image

বীমা করপোরেশন আইন সংশোধনের খসড়া, পুনঃবীমা করা যাবে বিদেশি কোম্পানিতেও

রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বীমা করপোরেশন আইন সংশোধনের যে খসড়া অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত করেছে, তাতে বিদেশি কোম্পানিতেও পুনঃবীমার সুযোগ রাখা হয়েছে। যদিও বৈদিশক মুদ্রা সাশ্রয় ও বাজার বিদেশিদের হাত থেকে ‘মুক্ত করার’ যুক্তিতে প্রস্তাবিত খসড়ায় আপত্তি জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন।

বড় ধরনের ঝুঁকি এড়াতে ও তাৎক্ষণিক অর্থ পরিশোধের সক্ষমতা রাখতে সাধারণ বীমা গ্রহণ করার পর রাষ্ট্রায়ত্ত সাধারণ বীমা করপোরেশনে পুনঃবীমা করার বাধ্যবাধকতা আছে। বর্তমানে সাধারণ বীমা করপোরেশন চলে ‘বীমা কর্পোরেশন আইন, ২০১৯’ এর অধীনে। সংশোধিত খসড়ায় পুনঃবীমা করতে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত সাধারণ বীমা করপোরেশনে করার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি তুলে দেওয়া হচ্ছে।

এতে পুনঃবীমার বেলায় বীমা কোম্পানিগুলো বিদেশি বা সাধারণ বীমা করপোরেশনকে বেছে নিতে পারবে। বিদেশি বীমা কোম্পানির বেলায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ক্রেডিট রেটিং থাকতে হবে। সাধারণ বীমা করপোরেশন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই বছর শেষে প্রিমিয়াম বাবদ বড় অঙ্কের অর্থ আয় করছে বিভিন্ন বীমা কোম্পানির কাছ থেকে।

দেশে পুনঃবীমার ক্ষেত্রে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘সাধারণ বীমা করপোরেশন’। সবশেষ ২০২৪ সালে পুনঃবীমা খাত থেকে সাধারণ বীমা করপোরেশন আয় করে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার উপরে।

বিদেশি কোম্পানি সাধারণ বীমা খাতে প্রবেশ করলে বছরে এ আয়ের পাশাপাশি সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রতি বছরে কর-পরবর্তী ৪০০ কোটি টাকার নিট মুনাফাতেও ধস নামবে বলে মনে করেন হারুন অর রশিদ।

গত অগাস্টে বাংলাদেশি পণ্য থেকে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অপ্রকাশযোগ্য চুক্তি (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট-এনডিএ) করে সরকার। সেই চুক্তির অংশ হিসেবে পুনঃবীমার বিষয়টি উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

বীমার দাবি পরিশোধে ঝুঁকি ভাগাভাগি করতে সাধারণ বীমার বেলায় পুনঃবীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আইনে।

দেশের ৪৫টি সাধারণ বীমা কোম্পানিতে তাদের বীমা অঙ্কের ৫০ শতাংশ পুনঃবীমা করতে হয় সাধারণ বীমা করপোরেশনে। অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ চাইলে সাধারণ বীমা করপোরেশনের বা বিদেশি কোম্পানিতে পুনঃবীমা করার সুযোগ রয়েছে।

তবে সরকারি অর্থায়ন বা গ্যারান্টিযুক্ত প্রকল্প ও বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত দেশিয় প্রকল্পের পুনঃবীমার শতভাগ করতে হয় সাধারণ বীমা করপোরেশনে। বাধ্যতামূলকভাবে ৫০ শতাংশ পুনঃবীমা থেকে যে আয় হয়, তা বছর শেষে ৪৫টি বেসরকারি সাধারণ বীমা কোম্পানির সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হয় সাধারণ বীমা করপোরেশনকে।

আইনটি সংশোধন হলে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় কোম্পানির পুনঃবীমা করতে নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি বাধ্যবাধকতা থাকছে না। দেশি-বিদেশি সব কোম্পানির কাছেই করা যাবে। এমনকি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের পাশাপাশি সরকারি-বিদেশি যৌথ অর্থায়ন ও বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের পুনঃবীমাও চলে যেতে পারে বিদেশি বীমা কোম্পানির কাছে।

বর্তমানে এসব প্রকল্পের শতভাগ পুনঃবীমা সাধারণ বীমা করপোরেশনে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রিমিয়াম পরিশোধে ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা প্রতিষ্ঠানকেই প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে হবে।

আর তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতির প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রেও নতুন জটিলতার তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন শহিদুল ইসলাম।

‘অর্থ-বাণিজ্য’ : আরও খবর

» শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সাময়িক বহিষ্কার

সম্প্রতি