শুক্রবার রাজধানীর একটি কাঁচাবাজারের চিত্র -সংবাদ
সাধারণত শীতের মৌসুমে বাজারে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এতে কম দামে স্বাচ্ছন্দে সবজি খেতে পারে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু এই শীতে বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সবজি।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে
৩০-৩৫ টাকা
বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজি এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। মূলা আর পেঁপে ছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকার ঘরে। এমনকি কিছু কিছু সবজি ১০০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ দাম বেড়েছে পেঁয়াজেরও। এছাড়া সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। শুক্রবার, (০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানির বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার মালিবাগ কাঁচাবাজারে প্রতিপিস ফুলকপি (মাঝারি) বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়, বাঁধা কপিও (মাঝারি) প্রতি পিস ৪০ টাকা, এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন (গোল) ৮০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া শালগম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাড়তি দামে হতাশা প্রকাশ করে ক্রেতারা বলছেন, ‘শীত মৌসুমে সব ধরনের সবজির দাম কমে যায়। কিন্তু এবার দেখছি উল্টোটা, শীত এসেছে ঠিকই কিন্তু সব সবজির দাম বেড়ে গেছে। এমন বাড়তি দাম আগে কখনো দেখিনি।’
সবজি দাম বাড়তি হওয়ার কারণ হিসেবে মালিবাগ বাজারের একজন বিক্রেতা দাবি করেন, ‘পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। সে কারণে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে, ফলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে।’
হঠাৎ করেই পেঁয়াজের বাজারে লেগেছে দামের তীব্র প্রতিযোগিতা। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০-৩৫ টাকা। শুক্রবার ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩৮-১৪৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে এ পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায় ১৬০ টাকা কেজিতে। তবে বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ অল্প পরিমাণে আসতে শুরু করেছে, যা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চড়েছে পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দাম, যা ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা দরে।
তবে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে বেড়েছে ব্রয়লারসহ সব মুরগির সরবরাহ। এর জন্য এক লাফে কেজিপ্রতিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৮০-১৯০ টাকা।
আবার ব্রয়লার ছাড়াও অন্য জাতের মুরগির দামও বাজারজুড়ে স্থিতিশীল রয়েছে। কক বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা, লাল মুরগি (লেয়ার) ২৮০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ টাকা দরে। ডিমের বাজারেও তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, শীত আসছে দেখে অনেক খামারি তাদের মুরগি বাজারে ছাড়ছেন। এতে সরবরাহ বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। আর সরবরাহ বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই দাম কিছুটা কমেছে।
অন্যদিকে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ। একইবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের পাইকারি ও খুচরা দরে কোনো স্বস্তি নেই।
বিক্রেতারা জানান, মাছের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। এরমধ্যে আকৃতিভেদে রুই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫০-৪২০ টাকায়, কাতলা ৩২০-৩৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০-২৫০ টাকা এবং শিং-মাগুর ৫৫০-৭৫০ টাকায়। চাষ ও দেশি কই ৩০০-৬০০ টাকা আর বোয়াল ও চিতলসহ বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০০-১,০০০ টাকায়।
এছাড়া অন্য মাছের মধ্যে ছোট চিংড়ি ৩০০-৩৫০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, মলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, পাবদা মাছ আকারভেদে ৩০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দু’দিন ধরেই সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে বাজারে। কারণ ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে ৯ টাকা। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলের দাম ৪৩ টাকা এবং ২ লিটারের বোতলের দাম বাড়িয়েছেন ১৮ টাকা। তবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানান, সরকারের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়াতে পারেন না। এটা আইনের ব্যত্যয়। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার রাজধানীর একটি কাঁচাবাজারের চিত্র -সংবাদ
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সাধারণত শীতের মৌসুমে বাজারে সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এতে কম দামে স্বাচ্ছন্দে সবজি খেতে পারে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু এই শীতে বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সবজি।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে
৩০-৩৫ টাকা
বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজি এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। মূলা আর পেঁপে ছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকার ঘরে। এমনকি কিছু কিছু সবজি ১০০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ দাম বেড়েছে পেঁয়াজেরও। এছাড়া সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। শুক্রবার, (০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানির বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার মালিবাগ কাঁচাবাজারে প্রতিপিস ফুলকপি (মাঝারি) বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়, বাঁধা কপিও (মাঝারি) প্রতি পিস ৪০ টাকা, এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন (গোল) ৮০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া শালগম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজের ফুল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাড়তি দামে হতাশা প্রকাশ করে ক্রেতারা বলছেন, ‘শীত মৌসুমে সব ধরনের সবজির দাম কমে যায়। কিন্তু এবার দেখছি উল্টোটা, শীত এসেছে ঠিকই কিন্তু সব সবজির দাম বেড়ে গেছে। এমন বাড়তি দাম আগে কখনো দেখিনি।’
সবজি দাম বাড়তি হওয়ার কারণ হিসেবে মালিবাগ বাজারের একজন বিক্রেতা দাবি করেন, ‘পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। সে কারণে আমাদের কেনা দাম বেশি পড়ছে, ফলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে।’
হঠাৎ করেই পেঁয়াজের বাজারে লেগেছে দামের তীব্র প্রতিযোগিতা। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০-৩৫ টাকা। শুক্রবার ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩৮-১৪৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে এ পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায় ১৬০ টাকা কেজিতে। তবে বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ অল্প পরিমাণে আসতে শুরু করেছে, যা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চড়েছে পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দাম, যা ক্রেতাকে কিনতে হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা দরে।
তবে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে বেড়েছে ব্রয়লারসহ সব মুরগির সরবরাহ। এর জন্য এক লাফে কেজিপ্রতিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৮০-১৯০ টাকা।
আবার ব্রয়লার ছাড়াও অন্য জাতের মুরগির দামও বাজারজুড়ে স্থিতিশীল রয়েছে। কক বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা, লাল মুরগি (লেয়ার) ২৮০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৪০ টাকা দরে। ডিমের বাজারেও তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, শীত আসছে দেখে অনেক খামারি তাদের মুরগি বাজারে ছাড়ছেন। এতে সরবরাহ বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। আর সরবরাহ বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই দাম কিছুটা কমেছে।
অন্যদিকে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ছোট-বড় সব ধরনের মাছ। একইবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের পাইকারি ও খুচরা দরে কোনো স্বস্তি নেই।
বিক্রেতারা জানান, মাছের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। এরমধ্যে আকৃতিভেদে রুই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫০-৪২০ টাকায়, কাতলা ৩২০-৩৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০-২৫০ টাকা এবং শিং-মাগুর ৫৫০-৭৫০ টাকায়। চাষ ও দেশি কই ৩০০-৬০০ টাকা আর বোয়াল ও চিতলসহ বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০০-১,০০০ টাকায়।
এছাড়া অন্য মাছের মধ্যে ছোট চিংড়ি ৩০০-৩৫০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, মলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, পাবদা মাছ আকারভেদে ৩০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দু’দিন ধরেই সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে বাজারে। কারণ ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে ৯ টাকা। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলের দাম ৪৩ টাকা এবং ২ লিটারের বোতলের দাম বাড়িয়েছেন ১৮ টাকা। তবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানান, সরকারের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়াতে পারেন না। এটা আইনের ব্যত্যয়। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।