আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরও কম ব্যয়ের বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। চলতি বাজেট সংশোধনের কাজ করার কথা থাকলেও তা করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এই দায়িত্ব ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত নতুন সরকারের হাতে ন্যস্ত করতে চায় ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। তবে সামষ্টিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে আগামী অর্থ বছরও ব্যয় সংকোচন নীতি বহাল রাখার পক্ষে মত দেওয়া হয়েছে। অর্থবিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আর্থিক খাতের দুরবস্থা, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে আরও অন্তত এক বছর ব্যয় সংকোচন নীতি অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছে অর্থবিভাগ। সরকারের সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও এ রকম নীতির কথাই বলা হয়েছে। সবশেষ অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের বৈঠকে এমন নীতি অবলম্বনের কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করায় গত বছর (২০২৪-২৫) সরকারের পাঁচ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর একই নীতি অবলম্বন করে সরকার সাশ্রয় করেছিল আড়াই হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি ২০২৫-২৬ বছরও উল্লেখযাগ্য অঙ্কের সাশ্রয় হবে বলে প্রত্যাশা করছে অর্থবিভাগ। এই বছর বাজেটের আকার কমিয়ে ধরা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উন্নয়ন-অনুন্নয়ন উভয় খাতের ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরেছে।
২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য প্রায় সাড়ে আট লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাথমিক প্রাক্কলন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি স্থির অঙ্ক নয়। কারণ, নতুন বাজেটের আকার ও নীতি চূড়ান্ত করবে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার। চলমান সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ব্যয় সংকোচন নীতি অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এজন্য আসছে বছরও কম ব্যয়ের বাজেট দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে অর্থবিভাগ। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়। এটি বাড়িয়ে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। দেশে কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ না হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন কমানো হয়েছে।
আগামী ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ও ৬ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশের বেশি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আগামী বছরও কম ব্যয়ের বাজেট প্রণয়নের কথা ভাবছে অর্থবিভাগ।
আর্থিক সংকট ও সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলতি বছর অন্তর্বর্তী সরকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে। যা ছিল আগের বছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।