alt

সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সংলাপ

আইএমএফের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে দেশে বৈষম্য আরও বাড়বে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

নাগরিক সমাজের মতামত না নিয়ে আইএমএফ এর কর্মসূচি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করলে বৈষম্য আরও বাড়বে। তাই যাদের জন্য আইএমএফের ঋণ নেয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে অথবা তাদের কল্যাণে যারা চিন্তা করে, সেসব প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের এক সংলাপে এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সভার বিষয় ছিল, ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে।’

সংলাপে অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কী? তারা সাইড অ্যাক্টর, বাজেট আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে আইএমএফের কিছু শর্ত থাকে। প্রয়োজনে হাত পাতি, দেয়ার দায়িত্ব আইএমএফের। অনেকে বলে দাতাগোষ্ঠী, এ শব্দের আমি ঘোরবিরোধী। কারণ তারা উন্নয়ন সহযোগী, আমরা ঋণ নিয়ে থাকি এবং সুদ আসলে পরিশোধ করি। বাজেটে উন্নয়ন সহযোগীদের অবদান মাত্র ২ শতাংশ।’

আইএমএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যাদের জন্য আইএমএফ এর কর্মসূচি নেয়া হয়, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এদের মতামত না নিয়ে আইএমএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশ আরও একটি বৈষম্যপূর্ণ দেশে পরিণত হবে।’

এর আগেও সরকার এমন অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেগুলো কার্যকর হয়নি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে চাল দেয়ার কর্মসূচির উদারহণ দিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি চাল দেয়ার কর্মসূচি নিয়ে সবাই অবগত নয়। এটা কীভাবে কাজ করছে আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি, চাহিদা মতো চালের সরবরাহ নেই। অনেক চালের বস্তা ওজনে কম, মুখ খোলা। চালের মান ভালো না। পরিমাণে দেয়া হয় কম। গরিব মানুষের সংযোগ হয়নি। অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের জন্য বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।’

সংলাপে আরও অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘আমরা আইএমএফের ওপর নির্ভরশীল নই, তারা ঋণ দিতে কোন শর্ত দেয়নি। তবে কিছু রিকুইয়ারমেন্ট দেয়।’

দারিদ্র্য প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের দরিদ্ররা বঞ্চিত। পদ্ধতিগতভাবে তারা বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছে। আমি গ্রামে যাই, সরকারি মালামাল নিয়ে, এগুলো কোথায় যায় জানি না। এটা খুঁজে বের করাও কঠিন।’

রেমিট্যান্সপ্রবাহ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স মন্দ নয়। এটার খবর একসময় কেউ রাখতো না। ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স একসময় হয়েছিল, তাই এটা নজরে আসছে। হুন্ডির সঙ্গে পারি না। হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চাপ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আমরা রিজার্ভ নিয়ে বাড়াবাড়ি করি না। কারণ ৫-৭ বছর আগে আমি নিজেও রিজার্ভ সম্পর্কে জানতামই না। ইদানীং যেহেতু রিজার্ভের পরিমাণটা বেড়ে গিয়েছিল সেজন্য সবার চোখে পড়েছে। আমরা কোনভাবেই মানতে চাই না রিজার্ভ কমবে। এটা চলমান প্রথা। রিজার্ভ বাড়বে, কমবে এটাই স্বাভাবিক। আগে তো কেউ খবরও রাখত না। এখন যেই রিজার্ভ আছে সেটা মন্দ নয়। আমাদের বর্তমানে ৪ থেকে পাঁচ মাসের আমদানি-রপ্তানির টাকা রিজার্ভে আছে।’

সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদ খাতুন বলেন, ‘পাঁচ দশকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে এটা ঠিক, কিন্তু সমতা বিধান করা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে এটা বেড়ে চলেছে।’

