আগের দিনের মতো বৃহস্পতিবারও (৬ মে) উত্থান হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন পনেরশত কোটি টাকার কাছাকাছি হয়েছে। আর ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দুই মাস পর ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের ঘরে পৌঁছেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭.১৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬০৬.০১ পয়েন্টে। সূচকটি ১ মাস ২৯ দিন বা ৪০ কার্যদিবস পর ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্টের ঘরে পৌঁছেছে। এর আগে চলতি বছরের ৮ মার্চ সূচকটি ৫৬০০ পয়েন্টের ঘরে অবস্থান করছিল। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াাহ সূচক ২.২৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫.১৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৫২.১৮ পয়েন্ট এবং ২ হাজার ১৩৭.২৮ পয়েন্টে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ১ হাজার ৪৮৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৯৮ কোটি ৫১ লাখ টাকার। ডিএসইতে বৃহস্পতিবার ৩৬০টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১৮০টির বা ৫০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে ১২০টির বা ৩৩.৩৩ শতাংশের এবং বাকি ৬০টির বা ১৬.৬৭ শতাংশের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৩.৭৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২০৮.৮৮ পয়েন্টে। সিএসইতে বৃহস্পতিবার ২৮৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ৯০টির আর ৩৪টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে ৪৬টি কোম্পানির পৌনে ৭৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৯টি শেয়ার ১১২ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৭৭ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১১ কোটি ৬৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৮২ লাখ ৬০ হাজার টাকার ন্যাশনাল ফিড মিলসের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৭ কোটি ২৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের।

এছাড়া এডিএন টেলিকমের ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার, বিবিএস কেবলসের ৫ লাখ টাকার, বিডি থাইয়ের ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বার্জার পেইন্টসের ২৬ লাখ ২৪ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ২ কোটি ৪৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ২৫ লাখ টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ২ কোটি ৬১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার, বিএসসির ৩৯ লাখ ৪২ হাজার টাকার, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ ৮২ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ৭১ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, ঢাকা ডাইংয়ের ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার, ডেসকোর ১ কোটি ৮০ হাজার টাকার, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ১০ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, ই-জেনারেশনের ৫ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার টাকার, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৯৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, জেনেক্সের ২৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনের ৩ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকার, জিপিএইচ ইস্পাতের ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ইনডেক্স অ্যাগ্রোর ১৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকার, কোহিনুর কেমিক্যালের ৫ লাখ টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৯৯ লাখ ৯ হাজার টাকার, এলআর গ্লোবাল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের ৫৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৮৯ লাখ ১০ হাজার টাকার, মিরাকলের ৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৭৯ লাখ টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ১ কোটি ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি ৫১ লাখ ২৫ হাজার টাকার, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের ২৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার, আরএকে সিরামিকের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ২৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকার, সমতা লেদারের ৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ২৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকার, সিলকো ফার্মার ১১ লাখ ২০ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার, এসএস স্টিলের ২ কোটি ৬২ লাখ ২৭ হাজার টাকার, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৬২ লাখ ৪৮ হাজার টাকার এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২০টির বা ৩৩.৩৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এদিন শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি কমেছে ইস্টার্ন ব্যাংকের। বুধবার (৫ মে) ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩৯.৬০ টাকায়। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৩৩.৮০ টাকায়। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৮০ টকা বা ১৪.৬৪ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে ইস্টার্ন ব্যাংক ডিএসইর টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৬.৩০ শতাংশ, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৬.১৪ শতাংশ, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৫.৯৫ শতাংশ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৫.৬৫ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৫.৩৬ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের ৫.৩৩ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৫.০২ শতাংশ, গ্রীণডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪.৮৭ শতাংশ এবং জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৪.৮৩ শতাংশ কমেছে।

বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৮০টির বা ৫০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এদিন শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে লুব-রেফের।

বুধবার লুব-রেফের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩৪ টাকায়। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৩৭.৪০ টাকায়। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.৪০ টকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে লুব-রেফ ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে মেট্রো স্পিনিংয়ের ১০ শতাংশ, ইজেনারেশনের ৯.৯৫ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড মিলসের ৯.৯৩ শতাংশ, তৌফিকা ফুডের ৯.৭৫ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের ৯.৭৩ শতাংশ, এনআরবিসি ব্যাংকের ৯.৫৫ শতাংশ, তশরিফার ৯.৫৫ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের ৯.৩৪ শতাংশ এবং এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর ৯.২৭ শতাংশ বেড়েছে।