সারা বছরের তুলনায় সাধারণত শীতে সবজির দাম কম থাকে। পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে খুব কম দামে যে কোনো ধরনের সবজি কিনতে পারে সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু এবার ঘটছে উল্টো ঘটনা। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত হলেও দাম কমছে না। অনেক সবজি আগের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। এতে শীতের সময়েও স্বাচ্ছন্দ্যে বাজার করতে পারছেন ভোক্তারা। শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার এক কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়
বাজার ও মানভেদে নতুন আলু ১২০-১৫০ টাকা
পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, সেখানে সব ধরনের শীতের সবজিতে ভরপুর। শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমের সঙ্গে টমেটো, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালং শাক, লাউ, মুলা সবই রয়েছে। তবে এসব সবজির দামে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ক্রেতারা।
বাজারে নতুন আসা ভালো মানের এক কেজি বেগুন কিনতে ক্রেতাকে অন্তত ১০০-১২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এ দামে সাধারণত বেগুন বিক্রি হয় গরমকালে। যখন কিনা দেশে সবজির উৎপাদন থাকে কম। শীতের মধ্যে বেগুনের দাম নেমে আসে ৪০-৬০ টাকায়।
অন্যদিকে প্রতিটি মাঝারি আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম ৪৫-৫৫ টাকা। নতুন আসা এক কেজি শিমের দাম এখন ১০০ টাকা বা তারও বেশি। কোনো কোনো বাজারে সবুজ শিম ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য বছর একই সময়ে শীতের এ শিম ৫০ টাকা ও কপির দাম ২০-৩০ টাকার মধ্যে থাকতো।
নতুন আলু অবশ্য সবসময়ই বাড়তি দামে বিক্রি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি কেজি নতুন আলু বাজার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়।
অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে ঢেড়স ও পটলের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। নতুন আসা মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৮০-১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম চড়া নানা ধরনের শাকেরও। প্রতি আঁটি শাক কিনতে কমপক্ষে ২০ টাকা খরচ হচ্ছে। যদিও শীতের সময় ১০-১৫ টাকার মধ্যেই বেশিরভাগ শাক বিক্রি হয়। শীতের সবজির ভরপুর মৌসুমে এমন দাম আগে কখনো দেখেননি বলে অভিযোগ করেন ইয়াসিন আলী নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘সবজির ভরপুর মৌসুমে এতো দাম আমি আগে কখনো দেখিনি। আশা করেছিলাম, এই সরকারের সময় কম দামে বাজার করতে পারবো। কিন্তু হয়েছে প্রায় উল্টা। শীতের ভরপুর মৌসুমেও বাড়তি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে।’
বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, গত অক্টোবরের বৃষ্টিতে সারাদেশে শীতকালীন সবজির উৎপাদন বিঘিœত হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার সবজির জমিও নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়েও সবজির দাম চড়া।
এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। কোনো বাজারে দেশি পেঁয়াজ এখনও ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়।
এদিকে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শুক্রবার ২৭ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীর বাজারগুলোতে আলু ১৯ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি, শিম ৭০ টাকা কেজি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩৫ টাকা পিস, লাউ ৪৫ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। একই সঙ্গে লেয়ার, সোনালীসহ অন্যান্য মুরগির দামও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে বাজারে আগের তুলনায় ইলিশ মাছের পরিমাণ বেড়েছে। এর মধ্যে মাঝারি আকারের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৩০০-৩৩০ টাকার মধ্যে, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়, আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। বাজারে দাম বাড়ার মূল কারণ হিসেবে বিক্রেতারা ফিডের দাম ও খামার পর্যায়ের অন্যান্য খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
মাছের বাজারে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি পড়ছে ইলিশে। মাঝারি আকারের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। বড় আকারের ইলিশের কেজি ২০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
ইলিশ ছাড়াও অন্যান্য মাছের দামও চড়া। রুই, কাতল ও মৃগেল আকার ও মানভেদে কেজিতে ৩০০-৭৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার মতো তুলনামূলক কম দামের মাছও ১৯০-২৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া শুক্রবার মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, সিলভারকার্প ২৫০-৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০ টাকা, আইড় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর ছোট মাছের মধ্যে কাঁচকি ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, পাবদা আকারভেদে ৩০০-৬০০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-১০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
