alt

মতিঝিল আইডিয়ালে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের ‘অসন্তোষ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪

ঈদের ছুটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ভাতা ও চার্জ চাপিয়ে দিয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানকেও কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত জানুয়ারিতে নতুন ভর্তি ও পূণভর্তির সময় যেসব ভাতা ও চার্জ নেয়া হয়েছিল সেগুলির অধিকাংশই নতুন করে ধার্য করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির তিন ক্যাম্পাসের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন ও অন্য ফি আদায়ের বিবরণ’ শীর্ষক এক নোটিশে দেখা গেছে, বার্ষিকী ২০০ টাকা, আর্থিক সাহায্য ২০০ টাকা, রিপোর্ট কার্ড ৩০০ টাকা, বিদায় অনুষ্ঠান ১০০ টাকা ও জাতীয় অনুষ্ঠান ২০০ টাকা ধরা হয়েছে। আর ডায়েরি, সিলেবাস ও ওয়াসা পৌরকর, জেনারেটর, আইডিকার্ড ও অন্য ৯৫০ টাকা। সবমিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৫০ টাকা। মাসিক বেতনের বাইরে এই টাকা অতিরিক্ত হিসেবে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘বাড়তি চার্জ ও ফি আদায়ের বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

গত ২৯ মার্চ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীর কাছে বিভিন্ন অঙ্কের ফি ও টাকা ধার্য করা হয়। শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিনমাসের মধ্যে হঠাৎ এ ধরণের ব্যয় ধার্য করায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মধ্যে।

এ বিষয়ে ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গার্ডিয়ান সোসাইটির’ সভাপতি ও রামপুরা বনশ্রী শাখার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কেএম সাইফুর রহমান (খোকন) সংবাদকে বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ভর্তির সময় নানা অজুহাতে আট থেকে দশ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিয়ে থাকে। এরপর দু’তিন মাস পরই এভাবে শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা ধার্য করা ‘অমানবিক’। তিনি শিক্ষার নামে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ‘বাণিজ্য’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী সংবাদকে বলেছেন, ‘স্কুলগুলি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই তাদের যাবতীয় ফি নিয়ে থাকে। বছরের তিনমাসের মাথায় নতুন করে কোনো ফি আদায়ের সুযোগ নেই। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে এ ধরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখা (ক্যাম্পাস) রয়েছে। এর প্রধান ক্যাম্পাস মতিঝিলে। আর রামপুরা বনশ্রী ও মুগদা সড়কের পাশে দুটি শাখা ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তিন ক্যাম্পাসে প্রথম শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।

প্রতিষ্ঠানটির দু’জন শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সাবেক দু’জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি অন্তত দুই হাজার টাকা করে আদায় হলে মোট প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আদায় হয়। বেতনভাতার অতিরিক্ত হিসেবে বছরে দু’তিনবার এভাবে অভিভাবকদের ‘জিম্মি’ করে টাকা আদায় করা হয়।

একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভর্নিং বডির ‘সম্মতির’ ভিত্তিতেই এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তা ব্যয় দেখানো হয়, গভর্নিং বডির বিভিন্ন সভার ‘সম্মানী’, ‘আপ্যায়ন’ ও বিভিন্ন ‘কেনাকাটার’ নামে। শিক্ষকরাও নানা ‘অজুহাত’ দেখিয়ে এই টাকার ‘ভাগ নিয়ে থাকেন। নির্বাচিত গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে ‘অ্যাডহক’ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

একাধিক শিক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখায় প্রায় সাতশ’ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত আছেন মাত্র ১০৯ জন। বাকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকেই দিতে হয়। এ খাত দেখিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ আদায় করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির গভর্ণিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘বর্তমানে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক পুরো কার্যক্রম জামায়াতপন্থী লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। তারা যা খুশি তাই করছেন।’

শিক্ষা সফরের নামে ৪২ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়া এক অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখার নবম ও দশম শ্রেণীর ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে মোট শিক্ষার্থী (নবমে ২,৬০০ এবং দশমে ২,৬৫০ জন) পাঁচ হাজার ২৫০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ শিক্ষা সফরের জন্য জনপ্রতি দুই হাজার টাকা চাঁদা নেয়া হয়। সেই হিসেবে মোট চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা।

