alt

করমুক্ত আয়সীমা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান এমসিসিআইর

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ১৯ জুন ২০২২

ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। রোববার (১৯ জুন) বাজেট পরবর্তী এক আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি এই আহ্বান জানান।

আলোচনায় তিনি বলেন, ‘যদিও করোনা সংক্রমন ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বিবেচনা করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা করা হয়েছে, তবুও বর্তমান চলমান বন্য অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বিচেনা করে এর আকার আরও বৃদ্ধিও প্রস্তাব করছি। এছাড়া মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনা করে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা মহামারী এবং পুনরুদ্ধারের মধ্যে একটি ক্রান্তিকালীন পর্যায়ে আছি। গত দুই বছরে মহামারীর মাঝখানে জাতীয় বাজেট কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। এমসিসিআই প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলন হিসাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতির জন্য সরকারকে সাধুবাদ। সরকার তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত উভয় কোম্পানির জন্য করপোরেট করের হার কমিয়েছে। এতে আমরা খুশি। তবে এই নিম্ন হারের জন্য নির্ধারিত শর্তগুলো বেশিরভাগ কোম্পানির জন্য পূরণ করা কঠিন হতে পারে। সরকার কিছু ক্ষেত্রে ট্যাক্স-ডিডাকশন-এ- সোর্স এর হার কমানোর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পারকুইজিট থ্রেশহোল্ডও বাড়িয়েছে।’

রপ্তানিমুখি শিল্পের আয়কর হারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আয়কর হার যৌক্তিককরণ করা হয়েছে। যেহেতু উভয়ই বন্ডেড সুবিধা নিচ্ছে সেহেতু উৎপাদনকারী ইউনিটগুলোর মধ্যে উপ-কন্ট্রাক্টের অধীনে পণ্য সরবরাহের ওপর ভ্যাট ছাড়ের অনুমতি দেয়ার জন্য আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এটা সব রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত।’

ডিজিটাল মুদ্রার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রার ওপর একটি গবেষণা জন্য বাজেটে বলা হয়েছে এবং ডিজিটাল ব্যাংক চালু করার উপায় খোঁজাকে সময়োপযোগী বলে মনে হচ্ছে। আমরা আনন্দিত, সরকার আমাদের দাবির প্রতি মনোযোগ দিয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বাজেটের অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের চাহিদার দিক থেকে উন্নতির জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বরাদ্দ এমন একটি ক্ষেত্র। হ্যাঁ, বরাদ্দ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা ভাইরাসের কথা বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরের থেকে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা থেকে এর বরাদ্দ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা করা হয়েছে। তারপরও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আমরা এই মুহূর্তে অতিক্রম করছি তাও দেশের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে। অতএব আমরা বর্তমান আকার থেকে একটি যুক্তিসংগত পরিমাণে সামাজিক সুরক্ষা নেট বাজেট বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।’

ব্যক্তিগত আয়কর সীমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমার আকার একই রকম থেকে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম, এটি বাড়ানো হবে। মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে, আমরা বিশ্বাস করি ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করা উচিত। সরকার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে কোন প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দেয়। এ ধরনের কর্মকান্ড সবসময় সৎ উদ্যোক্তা ও নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করে।’

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, প্রস্তাবিত বাজেট পর্যবেক্ষণ করে চেম্বার আহ্বান জানাচ্ছে, প্রথমত, ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স অপসারণ করা উচিত কারণ এটি ডাবল ট্যাক্সেশনের দিকে পরিচালিত করে। দ্বিতীয়ত, নির্মাণ, অবকাঠামো ইত্যাদির মতো পরিষেবা যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, তাদের কর-কাটা-অ্যাট-সোর্স (টিডিএস) হার কমানো উচিত। এই টিডিএস বর্তমান পরিস্থিতিতে পণ্য সরবরাহের টিডিএস স্তরে বজায় রাখা যেতে পারে। রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪ অনুযায়ী, ২০২৪ অর্থবছরের মধ্যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০ বিলিয়ন ডলার। তবুও বর্তমান রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল স্তর মাত্র ৭.৫ বিলিয়ন। ৮০ বিলিয়ন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে, ইডিএফ কমপক্ষে ১০ বিলিয়নে উন্নীত করা উচিত এবং সব রপ্তানিকারকদের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য করা উচিত। আমরা এখনো অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্সের আওতার বাইরে দেখতে পাচ্ছি, যার কারণে করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি করে করের বোঝা হয়ে পড়ছে। এমসিসিআই বিশ্বাস করে, এটি দ্রুত সমাধান করা উচিত।

আলোচনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘যখন বাংলাদেশ উন্নয়ন হচ্ছে তখন কিছু গবেষণা সংস্থা ও মিডিয়া ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে না ধরে নেতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরছে। এগুলো ঠিক না। পাঁচমাস রেমিট্যান্স বেড়ে এক মাস কমলে সেই এক মাসকেই অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হয়। অথচ আগের পাঁচ মাসের কোন খবর নেই। একইভাবে রিজার্ভ কমলেই হইচই পড়ে যায়। যখন বাড়ে তখন আর কোন নাম কথা নেই।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘রাজস্ব আহরণে বাংলাদেশের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নতুন আইনে রাজস্ব কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব ভোগান্তি দূর করতে দ্রুত অটোমেশনে যাওয়া দরকার আমাদের।’

অনুষ্ঠানে এমসিসিআইয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

ছবি

অর্থনীতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সরকার ব্যবসায়ীদের চিৎকার শুনছে না: আনোয়ার উল আলম চৌধুরী

ডিএসই ও সিএসইর নতুন ব্যবস্থা, এখন অনলাইনেই সব নথি জমা দেয়া যাবে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ভুটানের ট্রানজিটের চতুর্থ চালান খালাস

ছবি

ডিসেম্বরে ওয়ান স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস ও আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ চালু করবে ডিএসই

ছবি

ঢাকায় প্রথমবারের মতো হচ্ছে গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক আর বিএসইসির শীর্ষ ব্যক্তিরাও ব্যাংকের এমডি হতে পারবেন

ছবি

আর্থিক সেবার অন্তর্ভুক্ত ৭৫ শতাংশ গ্রাহকই ডিজিটাল সেবার বাইরে

ছবি

খেলাপি ঋণ ছাড়াল ৬ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা

ছবি

অপরিহার্য না হলে নির্বাচন পর্যন্ত বিদেশ যেতে পারবেন না ব্যাংক কর্মকর্তারা

ছবি

সূচকের পতন, কমেছে লেনদেনও

ছবি

ন্যূনতম মজুরি চান ট্যানারিশ্রমিকেরা

ছবি

খসড়া আইপিও রুলস নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক

ছবি

বেক্সিমকোর কারখানা- সদর দপ্তর নিলামে তুললো জনতা ব্যাংক

ছবি

দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ: বিশ্বব্যাংক

ছবি

অর্থনৈতিক শুমারিতে বাদ পড়েছিল ৩ লাখ ৬৫ হাজার ইউনিট

ছবি

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫৪ হাজার কোটি টাকা বাড়ছে

ছবি

২২৭ কোম্পানির দরপতন, সামান্য বেড়েছে লেনদেন

ছবি

প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাচ্ছে আরও ৮ মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান

ছবি

নভেম্বরের মধ্যে খেলাপি হওয়া ঋণের জন্যও নীতি সহায়তা

ছবি

এনবিআরের ১৭ জনের সম্পদ জব্দ, বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চাইবে দুদক

ছবি

অ্যামাজন ও আলিবাবায় সরাসরি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক: ২০২৭ সালের মধ্যে আন্তঃলেনদেনের আওতায় আসবে সব প্রতিষ্ঠান

ছবি

ডিসি-ইউএনও পাঠিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ কঠিন, প্রয়োজন রাজনৈতিক সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

পুঁজিবাজারে বড় উত্থান, লেনদেনও বেড়েছে

ছবি

ব্যাংক বন্ধ হলে তাৎক্ষণিক ২ লাখ টাকা পাবেন আমানতকারী

ছবি

কুড়িগ্রাম-গেলেফু করিডোরে আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা

ছবি

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে অর্থনীতি: এমসিসিআই

ছবি

বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ প্রায় ১৩৩ মিলিয়ন ডলার : ডিসিসিআই

রিটার্ন জমার সময় বাড়লো আরও একমাস

ছবি

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়াল এনবিআর

ছবি

মাস্টারকার্ডের সম্মাননা পেল ১৮ প্রতিষ্ঠান

ছবি

সারা দেশে উদ্যোক্তাদের ৮৭১ শিল্পপ্লট দিচ্ছে বিসিক

ছবি

৪ মাসে ১ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারেনি ৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ

ছবি

সূচকের উত্থান হলেও কমেছে লেনদেন

ছবি

সিটি ব্যাংকের এমডি পেলেন ‘সিইও অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ পুরস্কার

ছবি

ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনের ‘সিরামিক এক্সপো’

tab

করমুক্ত আয়সীমা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান এমসিসিআইর

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

রোববার, ১৯ জুন ২০২২

ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। রোববার (১৯ জুন) বাজেট পরবর্তী এক আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি এই আহ্বান জানান।

