অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬ শতাংশ স্নাতক পছন্দমতো কাজ পায় না

image

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬ শতাংশ স্নাতক পছন্দমতো কাজ পায় না

মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করা প্রায় ৬৬ শতাংশ আংশিক বেকারত্বের (আন্ডার এমপ্লয়েড) মধ্যে রয়েছেন। তারা পছন্দমতো কাজ পায় না।

টিকে থাকতে তারা টিউশনি, কল সেন্টার

বা কোচিংয়ে ক্লাস নেয়ার মতো কাজ করেন

দৈনিক মজুরিতে কাজে

যুক্ত ২৯ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী

প্রায় ৬৬ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী আংশিক বেকার

অর্থাৎ তারা টিউশনি, কল সেন্টার বা কোচিংয়ে ক্লাস নেয়ার মতো কাজ করেন। তারা পূর্ণকালীন কাজের (ফুলটাইম) সঙ্গে যুক্ত নন। ফল ভালো থাকলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা তাদের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে সামনে এসেছে।

সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের উপস্থাপনায় এসব তথ্য তুলে ধরেন গবেষকরা। গতকাল সোমবার ছিল দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিন। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। এ বছরের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’।

প্রথম অধিবেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীদের কর্মসংস্থান নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা ফেলো তাহরীন তাহরিমা চৌধুরী। জাতীয় বিদ্যালয়ের অধীন ৫১৫টি কলেজ থেকে স্নাতক করা ১ হাজার ৬৩৯ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে ২০২১ সালে বিশ্বব্যাংকের করা জরিপের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।

স্নাতক ডিগ্রিধারীদের কাছে কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে ৩৪৩ জন কাজে যুক্ত রয়েছেন বলে জানা যায়। আর চাকরি খুঁজছেন বলে জানান ১ হাজার ৭৮ জন। তাদের মধ্যে ১১৩ জন পার্টটাইম বা খ-কালীন কাজে যুক্ত। ৮২ জন কোনো কর্মক্ষেত্রে যুক্ত নন। অর্থাৎ প্রায় ৬৬ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী আংশিক বেকার। আংশিক বেকারত্ব বা আন্ডার এমপ্লয়েড বলতে শ্রমশক্তিতে যুক্ত এমন মানুষদের বোঝায়, যারা যোগ্যতা অনুযায়ী কাক্সিক্ষত চাকরি খুঁজে পাননি।

উপস্থাপনায় বলা হয়, স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ৬টি ভাগে বিভক্ত করে দেখা যায়, তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ শতাংশ চাকরি করছেন। নিজের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১ দশমিক ৬ শতাংশ। টিউশনি করছেন প্রায় ৭ শতাংশ। খ-কালীন কাজে যুক্ত সাড়ে ৫ শতাংশ। কাজ খুঁজছেন ৩৩ শতাংশ। আর দৈনিক মজুরিতে কাজে যুক্ত ২৯ শতাংশ ¯œাতক ডিগ্রিধারী।

যদিও বিশ্ব শ্রম সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করলেই তাকে বেকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তাই এসব স্নাতক ডিগ্রিধারী নিজেদের ‘বেকার’ মনে করলেও তাদের পূর্ণাঙ্গ বেকার হিসেবে গণ্য করা যায় না। আর এসব স্নাতক ডিগ্রিধারীর ৬১ শতাংশেরই অনার্স বা মাস্টার্স পর্যায়ে কাজের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। অভিজ্ঞতা ছিল ৩৭ শতাংশের। এমনকি তাদের ৫৫ শতাংশের আইসিটি (তথ্যপ্রযুক্তি) নিয়ে কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না। গবেষণা প্রতিবেদনটির নীতি সুপারিশে বলা হয়, এসব স্নাতক ডিগ্রিধারী চাকরির পরীক্ষায় ডাক পেলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় তারা কাক্সিক্ষত চাকরি পাচ্ছেন না। তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পরিচালিত দুই হাজারের বেশি কলেজের সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হয়। এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে বলা হয়েছিল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪৬ শতাংশ স্নাতক ৩-৪ বছর পর্যন্ত বেকার থাকছেন।সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশন ছিল দেশের শ্রমবাজার নিয়ে। এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী। এ অধিবেশনে চারটি উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়।

