alt

অর্থনৈতিক শুমারিতে বাদ পড়েছিল ৩ লাখ ৬৫ হাজার ইউনিট

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক শুমারিতে মোট ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭২টি অর্থনৈতিক ইউনিট বাদ পড়েছিল। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত ৩৫২টি নমুনা এলাকায় পোস্ট অ্যানুমারেশন চেক (পিইসি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

পিইসিতে দেশের আট বিভাগ থেকে ৩৫২টি নমুনা এলাকা নির্বাচন করা হয়

সবচেয়ে বেশি বাদ পড়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সেবা খাতের ইউনিটে

পিইসি অনুযায়ী, শুমারির কভারেজ হার ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ, আর বাদ পড়ার হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বাদ পড়া সবচেয়ে বেশি হয়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সেবা খাতের ইউনিটে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারির গুণগত মান যাচাই করতে পিইসি পরিচালনা করে বিআইডিএস ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মঙ্গলবার, (২৫ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস ভবনে আয়োজিত সেমিনারে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, শুমারিতে দেশের মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রাথমিক হিসাব ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি। পিইসির মূল্যায়নে প্রকৃত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৬টি যা প্রাথমিক হিসাবের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

মূল আলোচনায় অংশ নেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শাকিল আকতার এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে পিইসি প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনুস।

পিইসিতে দেশের আট বিভাগ থেকে ৩৫২টি নমুনা এলাকা নির্বাচন করা হয়। ঢাকা বিভাগে ১০০, চট্টগ্রামে ৬৩, রাজশাহীতে ৪৮, খুলনায় ৪২, রংপুরে ৪০, ময়মনসিংহে ২৪, বরিশালে ১৯ এবং সিলেটে ১৬টি এলাকা। গ্রাম, শহর, পৌরসভা, উপজেলা সদর ও সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয় যাতে কোথায় কত ত্রুটি হয়েছে তা নির্ভুলভাবে বোঝা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাদ পড়ার হার সব অঞ্চলে এক রকম ছিল না। সিটি করপোরেশন এলাকায় বাদ পড়া সবচেয়ে বেশি, কারণ এসব এলাকায় দ্রুত ব্যবসা স্থানান্তর, নতুন উদ্যোগের সূচনা এবং অস্থায়ী বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের আধিক্য দেখা যায়। ক্ষুদ্র সেবাভিত্তিক ব্যবসা, অস্থায়ী স্টল, ফুটপাতের দোকান এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের ইউনিট অধিক হারে বাদ পড়েছে। বিপরীতে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ও কর শনাক্তকরণ নম্বর থাকা ইউনিট প্রায় সব ক্ষেত্রেই শুমারিতে ধরা পড়েছে।

শুধু বাদ পড়াই নয়, পিইসি শুমারি ও পিইসির উত্তরের মধ্যে তথ্য-অসঙ্গতিও সুনির্দিষ্টভাবে খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের ধরনে প্রায় ১৪ শতাংশ, কার্যক্রমের ধরনে ৮ শতাংশ, মালিকানা তথ্যের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ, আর অগ্নি নিরাপত্তা তথ্যের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ভিন্নতা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অসঙ্গতি পাওয়া গেছে ব্যবসা নিবন্ধনের তথ্যে, যেখানে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে তথ্য মিলেনি।

বিআইডিএস জানায়, এসব অসঙ্গতি মূলত উত্তরদাতার ভুল বোঝা, তথ্য ব্যাখ্যার অসুবিধা বা অনির্দিষ্টতা থেকে এসেছে; এগুলোকে কোনো পরিকল্পিত ভুল হিসেবে দেখা হয়নি। পিইসি বলছে, কোনো ধরনের উদ্দেশ্যমূলক পক্ষপাত বা প্রণোদিত ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ত্রুটিগুলো ছিল এলোমেলো যা শুমারির সামগ্রিক নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না। তবে শহরাঞ্চল, অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসা ও নতুন খাতগুলোতে তদারকি আরও জোরদার করা, মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ বাড়ানো এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা উন্নত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

পিইএসে ধরা পড়েছে ২.৯৫ শতাংশ নেট কাভারেজ এরর যা বিশেষজ্ঞদের মতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য। তারা যোগ করেন, কোনো দেশের অর্থনৈতিক শুমারিতেই শূন্য কাভারেজ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

শুমারি পরিচালনায় মাঠপর্যায়ের এনুমারেটরদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে অর্থনৈতিক শুমারির সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব শাকিল আকতার বলেন, শুমারির সঠিকতা নির্ভর করে ডেটা সংগ্রহকারীর দক্ষতা, তাদের প্রশিক্ষণ, প্রবেশাধিকার (অ্যাক্সেস) এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের ওপর। ৩-৫ দিনের স্বল্প ট্রেনিংয়ে বৃহৎ ও জটিল ম্যানুয়াল শেখা কঠিন অথচ এরা শুমারির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