আলোচনায় তিনি বলেন, ‘যদিও করোনা সংক্রমন ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বিবেচনা করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা করা হয়েছে, তবুও বর্তমান চলমান বন্য অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বিচেনা করে এর আকার আরও বৃদ্ধিও প্রস্তাব করছি। এছাড়া মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনা করে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমরা মহামারী এবং পুনরুদ্ধারের মধ্যে একটি ক্রান্তিকালীন পর্যায়ে আছি। গত দুই বছরে মহামারীর মাঝখানে জাতীয় বাজেট কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে আমাদের কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। এমসিসিআই প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিফলন হিসাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতির জন্য সরকারকে সাধুবাদ। সরকার তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত উভয় কোম্পানির জন্য করপোরেট করের হার কমিয়েছে। এতে আমরা খুশি। তবে এই নিম্ন হারের জন্য নির্ধারিত শর্তগুলো বেশিরভাগ কোম্পানির জন্য পূরণ করা কঠিন হতে পারে। সরকার কিছু ক্ষেত্রে ট্যাক্স-ডিডাকশন-এ- সোর্স এর হার কমানোর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পারকুইজিট থ্রেশহোল্ডও বাড়িয়েছে।’

রপ্তানিমুখি শিল্পের আয়কর হারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য আয়কর হার যৌক্তিককরণ করা হয়েছে। যেহেতু উভয়ই বন্ডেড সুবিধা নিচ্ছে সেহেতু উৎপাদনকারী ইউনিটগুলোর মধ্যে উপ-কন্ট্রাক্টের অধীনে পণ্য সরবরাহের ওপর ভ্যাট ছাড়ের অনুমতি দেয়ার জন্য আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এটা সব রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত।’

ডিজিটাল মুদ্রার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রার ওপর একটি গবেষণা জন্য বাজেটে বলা হয়েছে এবং ডিজিটাল ব্যাংক চালু করার উপায় খোঁজাকে সময়োপযোগী বলে মনে হচ্ছে। আমরা আনন্দিত, সরকার আমাদের দাবির প্রতি মনোযোগ দিয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই বাজেটের অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের চাহিদার দিক থেকে উন্নতির জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বরাদ্দ এমন একটি ক্ষেত্র। হ্যাঁ, বরাদ্দ বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনা ভাইরাসের কথা বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরের থেকে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা থেকে এর বরাদ্দ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা করা হয়েছে। তারপরও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আমরা এই মুহূর্তে অতিক্রম করছি তাও দেশের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হবে। অতএব আমরা বর্তমান আকার থেকে একটি যুক্তিসংগত পরিমাণে সামাজিক সুরক্ষা নেট বাজেট বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।’

ব্যক্তিগত আয়কর সীমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমার আকার একই রকম থেকে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম, এটি বাড়ানো হবে। মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২৪ হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে, আমরা বিশ্বাস করি ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করা উচিত। সরকার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে কোন প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার অনুমতি দেয়। এ ধরনের কর্মকান্ড সবসময় সৎ উদ্যোক্তা ও নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করে।’

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, প্রস্তাবিত বাজেট পর্যবেক্ষণ করে চেম্বার আহ্বান জানাচ্ছে, প্রথমত, ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স অপসারণ করা উচিত কারণ এটি ডাবল ট্যাক্সেশনের দিকে পরিচালিত করে। দ্বিতীয়ত, নির্মাণ, অবকাঠামো ইত্যাদির মতো পরিষেবা যা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, তাদের কর-কাটা-অ্যাট-সোর্স (টিডিএস) হার কমানো উচিত। এই টিডিএস বর্তমান পরিস্থিতিতে পণ্য সরবরাহের টিডিএস স্তরে বজায় রাখা যেতে পারে। রপ্তানি নীতি ২০২১-২০২৪ অনুযায়ী, ২০২৪ অর্থবছরের মধ্যে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০ বিলিয়ন ডলার। তবুও বর্তমান রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল স্তর মাত্র ৭.৫ বিলিয়ন। ৮০ বিলিয়ন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে, ইডিএফ কমপক্ষে ১০ বিলিয়নে উন্নীত করা উচিত এবং সব রপ্তানিকারকদের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য করা উচিত। আমরা এখনো অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্সের আওতার বাইরে দেখতে পাচ্ছি, যার কারণে করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি করে করের বোঝা হয়ে পড়ছে। এমসিসিআই বিশ্বাস করে, এটি দ্রুত সমাধান করা উচিত।

আলোচনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়েদী সাত্তার, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘যখন বাংলাদেশ উন্নয়ন হচ্ছে তখন কিছু গবেষণা সংস্থা ও মিডিয়া ইতিবাচক বিষয়গুলো তুলে না ধরে নেতিবাচক বিষয়গুলো তুলে ধরছে। এগুলো ঠিক না। পাঁচমাস রেমিট্যান্স বেড়ে এক মাস কমলে সেই এক মাসকেই অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হয়। অথচ আগের পাঁচ মাসের কোন খবর নেই। একইভাবে রিজার্ভ কমলেই হইচই পড়ে যায়। যখন বাড়ে তখন আর কোন নাম কথা নেই।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘রাজস্ব আহরণে বাংলাদেশের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নতুন আইনে রাজস্ব কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব ভোগান্তি দূর করতে দ্রুত অটোমেশনে যাওয়া দরকার আমাদের।’

অনুষ্ঠানে এমসিসিআইয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

back to top