মজুরি বৈষম্য নিয়ে প্রথম উপস্থাপনা তুলে ধরেন বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো বদরুন্নেসা আহমেদ। এতে বলা হয়, ২০১৩-২০২২ সাল পর্যন্ত শহরাঞ্চলে শ্রমিকদের গড় বেতন বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১১ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে গ্রামের শ্রমিকদের বেতন গড়ে বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। অর্থাৎ গ্রামের তুলনায় শহরে বেতন বৃদ্ধির হার দ্বিগুণের বেশি। অর্থাৎ গ্রাম ও শহরের বেতন বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠছে।

এতে আরও বলা হয়, শহর এলাকায় শ্রমিকের মাসিক গড় বেতন ৮ হাজার ৯৪৫ টাকা। আর গ্রামে মাত্র ৩ হাজার ৩৯০ টাকা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহানগরের শ্রমিকরা গ্রামীণ শ্রমিকদের তুলনায় গড়ে প্রায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি মজুরি পান। যদিও শহরের শ্রমিকরা গ্রামের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি সময় কাজ করেন। আর শহুরে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতাও কিছুটা বেশি। প্রতিবেদনটিতে ২০১৩, ২০১৭ ও ২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য থেকে মজুরি হার নেয়া হয়েছে।

এ গবেষণা থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যায় যে, অর্থনৈতিক সুবিধা মূলত মহানগরেই সীমাবদ্ধ। ছোট শহরগুলো পিছিয়ে পড়ছে। ছোট শহরগুলোতে অবকাঠামো, শিল্প ও সেবা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। যাতে মহানগরের ওপর চাপ কমে এবং ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব হয়। অধিবেশনে নারীদের কর্মপরিবেশ নিয়ে আরেকটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা সহযোগী কাশফী রায়ান। আর কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মোহাম্মদ গোলাম নবি মজুমদার।

‘অর্থ-বাণিজ্য’ : আরও খবর

» বর্তমানে দুর্নীতিবাজরা পুরস্কৃত হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা

» ইন্টারটেক বাংলাদেশ: ‘হার্ড লাইন্স পণ্য, খেলনা, টেক্সটাইল’ পরীক্ষাগার উদ্বোধন

» খেলাপি ঋণ কেন কমছে না, জানতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

» শেয়ারবাজারে সূচকের বড় উত্থান, বেড়েছে লেনদেনও

» অর্থবছরের শেষ ৬ মাসে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ : জিইডি

» ‘ভবিষ্যতে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবেন না’

» ১৩ ব্যাংক থেকে কেনা হলো ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার

» আমরা ইতোমধ্যেই ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছি: এনবিআর চেয়ারম্যান

» আমদানির খবরেই কমলো পেঁয়াজের দাম

» তিন মাসে কোটিপতি আমানতকারী বেড়েছে ৭৩৪ জন

» নভেম্বরে অর্থনীতিতে আবার ধীরগতি

» পুঁজিবাজারে তথ্যের স্বচ্ছতায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: বিআইসিএম

» ট্যানারি শিল্প বেপজার অধীনে নেয়া নিয়ে মালিক-শ্রমিকদের উদ্বেগ

» নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ালো ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ

» জীবাশ্ম জ্বালানিতে এডিবির ঋণ ‘অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’

» ঋণ খেলাপিদের শেয়ার নিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম, কাজে দেয়নি: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

» সূচকের পতনে ৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

» এসএমই পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার খুঁজতে হবে: শিল্প উপদেষ্টা

» বিভিন্ন দাবিতে বিজেএমসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গেইট মিটিং

» ইউরোপে এক্সকে ১৪ কোটি ডলার জরিমানা