শ্রম আইন সংশোধন প্রত্যাখ্যান করে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রকলশিল্প মালিকদের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিএমএ।
তিন বাণিজ্য সংগঠন এক বিবৃতিতে বলেছে, ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদের (টিসিসি) সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু বিষয় অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে জন্য অসন্তুষ্ট হয়ে অধ্যাদেশ প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ধারা টিসিসির যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করার আহ্বান জানায় সংগঠন তিনটি।
বিবৃতি দেওয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিএমএর নেতারা ঢাকার গুলশানে একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এতে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল এবং বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ তিন সংগঠনের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় বিটিএমএ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন দুজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, সংশোধন হওয়া শ্রম আইনের তিনটি ধারা নিয়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। এক. শ্রমিকের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দুই. ২০ জন শ্রমিকের সম্মতি নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের সুযোগ।
বিশেষ করে নিবন্ধনের আবেদনে কতজন শ্রমিকের সম্মতি দরকার, সে সংক্রান্ত প্রথম দুটি স্তর। তিন. ১০০ জন শ্রমিক হলেই ভবিষ্য তহবিল করা বাধ্যতামূলক।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘টিসিসিতে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধন চাই।
ইউনিয়ন নিবন্ধনের আবেদনে শ্রমিকদের সম্মতির প্রথম দুই স্তরের কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীল পরিবেশ থাকবে না। সে জন্য আমরা প্রথম দুটি স্তরের পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছি।’
এত দিন কোনো কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগত। এখন থেকে শতকরা হারটি থাকছে না, ন্যূনতম ২০ জনের সম্মতি থাকলেই ইউনিয়ন করা যাবে। মূলত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে কারখানার মোট শ্রমিকসংখ্যার বিপরীতে কতজনের সম্মতি লাগবে, সেটি বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানে ২০ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক থাকলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ২০ জনের সম্মতি লাগবে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৫০০ শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪০ জন, ৫০১ থেকে ১ হাজার ৫০০ শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন, ১ হাজার ৫০১ থেকে ৩ হাজার শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ৩০০ জন এবং ৩ হাজার ১ থেকে তার বেশি শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ৪০০ জনের সম্মতি লাগবে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য।
একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পাঁচটির বেশি ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে না। এত দিন সর্বোচ্চ তিনটি করা যেত।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত ২৮ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘টিসিসির সভায় শ্রমিকসংখ্যার ভিত্তিতে ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।
প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের প্রস্তাব ছিল।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তা পরিবর্তন করে ২০ থেকে ৩০০ শ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবতা বিবর্জিত।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
শ্রম আইন সংশোধন প্রত্যাখ্যান করে তা সংশোধনের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রকলশিল্প মালিকদের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিএমএ।
তিন বাণিজ্য সংগঠন এক বিবৃতিতে বলেছে, ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদের (টিসিসি) সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু বিষয় অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে জন্য অসন্তুষ্ট হয়ে অধ্যাদেশ প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ধারা টিসিসির যৌথ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করার আহ্বান জানায় সংগঠন তিনটি।
বিবৃতি দেওয়ার আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিএমএর নেতারা ঢাকার গুলশানে একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এতে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল এবং বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ তিন সংগঠনের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায় বিটিএমএ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন দুজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, সংশোধন হওয়া শ্রম আইনের তিনটি ধারা নিয়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। এক. শ্রমিকের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দুই. ২০ জন শ্রমিকের সম্মতি নিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের সুযোগ।
বিশেষ করে নিবন্ধনের আবেদনে কতজন শ্রমিকের সম্মতি দরকার, সে সংক্রান্ত প্রথম দুটি স্তর। তিন. ১০০ জন শ্রমিক হলেই ভবিষ্য তহবিল করা বাধ্যতামূলক।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘টিসিসিতে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা সে অনুযায়ী শ্রম আইন সংশোধন চাই।
ইউনিয়ন নিবন্ধনের আবেদনে শ্রমিকদের সম্মতির প্রথম দুই স্তরের কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীল পরিবেশ থাকবে না। সে জন্য আমরা প্রথম দুটি স্তরের পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছি।’
এত দিন কোনো কারখানা বা প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ২০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি লাগত। এখন থেকে শতকরা হারটি থাকছে না, ন্যূনতম ২০ জনের সম্মতি থাকলেই ইউনিয়ন করা যাবে। মূলত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনে কারখানার মোট শ্রমিকসংখ্যার বিপরীতে কতজনের সম্মতি লাগবে, সেটি বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠানে ২০ থেকে ৩০০ জন শ্রমিক থাকলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে ২০ জনের সম্মতি লাগবে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৫০০ শ্রমিক থাকা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪০ জন, ৫০১ থেকে ১ হাজার ৫০০ শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ১০০ জন, ১ হাজার ৫০১ থেকে ৩ হাজার শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ৩০০ জন এবং ৩ হাজার ১ থেকে তার বেশি শ্রমিকের প্রতিষ্ঠানে ৪০০ জনের সম্মতি লাগবে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য।
একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পাঁচটির বেশি ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে না। এত দিন সর্বোচ্চ তিনটি করা যেত।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত ২৮ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘টিসিসির সভায় শ্রমিকসংখ্যার ভিত্তিতে ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল।
প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৫০০ শ্রমিকের কারখানায় ৫০ জন শ্রমিকের সম্মতিতে ইউনিয়ন গঠনের প্রস্তাব ছিল।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তা পরিবর্তন করে ২০ থেকে ৩০০ শ্রমিক নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবতা বিবর্জিত।’