তিনি বলেন, অনেক গার্মেন্টস কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিংবা সংবেদনশীল জায়গায় অ্যানুমারেটরদের প্রবেশাধিকার সীমিত থাকায় তথ্য সংগ্রহ বিঘ্নিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মী, ব্যবস্থাপনা কিংবা মালিকপক্ষ তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করে।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘পিইসির ফলাফল দেশের বাস্তব অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে। তারা মনে করেন, শুমারিতে বাদ পড়া ইউনিটের হার তুলনামূলক কম হলেও তা নীতিনির্ধারণ, আঞ্চলিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার ডেটাবেইস হালনাগাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

ছবি

দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ: বিশ্বব্যাংক

ছবি

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫৪ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে

ছবি

২২৭ কোম্পানির দরপতন, সামান্য বেড়েছে লেনদেন

ছবি

প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাচ্ছে আরও ৮ মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান

ছবি

নভেম্বরের মধ্যে খেলাপি হওয়া ঋণের জন্যও নীতি সহায়তা

ছবি

এনবিআরের ১৭ জনের সম্পদ জব্দ, বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাইবে দুদক

ছবি

অ্যামাজন ও আলিবাবায় সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক: ২০২৭ সালের মধ্যে আন্তঃলেনদেনের আওতায় আসবে সব প্রতিষ্ঠান

ছবি

ডিসি-ইউএনও পাঠিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ কঠিন, প্রয়োজন রাজনৈতিক সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

পুঁজিবাজারে বড় উত্থান, লেনদেনও বেড়েছে

ছবি

ব্যাংক বন্ধ হলে তাৎক্ষণিক ২ লাখ টাকা পাবেন আমানতকারী

ছবি

কুড়িগ্রাম-গেলেফু করিডোরে আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা

ছবি

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে অর্থনীতি: এমসিসিআই

ছবি

বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ প্রায় ১৩৩ মিলিয়ন ডলার : ডিসিসিআই

রিটার্ন জমার সময় বাড়লো আরও একমাস

ছবি

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়াল এনবিআর

ছবি

মাস্টারকার্ডের সম্মাননা পেল ১৮ প্রতিষ্ঠান

ছবি

সারা দেশে উদ্যোক্তাদের ৮৭১ শিল্পপ্লট দিচ্ছে বিসিক

ছবি

৪ মাসে ১ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারেনি ৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ

ছবি

সূচকের উত্থান হলেও কমেছে লেনদেন

ছবি

সিটি ব্যাংকের এমডি পেলেন ‘সিইও অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ পুরস্কার

ছবি

ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনের ‘সিরামিক এক্সপো’

ছবি

স্বল্পোন্নত দেশের খোলস থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান রেহমান সোবহানের

ছবি

বন্দর: ‘তাড়াহুড়ায়’ কেন ‘গোপনীয়’ চুক্তি, বুধবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা

ছবি

শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা

ছবি

উন্নয়নের বয়ানে লাভবান হয়েছে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ছবি

রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ছে, অনলাইনে জমা দেবেন যেভাবে

ছবি

সাউথইস্ট ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে সেকান্দার-ই-আজমের যোগদান

ছবি

২০২৬ সালে ব্যাংক বন্ধ থাকবে ২৮ দিন

ছবি

ট্রাম্পের শুল্কের চাপে রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়েছে ভারত

ছবি

মাসের প্রথম ১৮ দিনে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে ৩১ শতাংশ

ছবি

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

ছবি

লালদিয়া-পানগাঁওয়ে ‘১০ বছর করমুক্ত সুবিধা পাবে’ ২ বিদেশি কোম্পানি

ছবি

১৯ দিনে এলো ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রেমিট্যান্স

ছবি

জুলাই-অক্টোবর মাসে রাজস্ব আহরণে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৮ শতাংশ

tab

অর্থনৈতিক শুমারিতে বাদ পড়েছিল ৩ লাখ ৬৫ হাজার ইউনিট

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

২০২৪ সালের অর্থনৈতিক শুমারিতে মোট ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭২টি অর্থনৈতিক ইউনিট বাদ পড়েছিল। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত ৩৫২টি নমুনা এলাকায় পোস্ট অ্যানুমারেশন চেক (পিইসি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

পিইসিতে দেশের আট বিভাগ থেকে ৩৫২টি নমুনা এলাকা নির্বাচন করা হয়

সবচেয়ে বেশি বাদ পড়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সেবা খাতের ইউনিটে

