alt

খেলাপি ঋণ নবায়নের সুযোগ ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়াবে: মুডিস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

খেলাপি ঋণ নবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সুবিধাকে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঋণের জন্য নেতিবাচক হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস। অর্থাৎ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে গ্রাহকের কাছে থেকে ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি বাড়বে বা ব্যাংক তার বিরতণকৃত ঋণ ফেরত পাবে না। সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের নীতির কারণে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল সোমবার মুডিসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করা যাবে

এ ধরনের নীতি সাময়িকভাবে চাপ কমালেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়াবে

ঋণগ্রহীতা আবার খেলাপি হলে ক্ষতির

ঝুঁকি বাড়বে

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পাবে। এ ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১০ বছর। ঋণ নিয়মিত হলে শুরুতে ঋণ পরিশোধে দুই বছর বিরতি সুবিধা পাওয়া যাবে।

মুডিস মনে করছে, দুই বছরের গ্রোস পিরিয়ড থাকলে ঋণগ্রহীতার প্রকৃত পরিশোধক্ষমতা যাচাইয়ে দেরি হবে। ফলে খেলাপি ঋণের হার কৃত্রিমভাবে কম মনে হতে পারে। সম্পদমানের ঝুঁকিও আড়াল হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের উদ্ধৃতি দিয়ে মুডিস বলেছে, পুনঃতফসিলের পর ৯০ দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এতে পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বাধা তৈরি হতে পারে এবং ঋণগ্রহীতা আবার খেলাপি হলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়বে।

মুডিস আরও বলেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়মকানুন শিথিল হওয়ার কারণে ব্যাংক খাতে ঋণ পুনঃতফসিলের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল, কিন্তু ঋণ পুনরুদ্ধার হয়নি। তবে মুডিস মনে করে, এই শিথিল নীতির কারণে প্রকৃত অর্থে ঋণ পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে অনাদায়ী ঋণের ‘চিরায়ত সমস্যা’ দীর্ঘায়িত হবে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ঋণ পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ার যথাযথ তদারকি না হলে দুর্বল ঋণ কাগজে-কলমে সচল দেখানো হতে পারে। এতে বাস্তবে ঝুঁকি থেকে যাবে।

মুডিসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের অনাদায়ী ঋণের হার ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে হয় ২৪ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর মূলধন-ঝুঁকি অনুপাত নেমে এসেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশে। এটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে। অনাদায়ী ঋণের বিপরীতে সংরক্ষণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে।

মুডিস বলেছে, তারা যে তিনটি ব্যাংকের ঋণমান নির্ধারণ করেছে, ওই তিনটি ব্যাংকের অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আছে। ব্যাংক তিনটি হলো- ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক। ঋণগ্রহীতাদের চাপ কমানো ও খেলাপি ঋণ কমাতে ন্যূনতম সুদের হার থেকে কম সুদে ঋণ দেয়ার বিধান করা হয়েছে। ফলে ঋণগ্রহীতার আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়বে এবং খেলাপির ক্ষেত্রে ঋণদাতাদের ক্ষতিও তুলনামূলক কম হবে, যা উভয়পক্ষের জন্যই উপকারী। তবে মাত্র ২ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধের সীমা ঝুঁকি তৈরি করবে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিদ্যমান খেলাপি ঋণের স্থিতির ওপর কমপক্ষে ২ শতাংশ নগদে অর্থ জমা দিতে হবে। তাতে ঋণ নিয়মিত হলে দুই বছরের গ্রোস পিরিয়ডসহ (ঋণ পরিশোধে বিরতি) তা পরিশোধে ১০ বছর সময় পাওয়া যাবে। তবে এর আগে ঋণ তিন বা তার চেয়ে বেশিবার পুনঃতফসিল করা হলে অতিরিক্ত ১ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে। তবে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের নির্ধারিত ঋণ পরিশোধের সূচি অনুযায়ী তিনটি মাসিক কিস্তি বা

একটি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, আগে যেসব অর্থ জমা দেয়া হয়েছে, তা ২ শতাংশ হিসাবে গণ্য হবে না। নতুন করে ২ শতাংশ অর্থ জমা দেয়ার পর তা নগদায়ন হলে ছয় মাসের মধ্যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে হবে।

প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতার ক্ষতির পরিমাণ ও প্রতিষ্ঠানের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এ সুবিধা দেয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের সোলেনামার (আপস-মীমাংসার দলিল) মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চলমান মামলার কার্যক্রম স্থগিতের ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে গত জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। দেশে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন লাখ কোটি টাকার বেশি।

