার ৪.৪ শতাংশ ছিল, শীতকালে এটি ছিল ১.৮ শতাংশ। এ রোগে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয় নারী ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রায় ডায়রিয়ার সম্ভাবনা ৪৭.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে উষ্ণায়ন মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। জরিপে দেখা গেছে, শীতে যেখানে বিষণœতায় ভোগার হার ১৬.২ শতাংশ থাকে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশ হয়। একইভাবে শীতে যেখানে অস্থিরতা বা উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার হার ৮.৩ শতাংশ পাওয়া গেছে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এ দুই সমস্যা যথাক্রমে ২৩.৮ শতাংশ এবং ৩৭.১ শতাংশ বেড়ে যায়।

back to top