সিপিডির আরেকজন বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজেটের আকার নিয়ে অনেক বড় বড় কথা হয় থাকে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের বাজেট অনেক ছোট। বাজেটে ঋণখেলাপি ও কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িতদের প্রণোদনা না দিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে প্রণোদনা দিতে হবে। তা না হলে দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী পিছিয়েই থাকবে। আর বড় অংশকে পেছনে রেখে দেশের উন্নতি করা সম্ভব না।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সরকারের ভর্তুকির নামে জ্বালানি খাতে অর্থ অপচয়ের অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ভর্তুকি দিয়ে দেশের জ্বালানি খাতকে সংকটে ফেলে দেয়া হয়েছে। বিভিন্নভাবে টাকা পচারকারীদের পরিচয় গোপান করা হয়েছে।’

সংসদ সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল বলেছেন, ‘রিজার্ভসহ কিছু সমস্যার কারণে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে। তবে আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন করলে বৈষম্য বাড়বে।’

এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ অনুষ্ঠানে ছিলেন।

ছবি

বিজিএমইএ–মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক: শুল্ক কমাতে আহ্বান

ছবি

জুলাই-আগস্টে এডিপি বাস্তবায়ন ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ

ছবি

বিবিএসের নাম পরিবর্তন ও তদারক পরিষদ রাখার সুপারিশ

ছবি

শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করার তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের

ছবি

নগদ অর্থের ব্যবহার কমাতে আসছে একীভূত পেমেন্ট সিস্টেম: গভর্নর

ছবি

আড়াই মাসে ১৩৯ কোটি ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে আবেদনের সময় বাড়লো ২ নভেম্বর পর্যন্ত

ছবি

পুঁজিবাজারে সূচকের নামমাত্র উত্থান, লেনদেন আরও তলানিতে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে খরচ বাড়লো ৪১ শতাংশ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ভি সিরিজের নতুন ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

ছবি

বাংলাদেশে ব্লুটুথ হেডফোন ও ডেটা কেবল তৈরির কারখানা করবে চীন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার নিয়ম

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে অপো এ৫ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে সবজির সঙ্গে বেড়েছে চাল ও মুরগির দামও

ছবি

ডিসেম্বরের মধ্যে এনবিআরের কার্যক্রম দুই ভাগ হয়ে যাবে

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৭ মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২২ শতাংশ

ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা

ছবি

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানিতে মূসক অব্যাহতি

ছবি

অর্থ বিভাগের পরিপত্র: ৯ মাসে ৬০ শতাংশ খরচ করতে না পারলে অর্থছাড় বন্ধ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে মিতসুবিশি’র নতুন এক্সপ্যান্ডার ব্ল্যাক সিরিজ

ছবি

বেসিসের নতুন প্রশাসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ হাফিজুল্লাহ্ খান

ছবি

দারাজ বাংলাদেশের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯.৯ অ্যানিভার্সারি মেগা সেল

ছবি

শাওমি বাজারে নিয়ে এলো রেডমি প্যাড ২

ছবি

নভেম্বরের মধ্যেই একীভূত হবে পাঁচ ব্যাংক

tab

news » business

সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সংলাপ

আইএমএফের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে দেশে বৈষম্য আরও বাড়বে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সোমবার, ১৫ মে ২০২৩

নাগরিক সমাজের মতামত না নিয়ে আইএমএফ এর কর্মসূচি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করলে বৈষম্য আরও বাড়বে। তাই যাদের জন্য আইএমএফের ঋণ নেয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে অথবা তাদের কল্যাণে যারা চিন্তা করে, সেসব প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের এক সংলাপে এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সভার বিষয় ছিল, ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে।’

সংলাপে অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কী? তারা সাইড অ্যাক্টর, বাজেট আমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে আইএমএফের কিছু শর্ত থাকে। প্রয়োজনে হাত পাতি, দেয়ার দায়িত্ব আইএমএফের। অনেকে বলে দাতাগোষ্ঠী, এ শব্দের আমি ঘোরবিরোধী। কারণ তারা উন্নয়ন সহযোগী, আমরা ঋণ নিয়ে থাকি এবং সুদ আসলে পরিশোধ করি। বাজেটে উন্নয়ন সহযোগীদের অবদান মাত্র ২ শতাংশ।’

আইএমএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যাদের জন্য আইএমএফ এর কর্মসূচি নেয়া হয়, তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এদের মতামত না নিয়ে আইএমএফ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশ আরও একটি বৈষম্যপূর্ণ দেশে পরিণত হবে।’

এর আগেও সরকার এমন অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেগুলো কার্যকর হয়নি। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে চাল দেয়ার কর্মসূচির উদারহণ দিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে ৩০ কেজি চাল দেয়ার কর্মসূচি নিয়ে সবাই অবগত নয়। এটা কীভাবে কাজ করছে আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি, চাহিদা মতো চালের সরবরাহ নেই। অনেক চালের বস্তা ওজনে কম, মুখ খোলা। চালের মান ভালো না। পরিমাণে দেয়া হয় কম। গরিব মানুষের সংযোগ হয়নি। অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের জন্য বেশি বরাদ্দ দিতে হবে।’

সংলাপে আরও অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘আমরা আইএমএফের ওপর নির্ভরশীল নই, তারা ঋণ দিতে কোন শর্ত দেয়নি। তবে কিছু রিকুইয়ারমেন্ট দেয়।’

দারিদ্র্য প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের দরিদ্ররা বঞ্চিত। পদ্ধতিগতভাবে তারা বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছে। আমি গ্রামে যাই, সরকারি মালামাল নিয়ে, এগুলো কোথায় যায় জানি না। এটা খুঁজে বের করাও কঠিন।’

রেমিট্যান্সপ্রবাহ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স মন্দ নয়। এটার খবর একসময় কেউ রাখতো না। ৫০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স একসময় হয়েছিল, তাই এটা নজরে আসছে। হুন্ডির সঙ্গে পারি না। হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চাপ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আমরা রিজার্ভ নিয়ে বাড়াবাড়ি করি না। কারণ ৫-৭ বছর আগে আমি নিজেও রিজার্ভ সম্পর্কে জানতামই না। ইদানীং যেহেতু রিজার্ভের পরিমাণটা বেড়ে গিয়েছিল সেজন্য সবার চোখে পড়েছে। আমরা কোনভাবেই মানতে চাই না রিজার্ভ কমবে। এটা চলমান প্রথা। রিজার্ভ বাড়বে, কমবে এটাই স্বাভাবিক। আগে তো কেউ খবরও রাখত না। এখন যেই রিজার্ভ আছে সেটা মন্দ নয়। আমাদের বর্তমানে ৪ থেকে পাঁচ মাসের আমদানি-রপ্তানির টাকা রিজার্ভে আছে।’

সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদ খাতুন বলেন, ‘পাঁচ দশকে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে এটা ঠিক, কিন্তু সমতা বিধান করা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে এটা বেড়ে চলেছে।’

সিপিডির আরেকজন বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজেটের আকার নিয়ে অনেক বড় বড় কথা হয় থাকে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের বাজেট অনেক ছোট। বাজেটে ঋণখেলাপি ও কর ফাঁকির সঙ্গে জড়িতদের প্রণোদনা না দিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে প্রণোদনা দিতে হবে। তা না হলে দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী পিছিয়েই থাকবে। আর বড় অংশকে পেছনে রেখে দেশের উন্নতি করা সম্ভব না।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সরকারের ভর্তুকির নামে জ্বালানি খাতে অর্থ অপচয়ের অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ভর্তুকি দিয়ে দেশের জ্বালানি খাতকে সংকটে ফেলে দেয়া হয়েছে। বিভিন্নভাবে টাকা পচারকারীদের পরিচয় গোপান করা হয়েছে।’

সংসদ সদস্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল বলেছেন, ‘রিজার্ভসহ কিছু সমস্যার কারণে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে। তবে আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন করলে বৈষম্য বাড়বে।’

এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সিপিডি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ অনুষ্ঠানে ছিলেন।

back to top