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার বাস্তবায়ন ও নদী রক্ষা নিয়ে আলোচনা

ছবি

সবজির পর মাছ মাংস তেলের বাড়তি দাম

ছবি

ঋণখেলাপিসহ তিন কারণে চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচন থেকে বাদ পড়লেন ৩৪ প্রার্থী

ছবি

৪৬ শতাংশ মানুষ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার বাইরে: ঢাকা চেম্বার

ছবি

পুঁজিবাজারের জন্য আর্থিক প্রতিবেদনের ফরেনসিক বিশ্লেষণ জরুরি: বিএসইসি চেয়ারম্যান

ছবি

ঢাকায় চাকরি মেলায় তাৎক্ষণিক চাকরি পেলেন ৫৪ জন

ছবি

বিএফআইইউ প্রধান খুঁজতে গভর্নরের নেতৃত্বে কমিটি গঠন

ছবি

সেপ্টেম্বরেও ঊর্ধ্বমুখী রেমিট্যান্স, ২৪ দিনে ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে: সুইস রাষ্ট্রদূত

ছবি

চাল রপ্তানিতে নতুন শর্ত আরোপ ভারতের

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকের ১৮৯ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি, আসামি এমডিসহ ১১ জন

ছবি

একদিনের ব্যবধানে ফের বাড়লো স্বর্ণের দাম, ভরি ১,৯৪,৮৫৯ টাকা

ছবি

অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য ‘বিকেন্দ্রীকরণের’ আহ্বান ব্যবসায়ী নেতাদের

ছবি

ঢাকায় চলছে ‘মেইড ইন পাকিস্তান’ প্রদর্শনী

ছবি

অগ্রিম আয়ের ১০% সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা তুলে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

সার আমদানির সব সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হয়েছে: কৃষি উপদেষ্টা

ছবি

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য বিষয়ক কো-অর্ডিনেটরের বৈঠক

ছবি

অনলাইনে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ফি-চার্জ আদায় করবে সোনালী ব্যাংক

ছবি

মোবাইল হেলথ কেয়ার প্রোগ্রাম চালু করলো স্কয়ার গ্রুপ

ছবি

বাংলাদেশ দর-কষাকষির দক্ষতা বাড়াতে পারেনি, সেমিনারে বক্তারা

ছবি

স্বপ্নচারী উদ্যোক্তা স্যামসন এইচ চৌধুরী, জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধা

ছবি

দক্ষতার চেয়ে জন্ম পরিচয়ই ৭১ শতাংশ মানুষের রোজগার নিশ্চিত করে: আইএলওর

ছবি

শেয়ারবাজারে সামান্য উত্থান

ছবি

নাসা গ্রুপের শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধে চুক্তি সই

ছবি

এনবিআর চেয়ারম্যানের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক, বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ

ছবি

সিটি ব্যাংক পেল ২০২৪ সালের সেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্মাননা

ছবি

যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ইউটিউবারদের অবদান বছরে ২২০ কোটি পাউন্ড

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় ইতালি

ছবি

রিজার্ভ চুরি: প্রতিবেদন জমা দিতে আরও এক মাস সময় পেল কমিটি

ছবি

যে ডলার আছে তা আপৎকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জিনিসপত্রের দাম নিয়ে ৭০ শতাংশ মানুষের উদ্বেগ: পিপিআরসির জরিপ

ছবি

৪ দিন পর সামান্য বাড়লো সূচক, লেনদেন ৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন

ছবি

খেলনা শিল্পে ‘বাংলাদেশ ব্র্যান্ড’ গড়ে তোলার আহ্বান

ছবি

গৃহঋণের সীমা পাঁচ কোটি টাকা করার দাবি এবিবির

ছবি

গেমারদের জন্য বাজারে আসছে ইনফিনিক্স জিটি সিরিজের ৫জি ফোন

ছবি

অনন্ত জলিল ও বর্ষাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

tab

খেলাপি ঋণ নবায়নের সুযোগ ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়াবে: মুডিস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খেলাপি ঋণ নবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সুবিধাকে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঋণের জন্য নেতিবাচক হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস। অর্থাৎ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে গ্রাহকের কাছে থেকে ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি বাড়বে বা ব্যাংক তার বিরতণকৃত ঋণ ফেরত পাবে না। সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের নীতির কারণে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল সোমবার মুডিসের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করা যাবে

