টানা তিন কার্যদিবস উত্থানের পর রোববার (১৩ জুন) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও। আগের কার্যদিবস থেকে রোববার কিছুটা কমলেও দুই হাজার কোটি টাকার ঘরেই হয়েছে লেনদেন।

রোববার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০.৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৬.০৫ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্যসূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬.০৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১২.৫৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২৯৩.৪২ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ১৯২.৫৬ পয়েন্টে। রোববার ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ২ হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ টাকা টাকার লেনদেন হয়েছে যা আগের দিন থেকে ৬০০ কোটি ১৮ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৬৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার।

ডিএসইতে রোববার ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৫৯টির বা ৪২.৭৪ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ১৯২টির বা ৫৬.৬১ শতাংশের এবং ২১টির বা ৫.৬৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৬.৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৫৮.৩৮ পয়েন্টে। সিএসইতে রোববার ৩২২টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪৪টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫৬টির আর ২২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯০ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

রোববার ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানির ১২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৩ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ৫৯৬টি শেয়ার ৮৮ বার হাত বদলের মাধ্যমে ১২৯ কোটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছি পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের।

এছাড়া প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, আমান ফিডের ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার, বিকন ফার্মার ৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ড্রাগন সোয়েটারের ১৭ লাখ টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৩৯ লাখ ৪ হাজার টাকার, এমারেল্ড অয়েলের ৫ লাখ ১২ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ৫ কোটি ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, জেনেক্সের ১ কোটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ১৭ লাখ ২ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার, জিপিএইচ ইস্পাতের ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার, গ্রিণডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, এইচআর টেক্সটাইলের ৮ লাখ ৭২ হাজার টাকার, ইনডেক্স এগ্রোর ৩৩ লাখ ১৮ হাজার টাকার, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ১ কোটি ৭৫ লাখ ৬ হাজার টাকার, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিংয়ের ৭ লাখ ৯ হাজার টাকার, মীর আখতারের ১২ লাখ ৮২ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার টাকার, নিউ লাইন ক্লোথিংসের ৯৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিডের ৫২ লাখ ৯৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের ৭ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার, নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্সে ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ১৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৭৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রিডের ১ কোটি ৮ লাখ টাকার, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আরএকে সিরামিকের ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, রূপালী ব্যাংকের ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার, সাফকো স্পিনিংয়ের ৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, সায়হাম কটনের ৪৫ লাখ টাকার, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৫ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ইউনিক হোটেলের ২ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার এবং ওয়াটা কেমিক্যালের ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই’র লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫৯টির বা ৪২.৭৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এদিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি ছিল সুহৃদের শেয়ারের প্রতি। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) লেনদেন শেষে সুহৃদের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৭ টাকায়। রোববার লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৮.৭০ টাকায়। অর্থাৎ রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৭০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে সুহৃদ ডিএসইর টপটের গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৬ শতাংশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৯.৯৬ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মার ৯.৯৪ শতাংশ, ইনডেক্স এগ্রোর ৯.৯৪ শতাংশ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯ শতাংশ, পেনিনসুলার ৯.৮৫ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ৯.৭ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ৯.৭ শতাংশ এবং কপারটেকের শেয়ার দর ৯.৬৯ শতাংশ বেড়েছে।

ডিএসই’র লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৯২ টির বা ৫৬.৬১ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এদিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হারানোর তালিকার শীর্ষে ছিল আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৩.৮০ টাকায়। রোববার লেনদেন শেষে এর শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ২১.৫০ টাকায়। অর্থাৎ রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৩০ টাকা বা ৯.৬৬ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ডিএসইর টপটের লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।

ডিএসইতে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৮.৯১ শতাংশ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৮.২০ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৮.০৯ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৬.৮৯ শতাংশ, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৬.৫৮ শতাংশ, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের ৬.৫৬ শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৫.৬৪ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৫.৫৬ শতাংশ এবং আইটি কনসালটেন্টসের শেয়ার দর ৫.৪৫ শতাংশ কমেছে।