সারা বছরের তুলনায় সাধারণত শীতে সবজির দাম কম থাকে। পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে খুব কম দামে যে কোনো ধরনের সবজি কিনতে পারে সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু এবার ঘটছে উল্টো ঘটনা। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ পর্যাপ্ত হলেও দাম কমছে না। অনেক সবজি আগের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। এতে শীতের সময়েও স্বাচ্ছন্দ্যে বাজার করতে পারছেন ভোক্তারা। শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার এক কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকায়
বাজার ও মানভেদে নতুন আলু ১২০-১৫০ টাকা
পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০-১২০ টাকায়
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, সেখানে সব ধরনের শীতের সবজিতে ভরপুর। শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমের সঙ্গে টমেটো, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালং শাক, লাউ, মুলা সবই রয়েছে। তবে এসব সবজির দামে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না ক্রেতারা।
বাজারে নতুন আসা ভালো মানের এক কেজি বেগুন কিনতে ক্রেতাকে অন্তত ১০০-১২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। এ দামে সাধারণত বেগুন বিক্রি হয় গরমকালে। যখন কিনা দেশে সবজির উৎপাদন থাকে কম। শীতের মধ্যে বেগুনের দাম নেমে আসে ৪০-৬০ টাকায়।
অন্যদিকে প্রতিটি মাঝারি আকারের ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম ৪৫-৫৫ টাকা। নতুন আসা এক কেজি শিমের দাম এখন ১০০ টাকা বা তারও বেশি। কোনো কোনো বাজারে সবুজ শিম ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য বছর একই সময়ে শীতের এ শিম ৫০ টাকা ও কপির দাম ২০-৩০ টাকার মধ্যে থাকতো।
নতুন আলু অবশ্য সবসময়ই বাড়তি দামে বিক্রি হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি কেজি নতুন আলু বাজার ও মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকায়।
অন্যান্য সবজির মধ্যে বরবটি বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে ঢেড়স ও পটলের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকায়। নতুন আসা মিষ্টি কুমড়া প্রতিটি ৮০-১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম চড়া নানা ধরনের শাকেরও। প্রতি আঁটি শাক কিনতে কমপক্ষে ২০ টাকা খরচ হচ্ছে। যদিও শীতের সময় ১০-১৫ টাকার মধ্যেই বেশিরভাগ শাক বিক্রি হয়। শীতের সবজির ভরপুর মৌসুমে এমন দাম আগে কখনো দেখেননি বলে অভিযোগ করেন ইয়াসিন আলী নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘সবজির ভরপুর মৌসুমে এতো দাম আমি আগে কখনো দেখিনি। আশা করেছিলাম, এই সরকারের সময় কম দামে বাজার করতে পারবো। কিন্তু হয়েছে প্রায় উল্টা। শীতের ভরপুর মৌসুমেও বাড়তি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে।’
বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, গত অক্টোবরের বৃষ্টিতে সারাদেশে শীতকালীন সবজির উৎপাদন বিঘিœত হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার সবজির জমিও নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়েও সবজির দাম চড়া।
এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। কোনো বাজারে দেশি পেঁয়াজ এখনও ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়।
এদিকে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শুক্রবার ২৭ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীর বাজারগুলোতে আলু ১৯ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি, শিম ৭০ টাকা কেজি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩৫ টাকা পিস, লাউ ৪৫ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। একই সঙ্গে লেয়ার, সোনালীসহ অন্যান্য মুরগির দামও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে বাজারে আগের তুলনায় ইলিশ মাছের পরিমাণ বেড়েছে। এর মধ্যে মাঝারি আকারের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ৩০০-৩৩০ টাকার মধ্যে, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়, আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। বাজারে দাম বাড়ার মূল কারণ হিসেবে বিক্রেতারা ফিডের দাম ও খামার পর্যায়ের অন্যান্য খরচ বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
মাছের বাজারে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি পড়ছে ইলিশে। মাঝারি আকারের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। বড় আকারের ইলিশের কেজি ২০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।
ইলিশ ছাড়াও অন্যান্য মাছের দামও চড়া। রুই, কাতল ও মৃগেল আকার ও মানভেদে কেজিতে ৩০০-৭৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার মতো তুলনামূলক কম দামের মাছও ১৯০-২৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া শুক্রবার মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, সিলভারকার্প ২৫০-৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০ টাকা, আইড় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর ছোট মাছের মধ্যে কাঁচকি ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, পাবদা আকারভেদে ৩০০-৬০০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-১০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।