ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে মন্দাভাব বিরাজ করছে। করোনা মহামারির সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজার নিম্নমুখী থাকলেও, ওই সময়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছিল। এর ফলে বিনিয়োগকারীর বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্টের (বিও হিসাব) সংখ্যাও তখন পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায়।
২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে কমতে শুরু করে বিও হিসাব। এরপর দুই-একমাস সামান্য বাড়লেও প্রায় প্রতি মাসেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজার ছাড়তে দেখা গেছে। চলতি বছরের মাত্র ৯ মাসে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার বিনিয়োগকারী। আলোচিত সময়ে আরও প্রায় ৩২ হাজার বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব শেয়ার শূন্য হয়েছে।
এ হিসাবে চলতি বছরের নয় মাসে মোট ৬২ হাজার বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় হয়েছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে মোট বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৫২টি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে যা কমে হয়েছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ২২৭টি। অর্থাৎ নয় মাসের ব্যবধানে বিও হিসাব কমেছে ৩০ হাজার ২২৫টি।
সেপ্টেম্বর শেষে মোট বিও হিসাবের মধ্যে শেয়ার রয়েছে, এমন বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৯ হাজার ২০৭টি। ওইসব হিসাবে মোট ১০ হাজার ২৫৭ কোটি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩ লাখ ১৬ হাজার ৪২ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে শেয়ার রয়েছে, এমন বিও হিসাব ছিল ১২ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৯টি। ওইসব বিও হিসাবে মোট ১০ হাজার ১৫৬ কোটি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ৩ লাখ ৯ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ার শূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৫৯টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৪টি। অর্থাৎ নয় মাসের মাসের ব্যবধানে শেয়ার শূন্য বিও হিসাব বেড়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫টি। সেই হিসেবে গত নয় মাসে পুঁজিবাজার থেকে বিও হিসাব কমেছে ৩০ হাজার ২২৫টি এবং শেয়ার শূন্য বিও হিসাব বেড়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫টি। অর্থাৎ মাত্র ৯ মাসে পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় হয়েছেন ৬২ হাজার ১১০ জন বিনিয়োগকারী।
এ বিষয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি একটি আতঙ্ক বিরাজমান। তাছাড়া, বাজারে আস্থা বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থারও তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে নতুন কোনো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আসেনি। এসব কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বাজার বিমুখ হয়ে বেড়িয়ে গেছেন।’
তবে শিগগিরই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদী ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের বার্ষিক ফি কমানো হয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখতে সহায়তা করবে। তাছাড়া বাজার দীর্ঘমেয়াদে ভালো করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এগুলোর প্রতিফলন আসতে শুরু করলে বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা বৃদ্ধি পাবে।’
সিডিবিএলের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বর শেষে মোট ১৬ লাখ ৩২ হাজার ২২৭টি বিও হিসাবের মধ্যে পুরুষ বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪১ হাজার ৪৭৬টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১২ লাখ ৬১ হাজার ১৯৮টি। অর্থাৎ নয় মাসের ব্যবধানে পুরুষ বিও হিসাব কমেছে ১৯ হাজার ৭২২টি।
আলোচিত এই নয় মাসে নারী বিও হিসাব সংখ্যা কমেছে ১০ হাজার ৭৩৫টি। গত ডিসেম্বর শেষে নারী বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৫৫টি। ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে যা কমে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২০টি হয়েছে। এদিকে সেপ্টেম্বর শেষে বাংলাদেশে থাকা বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টি। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১৬ লাখ ১৮ হাজার ২৬২টি। অর্থাৎ নয় মাসে দেশি বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব কমেছে ২৭ হাজার ৫৬৭টি।
আলোচিত সময়ে বিদেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিও হিসাব কমেছে ২ হাজার ৮৯০টি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৩ হাজার ৮০১টি। গত বছরের ডিসেম্বরে যা ছিল ৪৬ হাজার ৬৯১টি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫
দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে মন্দাভাব বিরাজ করছে। করোনা মহামারির সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজার নিম্নমুখী থাকলেও, ওই সময়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছিল। এর ফলে বিনিয়োগকারীর বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্টের (বিও হিসাব) সংখ্যাও তখন পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায়।
২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে কমতে শুরু করে বিও হিসাব। এরপর দুই-একমাস সামান্য বাড়লেও প্রায় প্রতি মাসেই বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজার ছাড়তে দেখা গেছে। চলতি বছরের মাত্র ৯ মাসে পুঁজিবাজার ছেড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার বিনিয়োগকারী। আলোচিত সময়ে আরও প্রায় ৩২ হাজার বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব শেয়ার শূন্য হয়েছে।
এ হিসাবে চলতি বছরের নয় মাসে মোট ৬২ হাজার বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় হয়েছেন।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে মোট বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৫২টি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে যা কমে হয়েছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ২২৭টি। অর্থাৎ নয় মাসের ব্যবধানে বিও হিসাব কমেছে ৩০ হাজার ২২৫টি।
সেপ্টেম্বর শেষে মোট বিও হিসাবের মধ্যে শেয়ার রয়েছে, এমন বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৯ হাজার ২০৭টি। ওইসব হিসাবে মোট ১০ হাজার ২৫৭ কোটি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩ লাখ ১৬ হাজার ৪২ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে শেয়ার রয়েছে, এমন বিও হিসাব ছিল ১২ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৯টি। ওইসব বিও হিসাবে মোট ১০ হাজার ১৫৬ কোটি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যার বাজার মূল্য ছিল ৩ লাখ ৯ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ার শূন্য বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮৫৯টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭৪টি। অর্থাৎ নয় মাসের মাসের ব্যবধানে শেয়ার শূন্য বিও হিসাব বেড়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫টি। সেই হিসেবে গত নয় মাসে পুঁজিবাজার থেকে বিও হিসাব কমেছে ৩০ হাজার ২২৫টি এবং শেয়ার শূন্য বিও হিসাব বেড়েছে ৩১ হাজার ৮৮৫টি। অর্থাৎ মাত্র ৯ মাসে পুঁজিবাজারে নিষ্ক্রিয় হয়েছেন ৬২ হাজার ১১০ জন বিনিয়োগকারী।
এ বিষয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি একটি আতঙ্ক বিরাজমান। তাছাড়া, বাজারে আস্থা বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থারও তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে নতুন কোনো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আসেনি। এসব কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বাজার বিমুখ হয়ে বেড়িয়ে গেছেন।’
তবে শিগগিরই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদী ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের বার্ষিক ফি কমানো হয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখতে সহায়তা করবে। তাছাড়া বাজার দীর্ঘমেয়াদে ভালো করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এগুলোর প্রতিফলন আসতে শুরু করলে বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা বৃদ্ধি পাবে।’
সিডিবিএলের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বর শেষে মোট ১৬ লাখ ৩২ হাজার ২২৭টি বিও হিসাবের মধ্যে পুরুষ বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪১ হাজার ৪৭৬টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১২ লাখ ৬১ হাজার ১৯৮টি। অর্থাৎ নয় মাসের ব্যবধানে পুরুষ বিও হিসাব কমেছে ১৯ হাজার ৭২২টি।
আলোচিত এই নয় মাসে নারী বিও হিসাব সংখ্যা কমেছে ১০ হাজার ৭৩৫টি। গত ডিসেম্বর শেষে নারী বিও হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৫৫টি। ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে যা কমে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২০টি হয়েছে। এদিকে সেপ্টেম্বর শেষে বাংলাদেশে থাকা বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টি। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১৬ লাখ ১৮ হাজার ২৬২টি। অর্থাৎ নয় মাসে দেশি বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব কমেছে ২৭ হাজার ৫৬৭টি।
আলোচিত সময়ে বিদেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিও হিসাব কমেছে ২ হাজার ৮৯০টি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে এই সংখ্যা কমে হয়েছে ৪৩ হাজার ৮০১টি। গত বছরের ডিসেম্বরে যা ছিল ৪৬ হাজার ৬৯১টি।