alt

অর্থ-বাণিজ্য

প্রতিবছর ৮৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার : সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

অদক্ষতার কারণে দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে সরকার বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। কর দিতে সক্ষম ব্যক্তি এবং অনেক করপোরেট কোম্পানির কাছ থেকে এই পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। কর প্রশাসন শক্তিশালী ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে প্রতি বছর এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব।

সোমবার (৩ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। ‘করপোরেট খাতে কর স্বচ্ছতা জাতীয় বাজেটে এর প্রভাব কী হতে পারে’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা কীভাবে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘দেশের জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে ২ লাখ ১৩ হাজার কোম্পানি তালিকাভূক্ত হলেও রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ৪৫ হাজার কোম্পানি। আবার দেশে যে পরিমাণ মানুষ কর দিতে পারে তার ৬৮ শতাংশ কর দিচ্ছে না। এই বিপুল অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী সরকার প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।’

এর আগে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত ৩৬ শতাংশ ছিল, সেখান থেকে এখন ৩০ শতাংশ হয়েছে উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির আকার যেভাবে বেড়েছে সেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি বাড়েনি। এরফলে এই খাতের বড় একটা কর আমাদের অর্থনীতির বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ লোক কর দেয়।’

এমন পরিস্থিতিতে কর-জিডিপির অনুপাত ৯ শতাংশে নেমে আসার তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংকের মানদ- অনুযায়ী, একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে অবশ্যই কর জিডিপির হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া উচিৎ। আমাদের কর আদায় পরিস্থিতি সেই মানে উন্নীত করতে হলে আমরা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছি।’

করপোরেট কর হার বেশি হওয়ায় কর ফাঁকির প্রবণতাও বাড়ছে বলে মনে করেন মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘আমাদের করপোরেট করহার এখনও এশিয়া এমনকি আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়াও সর্বোচ্চ। বেশিরভাগ দেশেই করপোরেট কর ১৫ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে এখনও শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত নয়, এমন কোম্পানির কর হার ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিবিদদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যে দেশে যত বেশি অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি রয়েছে, সেই দেশের কর আদায়ের হার ততই কম। কিন্তু ব্রাজিলে এই ধারণা উল্টে গেছে। যেমন দেশটির মোট অর্থনীতির ৩৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক, কিন্তু কর জিডিপির হার ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশের অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি ৩০ শতাংশ হলেও কর আদায় হয় জিডিপির মাত্র ৯ শতাংশ।’

প্রতি বছর যে পরিমাণ কর ফাঁকি হচ্ছে, তা কর প্রশাসনের অদক্ষতার কারণে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘যে দেশের কর প্রশাসন যত বেশি শক্তিশালী, সে দেশে কর আহরণ ব্যবস্থাও ততটাই মজবুত। প্রশাসন দক্ষ না হলে কর হার কমালেও ভালো ফল পাওয়া যায় না।’

সিপিডি ও খ্রিস্টিয়ান এইডের সহযোগিতায় এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।

সিপিডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘একটি যৌক্তিক, স্বচ্ছ, প্রগতিশীল এবং সুষম কর ব্যবস্থা একটা জাতীয় উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করপোরেট খাতের কর আদায় কীভাবে আরও স্বচ্ছ করা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

রংপুরে কোরবানীর পশুর চামড়া কেনা নিয়ে চরম নৈরাজ্য, লোকসানের আশংকা মৌসুমী ব্যাবসায়ীদের

ছবি

কোরবানীর পশুর চামড়া সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না

ছবি

সংকটে যশোরের চামড়া ব্যবসায়ীরা

ছবি

বিদেশ থেকে বছরে একবারই সোনা আনার সুযোগ, শুল্কও বাড়ল

ছবি

আইএমএফের ছকের বাজেট শিল্পের জন্য ‘হুমকি’: বিসিআই

ছবি

জুলাই থেকে নতুন হারে আয়কর: এনবিআর চেয়ারম্যান

শিক্ষা বাজেট: ‘গতানুগতিক’ ও ‘হতাশার’, বলছেন শিক্ষাবিদরা

ছবি

হঠাৎ করে অনেক সাহসী বাজেট দেয়া সম্ভব ছিল না: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

“ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব নিয়েছি”—বাজেট নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য

ছবি

বিনিময় হারে স্বস্তিতে মূল্যস্ফীতি কমার আশা দেখছেন গভর্নর আহসান মনসুর

ছবি

বাজেটে আইসিটি খাতে ‘সুখবর’ দেখতে পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা

ছবি

বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিদেশী উদ্যোক্তাদের

ছবি

ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে বাজেট ততটা আশাব্যঞ্জক নয়: ডিসিসিআই

ছবি

ওসমানী মিলনায়তনে বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা ও সচিবরা

ক্রেডিট কার্ডসহ ১২ সেবায় রিটার্ন নয়, লাগবে শুধু টিআইএন সনদ

ছবি

আবাসনে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল, বাড়ছে করহার

ছবি

নতুন বেতন কাঠামো নয়, বাড়ছে ‘বিশেষ সুবিধা’

মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজেটে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই: ঢাকা চেম্বার

ছবি

নোবেলসহ ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারের অর্থ করমুক্ত রাখার প্রস্তাব