এ ধরনের নীতি সাময়িকভাবে চাপ কমালেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়াবে

ঋণগ্রহীতা আবার খেলাপি হলে ক্ষতির

ঝুঁকি বাড়বে

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নিয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ পাবে। এ ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১০ বছর। ঋণ নিয়মিত হলে শুরুতে ঋণ পরিশোধে দুই বছর বিরতি সুবিধা পাওয়া যাবে।

মুডিস মনে করছে, দুই বছরের গ্রোস পিরিয়ড থাকলে ঋণগ্রহীতার প্রকৃত পরিশোধক্ষমতা যাচাইয়ে দেরি হবে। ফলে খেলাপি ঋণের হার কৃত্রিমভাবে কম মনে হতে পারে। সম্পদমানের ঝুঁকিও আড়াল হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের উদ্ধৃতি দিয়ে মুডিস বলেছে, পুনঃতফসিলের পর ৯০ দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এতে পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বাধা তৈরি হতে পারে এবং ঋণগ্রহীতা আবার খেলাপি হলে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়বে।

মুডিস আরও বলেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়মকানুন শিথিল হওয়ার কারণে ব্যাংক খাতে ঋণ পুনঃতফসিলের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল, কিন্তু ঋণ পুনরুদ্ধার হয়নি। তবে মুডিস মনে করে, এই শিথিল নীতির কারণে প্রকৃত অর্থে ঋণ পুনরুদ্ধারের পরিবর্তে অনাদায়ী ঋণের ‘চিরায়ত সমস্যা’ দীর্ঘায়িত হবে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ঋণ পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ার যথাযথ তদারকি না হলে দুর্বল ঋণ কাগজে-কলমে সচল দেখানো হতে পারে। এতে বাস্তবে ঝুঁকি থেকে যাবে।

মুডিসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের অনাদায়ী ঋণের হার ছিল মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে হয় ২৪ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে ব্যাংকগুলোর মূলধন-ঝুঁকি অনুপাত নেমে এসেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশে। এটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্ধারিত সীমার অনেক নিচে। অনাদায়ী ঋণের বিপরীতে সংরক্ষণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে।

মুডিস বলেছে, তারা যে তিনটি ব্যাংকের ঋণমান নির্ধারণ করেছে, ওই তিনটি ব্যাংকের অবস্থা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল আছে। ব্যাংক তিনটি হলো- ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংক। ঋণগ্রহীতাদের চাপ কমানো ও খেলাপি ঋণ কমাতে ন্যূনতম সুদের হার থেকে কম সুদে ঋণ দেয়ার বিধান করা হয়েছে। ফলে ঋণগ্রহীতার আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়বে এবং খেলাপির ক্ষেত্রে ঋণদাতাদের ক্ষতিও তুলনামূলক কম হবে, যা উভয়পক্ষের জন্যই উপকারী। তবে মাত্র ২ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধের সীমা ঝুঁকি তৈরি করবে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বিদ্যমান খেলাপি ঋণের স্থিতির ওপর কমপক্ষে ২ শতাংশ নগদে অর্থ জমা দিতে হবে। তাতে ঋণ নিয়মিত হলে দুই বছরের গ্রোস পিরিয়ডসহ (ঋণ পরিশোধে বিরতি) তা পরিশোধে ১০ বছর সময় পাওয়া যাবে। তবে এর আগে ঋণ তিন বা তার চেয়ে বেশিবার পুনঃতফসিল করা হলে অতিরিক্ত ১ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে। তবে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের নির্ধারিত ঋণ পরিশোধের সূচি অনুযায়ী তিনটি মাসিক কিস্তি বা

একটি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, আগে যেসব অর্থ জমা দেয়া হয়েছে, তা ২ শতাংশ হিসাবে গণ্য হবে না। নতুন করে ২ শতাংশ অর্থ জমা দেয়ার পর তা নগদায়ন হলে ছয় মাসের মধ্যে আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে হবে।

প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতার ক্ষতির পরিমাণ ও প্রতিষ্ঠানের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এ সুবিধা দেয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে ব্যাংক ও গ্রাহকের সোলেনামার (আপস-মীমাংসার দলিল) মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চলমান মামলার কার্যক্রম স্থগিতের ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে গত জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। দেশে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন লাখ কোটি টাকার বেশি।

back to top