‘প্রতারণা ও চুরির’ অভিযোগে সাবেক এক কর্মীর করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমানসহ তিনজন। রোববার, (২৬ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার মহানগর হাকিম রৌনক জাহান তাকির আদালতে আত্মসমর্পণ করে তারা জামিনের আবেদন করেন তারা।
শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী জানান। জামিন পাওয়া অপর দুজন হলেন- গ্রামীণফোনের ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফজলুল হক এবং চিফ হিউমান রিসোর্স অফিসার সায়েদা তাহিয়া হোসেন।
রাকিবুল আজম নামের এক সাবেক কর্মী গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ মামলা দায়ের করেন। আদালত সেদিন মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের ২৬ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করে। সে অনুযায়ী গ্রামীণফোনের তিনজন এদিন সকালে আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন। বেলা ১২টার দিকে শুনানি শুরু হলে আসামিরা কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান।
এহেসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, ‘রাকিবুল আজম গ্রামীণফোনের সাবেক একজন কর্মী। তর্কিত চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
আসামিরা আইন, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের জামিনের প্রার্থনা করছি। একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে তিনি (রাকিবুল আজম) শ্রম আদালতেও একটি মামলা করেছেন। হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। হাই কোর্ট রুল জারি করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে। কথিত মতের অভিযোগ প্রতারণা, চুরির অভিযোগ, যার কোনো উপাদান এজাহারে নেই। কথিত যে চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে মামলা, সেখানে টাকা উল্লেখ নেই। আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তাদের হয়রানি করতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামিন দেন, মিসইউজ করবেন না।’
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সদস্য খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘আসামিরা প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। দেখবেন, জামিন পাওয়ার স্ট্যাটাস আছে কি না। জামিন পাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে তাদের জামিনের প্রার্থনা করছি।’
অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকেয়া আক্তার রোকসানা জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘৮ লাখ টাকার অধিক পাওনা। পাওনার জন্য বাদী গ্রামীণফোনে যান। চুক্তি স্ট্যাম্প বুঝে পেয়েছেন মর্মে তাকে স্বাক্ষর করতে বলে। চেক দিয়ে দেওয়ার কথা বলে। পরে বলে ঝামেলা আছে। এরপর থেকে তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।’
আদালতের অনুমতি নিয়ে রাকিবুল আজম বলেন, ‘শ্রম আদালতের মামলার সাথে এ মামলার সংশ্লিষ্টতা নেই। শ্রম আদালতে হেরে গিয়ে তারা হাই কোর্টে গেছে। হাই কোর্টে গিয়ে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ পায়।’
শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আসামিদের জামিনের আদেশ দেয়। মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনে চাকরি করেন রাকিবুল আজম। চাকরিরত অবস্থায় ২০১০ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত আউটসোর্সিং এর রক্ষিত টাকা কর্মচারীদের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আউটসোর্সিং এর কাজের জন্য কোম্পানির কাছে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৮ টাকা পাওনা হয় বাদীর। পরে গত ১০ নভেম্বর বাদীকে তার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়। বাদী তার পাওনা টাকা আনতে গেলে আসামিরা তার কাছে তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ফেরত পাঠায়। এরপর আসামিরা ওই টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকে।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এক বার্তায় বলা হয়, ‘এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিমূলক মামলা। আমাদের সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, মাননীয় আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাব।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
‘প্রতারণা ও চুরির’ অভিযোগে সাবেক এক কর্মীর করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমানসহ তিনজন। রোববার, (২৬ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার মহানগর হাকিম রৌনক জাহান তাকির আদালতে আত্মসমর্পণ করে তারা জামিনের আবেদন করেন তারা।
শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী জানান। জামিন পাওয়া অপর দুজন হলেন- গ্রামীণফোনের ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফজলুল হক এবং চিফ হিউমান রিসোর্স অফিসার সায়েদা তাহিয়া হোসেন।
রাকিবুল আজম নামের এক সাবেক কর্মী গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ মামলা দায়ের করেন। আদালত সেদিন মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের ২৬ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করে। সে অনুযায়ী গ্রামীণফোনের তিনজন এদিন সকালে আত্মসমর্পণ করতে আদালতে আসেন। বেলা ১২টার দিকে শুনানি শুরু হলে আসামিরা কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান।
এহেসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, ‘রাকিবুল আজম গ্রামীণফোনের সাবেক একজন কর্মী। তর্কিত চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করেন। আদালত আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।
আসামিরা আইন, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের জামিনের প্রার্থনা করছি। একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে তিনি (রাকিবুল আজম) শ্রম আদালতেও একটি মামলা করেছেন। হাই কোর্টে রিট করা হয়েছে। হাই কোর্ট রুল জারি করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে। কথিত মতের অভিযোগ প্রতারণা, চুরির অভিযোগ, যার কোনো উপাদান এজাহারে নেই। কথিত যে চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে মামলা, সেখানে টাকা উল্লেখ নেই। আসামিরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তাদের হয়রানি করতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামিন দেন, মিসইউজ করবেন না।’
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সদস্য খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, ‘আসামিরা প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। দেখবেন, জামিন পাওয়ার স্ট্যাটাস আছে কি না। জামিন পাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে তাদের জামিনের প্রার্থনা করছি।’
অন্যদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী রোকেয়া আক্তার রোকসানা জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘৮ লাখ টাকার অধিক পাওনা। পাওনার জন্য বাদী গ্রামীণফোনে যান। চুক্তি স্ট্যাম্প বুঝে পেয়েছেন মর্মে তাকে স্বাক্ষর করতে বলে। চেক দিয়ে দেওয়ার কথা বলে। পরে বলে ঝামেলা আছে। এরপর থেকে তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।’
আদালতের অনুমতি নিয়ে রাকিবুল আজম বলেন, ‘শ্রম আদালতের মামলার সাথে এ মামলার সংশ্লিষ্টতা নেই। শ্রম আদালতে হেরে গিয়ে তারা হাই কোর্টে গেছে। হাই কোর্টে গিয়ে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ পায়।’
শুনানি শেষে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আসামিদের জামিনের আদেশ দেয়। মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণফোনে চাকরি করেন রাকিবুল আজম। চাকরিরত অবস্থায় ২০১০ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত আউটসোর্সিং এর রক্ষিত টাকা কর্মচারীদের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আউটসোর্সিং এর কাজের জন্য কোম্পানির কাছে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৮ টাকা পাওনা হয় বাদীর। পরে গত ১০ নভেম্বর বাদীকে তার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়। বাদী তার পাওনা টাকা আনতে গেলে আসামিরা তার কাছে তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ফেরত পাঠায়। এরপর আসামিরা ওই টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করতে থাকে।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে এক বার্তায় বলা হয়, ‘এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানিমূলক মামলা। আমাদের সিনিয়র ম্যানেজমেন্টকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, মাননীয় আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাব।’