ছবি

বাজেট: বৈষম্যহীনতার প্রতিশ্রুতি, পুরনো কৌশলেই ভরসা

কালো টাকাকে বৈধতা দেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের স্ববিরোধিতা: টিআইবি

দাম কমতে পারে

দাম বাড়তে পারে

ছবি

যাত্রী পরিবহনে খরচ কমাতে এয়ারলাইন্সে ভ্যাট ছাড়

ছবি

নতুন শুল্কে গলা টিপে ধরার শঙ্কায় ওটিটি ইন্ডাস্ট্রি

ছবি

ত্রৈমাসিক রিটার্ন, দলিল যাচাইয়ে নতুন কর বিধান

মূল্যস্ফীতির হার ২৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন

ছবি

বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা

ছবি

২০২৫-২৬ বাজেটে কালোটাকা সাদা রাখার প্রস্তাব, কর হার বাড়ল এলাকাভেদে

ছবি

ব্লু ইকোনমি ও বিজ্ঞান গবেষণায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

ছবি

বাড়লো না করমুক্ত আয়ের সীমা, কর ধাপ সাত থেকে ছয়ে, বাড়বে করের বোঝা

ছবি

বাজেটে বিনিয়োগকারীর জন্য সরাসরি প্রণোদনা নেই, শেয়ারবাজারে অনিশ্চয়তা

ছবি

ট্যারিফ ভ্যালুর বদলে ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক প্রস্তাব, বিপিসির শুল্ক হার কমানোর উদ্যোগ

ছবি

ছোট আমানতকারীদের স্বস্তি: আবগারি শুল্ক ছাড়ের সীমা বাড়ল

ছবি

মে মাসে রেমিটেন্স এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার

ছবি

৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট টিভিতে উপস্থাপন করছেন সালেহউদ্দিন আহমেদ

tab

অর্থ-বাণিজ্য

প্রতিবছর ৮৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার : সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সোমবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৩

অদক্ষতার কারণে দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে সরকার বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। কর দিতে সক্ষম ব্যক্তি এবং অনেক করপোরেট কোম্পানির কাছ থেকে এই পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। কর প্রশাসন শক্তিশালী ও আধুনিকায়নের মাধ্যমে প্রতি বছর এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব।

সোমবার (৩ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। ‘করপোরেট খাতে কর স্বচ্ছতা জাতীয় বাজেটে এর প্রভাব কী হতে পারে’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা কীভাবে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘দেশের জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে ২ লাখ ১৩ হাজার কোম্পানি তালিকাভূক্ত হলেও রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ৪৫ হাজার কোম্পানি। আবার দেশে যে পরিমাণ মানুষ কর দিতে পারে তার ৬৮ শতাংশ কর দিচ্ছে না। এই বিপুল অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী সরকার প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।’

এর আগে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত ৩৬ শতাংশ ছিল, সেখান থেকে এখন ৩০ শতাংশ হয়েছে উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির আকার যেভাবে বেড়েছে সেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি বাড়েনি। এরফলে এই খাতের বড় একটা কর আমাদের অর্থনীতির বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ লোক কর দেয়।’

এমন পরিস্থিতিতে কর-জিডিপির অনুপাত ৯ শতাংশে নেমে আসার তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংকের মানদ- অনুযায়ী, একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে অবশ্যই কর জিডিপির হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া উচিৎ। আমাদের কর আদায় পরিস্থিতি সেই মানে উন্নীত করতে হলে আমরা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছি।’

করপোরেট কর হার বেশি হওয়ায় কর ফাঁকির প্রবণতাও বাড়ছে বলে মনে করেন মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘আমাদের করপোরেট করহার এখনও এশিয়া এমনকি আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়াও সর্বোচ্চ। বেশিরভাগ দেশেই করপোরেট কর ১৫ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে এখনও শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত নয়, এমন কোম্পানির কর হার ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিবিদদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যে দেশে যত বেশি অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি রয়েছে, সেই দেশের কর আদায়ের হার ততই কম। কিন্তু ব্রাজিলে এই ধারণা উল্টে গেছে। যেমন দেশটির মোট অর্থনীতির ৩৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক, কিন্তু কর জিডিপির হার ৩২ শতাংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশের অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি ৩০ শতাংশ হলেও কর আদায় হয় জিডিপির মাত্র ৯ শতাংশ।’

প্রতি বছর যে পরিমাণ কর ফাঁকি হচ্ছে, তা কর প্রশাসনের অদক্ষতার কারণে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘যে দেশের কর প্রশাসন যত বেশি শক্তিশালী, সে দেশে কর আহরণ ব্যবস্থাও ততটাই মজবুত। প্রশাসন দক্ষ না হলে কর হার কমালেও ভালো ফল পাওয়া যায় না।’

সিপিডি ও খ্রিস্টিয়ান এইডের সহযোগিতায় এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে।

সিপিডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘একটি যৌক্তিক, স্বচ্ছ, প্রগতিশীল এবং সুষম কর ব্যবস্থা একটা জাতীয় উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করপোরেট খাতের কর আদায় কীভাবে আরও স্বচ্ছ করা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

back to top