পিইসি অনুযায়ী, শুমারির কভারেজ হার ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ, আর বাদ পড়ার হার ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বাদ পড়া সবচেয়ে বেশি হয়েছে সিটি করপোরেশন এলাকার অপ্রাতিষ্ঠানিক ও সেবা খাতের ইউনিটে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারির গুণগত মান যাচাই করতে পিইসি পরিচালনা করে বিআইডিএস ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মঙ্গলবার, (২৫ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস ভবনে আয়োজিত সেমিনারে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, শুমারিতে দেশের মোট অর্থনৈতিক ইউনিটের প্রাথমিক হিসাব ছিল ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৪টি। পিইসির মূল্যায়নে প্রকৃত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ ৪২ হাজার ৮৩৬টি যা প্রাথমিক হিসাবের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

মূল আলোচনায় অংশ নেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্যব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব শাকিল আকতার এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে পিইসি প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনুস।

পিইসিতে দেশের আট বিভাগ থেকে ৩৫২টি নমুনা এলাকা নির্বাচন করা হয়। ঢাকা বিভাগে ১০০, চট্টগ্রামে ৬৩, রাজশাহীতে ৪৮, খুলনায় ৪২, রংপুরে ৪০, ময়মনসিংহে ২৪, বরিশালে ১৯ এবং সিলেটে ১৬টি এলাকা। গ্রাম, শহর, পৌরসভা, উপজেলা সদর ও সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয় যাতে কোথায় কত ত্রুটি হয়েছে তা নির্ভুলভাবে বোঝা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাদ পড়ার হার সব অঞ্চলে এক রকম ছিল না। সিটি করপোরেশন এলাকায় বাদ পড়া সবচেয়ে বেশি, কারণ এসব এলাকায় দ্রুত ব্যবসা স্থানান্তর, নতুন উদ্যোগের সূচনা এবং অস্থায়ী বা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের আধিক্য দেখা যায়। ক্ষুদ্র সেবাভিত্তিক ব্যবসা, অস্থায়ী স্টল, ফুটপাতের দোকান এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের ইউনিট অধিক হারে বাদ পড়েছে। বিপরীতে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ও কর শনাক্তকরণ নম্বর থাকা ইউনিট প্রায় সব ক্ষেত্রেই শুমারিতে ধরা পড়েছে।

শুধু বাদ পড়াই নয়, পিইসি শুমারি ও পিইসির উত্তরের মধ্যে তথ্য-অসঙ্গতিও সুনির্দিষ্টভাবে খতিয়ে দেখে। দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের ধরনে প্রায় ১৪ শতাংশ, কার্যক্রমের ধরনে ৮ শতাংশ, মালিকানা তথ্যের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ, আর অগ্নি নিরাপত্তা তথ্যের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ভিন্নতা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অসঙ্গতি পাওয়া গেছে ব্যবসা নিবন্ধনের তথ্যে, যেখানে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে তথ্য মিলেনি।

বিআইডিএস জানায়, এসব অসঙ্গতি মূলত উত্তরদাতার ভুল বোঝা, তথ্য ব্যাখ্যার অসুবিধা বা অনির্দিষ্টতা থেকে এসেছে; এগুলোকে কোনো পরিকল্পিত ভুল হিসেবে দেখা হয়নি। পিইসি বলছে, কোনো ধরনের উদ্দেশ্যমূলক পক্ষপাত বা প্রণোদিত ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ত্রুটিগুলো ছিল এলোমেলো যা শুমারির সামগ্রিক নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না। তবে শহরাঞ্চল, অপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবসা ও নতুন খাতগুলোতে তদারকি আরও জোরদার করা, মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ বাড়ানো এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা উন্নত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

পিইএসে ধরা পড়েছে ২.৯৫ শতাংশ নেট কাভারেজ এরর যা বিশেষজ্ঞদের মতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য। তারা যোগ করেন, কোনো দেশের অর্থনৈতিক শুমারিতেই শূন্য কাভারেজ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

শুমারি পরিচালনায় মাঠপর্যায়ের এনুমারেটরদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে অর্থনৈতিক শুমারির সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব শাকিল আকতার বলেন, শুমারির সঠিকতা নির্ভর করে ডেটা সংগ্রহকারীর দক্ষতা, তাদের প্রশিক্ষণ, প্রবেশাধিকার (অ্যাক্সেস) এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের ওপর। ৩-৫ দিনের স্বল্প ট্রেনিংয়ে বৃহৎ ও জটিল ম্যানুয়াল শেখা কঠিন অথচ এরা শুমারির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

তিনি বলেন, অনেক গার্মেন্টস কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিংবা সংবেদনশীল জায়গায় অ্যানুমারেটরদের প্রবেশাধিকার সীমিত থাকায় তথ্য সংগ্রহ বিঘ্নিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মী, ব্যবস্থাপনা কিংবা মালিকপক্ষ তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করে।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ‘পিইসির ফলাফল দেশের বাস্তব অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে। তারা মনে করেন, শুমারিতে বাদ পড়া ইউনিটের হার তুলনামূলক কম হলেও তা নীতিনির্ধারণ, আঞ্চলিক উন্নয়ন, বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার ডেটাবেইস হালনাগাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

back to top