এর মধ্যে দুপুরের খাবার ও দু’বেলা নাস্তাসহ সবমিলিয়ে মোট ৬৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। কামরুজ্জামান নামের এক শিক্ষক ও তার সহকারীরা ‘আত্নসাত’ করেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগগুলির বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ধরেনি।

ছবি

রাকসুতেও শিবিরের জয়-জয়কার জাহিদুল ইসলাম

ছবি

রাকসুতে শিবিরের প্যানেল থেকে বিজয়ী হলেন সনাতন ধর্মালম্বী সুজন

ছবি

রাকসু: কোন পদে কে জয়ী

ছবি

একচেটিয়া জয় শিবিরের, ছাত্রদলের ভরাডুবি

ছবি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: র‌্যাগিং, শৃঙ্খলাভঙ্গসহ বিভিন্ন দায়ে ১২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

ছবি

জবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’ হরণের অভিযোগ হিন্দু শিক্ষার্থীদের

ভিপি-জিএস শিবিরের, এজিএস ছাত্রদলের

ছবি

আনন্দ, অভিযোগে রাকসুর ভোট শেষ, ফলের অপেক্ষা

ছবি

স্টামফোর্ডে সাংবাদিকতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক কর্মশালা অনু‌ষ্ঠিত

ছবি

স্টামফোর্ডে নারী স্বাস্থ্য সচেতনতা অনুষ্ঠান: পিসিওএস ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতার আহ্বান

ছবি

আনন্দ, অভিযোগে রাকসুর ভোট শেষ, ফলের অপেক্ষা

ছবি

রাকসু: ভোটার আসার আগেই শতাধিক ব্যালটে স্বাক্ষর, কারচুপির অভিযোগ

ছবি

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে শেষ হলো রাকসুর ভোট, ফলাফলের অপেক্ষা

ছবি

রাকসু: ৫ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ‘৬০ শতাংশ’

ছবি

রাকসুর ভোট: বাইরে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের অবস্থান

ছবি

রাকসু: ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছাত্রদলের

ছবি

রাকসুতে একচেটিয়া জয় শিবিরের, ছাত্রদলের ভরাডুবি

রাকসু: ভোট দিলেন ছাত্রশিবিরের ভিপি-জিএস প্রার্থী, তারপর যা বললেন

ছবি

রাকসু: ভোট দিয়ে যা বললেন ছাত্রদলের ভিপি-জিএস প্রার্থী

ছবি

রাকসু: আড়াই ঘন্টায় ভোট পড়েছে ২৫ শতাংশ

ছবি

চাকসু নির্বাচনে একচেটিয়া জয় শিবিরের

ছবি

রাকসু: ভোট গ্রহণ শুরু

ছবি

রাকসু: ৩৫ বছর পর ভোট, ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

ছবি

চাকসু: উৎসবমুখর ভোট, অনিয়মের অভিযোগ

ছবি

চাকসু নির্বাচনে ভোট গণনার সময় ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের মুখোমুখি উত্তেজনা

ছবি

অনিয়মের অভিযোগ তুলেও ভোট বর্জন নয়: চবি ছাত্রদলের অবস্থান

ছবি

চাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ, বিচার ও তদন্তের দাবি

চাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ, বিচার ও তদন্তের দাবি

ছবি

রাকসু ভোটে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই, ১৭ ঘন্টায় ফল: নির্বাচন কমিশন

ছবি

রাকসু: ভোটে আইন শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা ‘করছেন না’ আরএমপি কমিশনার

ছবি

রাকসু: ভোট পর্যবেক্ষণে ১০ সদস্যের কমিটি

চাকসু: নানা অভিযোগ, ভোট বর্জন ‘ইনসানিয়াত বিপ্লব’ শিক্ষার্থী সংগঠনের

চাকসু নির্বাচন: ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগত প্রবেশের’ অভিযোগ শিবির ও ছাত্রদলের

চাকসু নির্বাচন: ভোটের কালি ‘মুছে যাওয়ার’ অভিযোগ ছাত্রদলের তৌফিকের

ছবি

৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন, ‘মুক্ত ক্যাম্পাসের’ স্বপ্ন নিয়ে ভোট দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা

ছবি

রাকসু: বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করলো ছাত্রদল, নিজেও নিলেন অব্যাহতি

tab

মতিঝিল আইডিয়ালে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের ‘অসন্তোষ’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪

ঈদের ছুটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ভাতা ও চার্জ চাপিয়ে দিয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানকেও কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত জানুয়ারিতে নতুন ভর্তি ও পূণভর্তির সময় যেসব ভাতা ও চার্জ নেয়া হয়েছিল সেগুলির অধিকাংশই নতুন করে ধার্য করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির তিন ক্যাম্পাসের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন ও অন্য ফি আদায়ের বিবরণ’ শীর্ষক এক নোটিশে দেখা গেছে, বার্ষিকী ২০০ টাকা, আর্থিক সাহায্য ২০০ টাকা, রিপোর্ট কার্ড ৩০০ টাকা, বিদায় অনুষ্ঠান ১০০ টাকা ও জাতীয় অনুষ্ঠান ২০০ টাকা ধরা হয়েছে। আর ডায়েরি, সিলেবাস ও ওয়াসা পৌরকর, জেনারেটর, আইডিকার্ড ও অন্য ৯৫০ টাকা। সবমিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৫০ টাকা। মাসিক বেতনের বাইরে এই টাকা অতিরিক্ত হিসেবে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘বাড়তি চার্জ ও ফি আদায়ের বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’

গত ২৯ মার্চ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীর কাছে বিভিন্ন অঙ্কের ফি ও টাকা ধার্য করা হয়। শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিনমাসের মধ্যে হঠাৎ এ ধরণের ব্যয় ধার্য করায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মধ্যে।

এ বিষয়ে ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গার্ডিয়ান সোসাইটির’ সভাপতি ও রামপুরা বনশ্রী শাখার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কেএম সাইফুর রহমান (খোকন) সংবাদকে বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ভর্তির সময় নানা অজুহাতে আট থেকে দশ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিয়ে থাকে। এরপর দু’তিন মাস পরই এভাবে শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা ধার্য করা ‘অমানবিক’। তিনি শিক্ষার নামে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ‘বাণিজ্য’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী সংবাদকে বলেছেন, ‘স্কুলগুলি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই তাদের যাবতীয় ফি নিয়ে থাকে। বছরের তিনমাসের মাথায় নতুন করে কোনো ফি আদায়ের সুযোগ নেই। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে এ ধরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখা (ক্যাম্পাস) রয়েছে। এর প্রধান ক্যাম্পাস মতিঝিলে। আর রামপুরা বনশ্রী ও মুগদা সড়কের পাশে দুটি শাখা ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তিন ক্যাম্পাসে প্রথম শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।

প্রতিষ্ঠানটির দু’জন শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সাবেক দু’জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি অন্তত দুই হাজার টাকা করে আদায় হলে মোট প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আদায় হয়। বেতনভাতার অতিরিক্ত হিসেবে বছরে দু’তিনবার এভাবে অভিভাবকদের ‘জিম্মি’ করে টাকা আদায় করা হয়।

একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভর্নিং বডির ‘সম্মতির’ ভিত্তিতেই এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তা ব্যয় দেখানো হয়, গভর্নিং বডির বিভিন্ন সভার ‘সম্মানী’, ‘আপ্যায়ন’ ও বিভিন্ন ‘কেনাকাটার’ নামে। শিক্ষকরাও নানা ‘অজুহাত’ দেখিয়ে এই টাকার ‘ভাগ নিয়ে থাকেন। নির্বাচিত গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে ‘অ্যাডহক’ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

একাধিক শিক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখায় প্রায় সাতশ’ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত আছেন মাত্র ১০৯ জন। বাকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকেই দিতে হয়। এ খাত দেখিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ আদায় করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির গভর্ণিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘বর্তমানে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক পুরো কার্যক্রম জামায়াতপন্থী লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। তারা যা খুশি তাই করছেন।’

শিক্ষা সফরের নামে ৪২ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়া এক অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখার নবম ও দশম শ্রেণীর ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে মোট শিক্ষার্থী (নবমে ২,৬০০ এবং দশমে ২,৬৫০ জন) পাঁচ হাজার ২৫০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ শিক্ষা সফরের জন্য জনপ্রতি দুই হাজার টাকা চাঁদা নেয়া হয়। সেই হিসেবে মোট চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা।

এর মধ্যে দুপুরের খাবার ও দু’বেলা নাস্তাসহ সবমিলিয়ে মোট ৬৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। কামরুজ্জামান নামের এক শিক্ষক ও তার সহকারীরা ‘আত্নসাত’ করেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগগুলির বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ধরেনি।

back to top