alt

ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

খাসি তুমি কার!

প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় : সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ টি খাসি দিয়ে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। ঘোষণার পর সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। প্রশাসন আপ্যায়নের ঘোষণা দিলেও আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রশাসনের অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই আয়োজনে প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ফেসবুকে ট্রোল করছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, আর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ। এঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের খাসি আসলে কার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্যায়নের ঘোষণা দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৫ টি খাসির মাংস রান্না করে সাথে পোলাও-কোরমার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়। এর জন্য দেড় লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ৬ টি খাসি কিনেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন। ৬ টি খাসির মূল্য ৭০ হাজার টাকার বেশি নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ৬ টি খাসি থেকে ৬৫-৬৮ কেজির মতো মাংস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মাংস এবং পোলাও রান্না করে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিতরণও করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের পাতে মাংস দেয়া হয় মাত্র ২ পিস করে। সাথে পোলাও ও কোমল পানীয় এবং একটি করে ডিম দেয়া হয়।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রচার করছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের ক্রেডিট নিতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করানো হচ্ছে। তারা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ছাত্রলীগ আপ্যায়ন করেছে বলে প্রচার করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট করে প্রশাসনের আয়োজন কোথায় জানতে চেয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের উদ্যোগটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এর জন্য তারা অর্থও বরাদ্দ দিয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে শাখা ছাত্রলীগ।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ব্যানার টানিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়েছে বলে পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। কোনো কোনো পোস্টে শিক্ষার্থীদের জন্য জবি প্রশাসন আপ্যায়নের কোনো ব্যবস্থা করেনি জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে সব আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্ট আয়োজন করার আগ্রহ অনেক আগেই প্রকাশ করেন। ঈদের কিছুদিন আগে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আক্তার হোসাইনও একটি আয়োজনের বিষয়ে অনুরোধ করে প্রশাসনকে। তখন প্রশাসন থেকে বলা হয় উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীরা আবেদন দিলে ব্যবস্থা করা যাবে। পরে শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আবেদন দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবেদন মঞ্জুর করে।

ফিস্ট আয়োজনে উপাচার্যের আগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ঈদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আপ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তা বণ্টন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে আয়োজনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। রাতেও আমাদের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার ও মনির উপস্থিত থেকে দেখাশোনা করেছে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পক্ষ থেকে এমন একটি আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আমরা অনেক আগেই করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যকে জানালে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করি, প্রশাসন থেকে কন্ট্রিবিউশানও করা হয় বাকি টাকা আমরা ম্যানেজ করি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলছেন, আয়োজনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয়ই অর্থায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘আয়োজন আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে হয়েছে। অর্থায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও করেছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এই মহানুভবতার একটি কাজ করেছেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আয়োজনের দায়িত্বও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।’

ছবি

আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত নিয়ন্ত্রণে নতুন উদ্যোগ, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে পরিচয়পত্র

ছবি

আমেরিকা ও ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে : ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন ছাত্রশিবিরের নেতা এস এম ফরহাদ

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে এক যুগ‌ ধরে শ্রেণিকক্ষ সংকট

ছবি

বুয়েটে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত

ছবি

বুয়েটে ছাত্রলীগের সদস্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

ছবি

পাহাড়ের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জবি শিক্ষার্থীদের

ছবি

১১০ দিন পর শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

ক্যাম্পাসে এই স্বস্তি বজায় থাকুক:ঢাবির ক্লাসে ফিরে শিক্ষার্থীরা

ছবি

ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বৈঠকে শিবির সভাপতির পরিচয় নিয়ে বিতর্ক

ছাত্ররাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা নয়, সংস্কার চায় ঢাবির সংগঠনগুলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রশিবির

ঢাবিতে হত্যার ঘটনায় ফজলুল হক হলের প্রভোস্টকে পরিবর্তন

জাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে জবি উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল

ছবি

জাবিতে গণপিটুনিতে ছাত্রনেতা হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ছবি

শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছয়জনের পরিচয়

জাবিতে ছাত্রনেতা হত্যাকান্ডে সংশ্লিষ্টতায় ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা: সমন্বয়ক লাবিবকে অব্যাহতি

ছবি

ঢাবিতে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি ছাত্র সংগঠনগুলোর

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের অতিথিকক্ষে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

জাহাঙ্গীরনগরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ

ছবি

বাউবির উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেছেন অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা

ছবি

টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি

‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই?’— শিক্ষার্থী-শিক্ষক সংলাপ আজ

ছবি

জাবিতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পেলেন ড. এ বি এম আজিজুর রহমান

ছবি

রাজশাহীতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতার ওপর হামলা, হাসপাতালে মৃত্যু

ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্যেন বোস পাঠাগারে হামলা: সাবেক সদস্যদের নিন্দা ও পুনরায় চালুর দাবি

ছবি

জুলাই বিপ্লব’ ২৪ এর শহীদদের স্মরণে ‘মেহফিল-ই ইনকিলাব’

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ভার্সিটির নতুন উপ-উপাচার্য ডাঃ মুজিবুর রহমান

জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহীসহ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ

ছবি

ডুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ

জাবিতে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করলেন জিয়া হলের প্রভোস্ট

tab

ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

খাসি তুমি কার!

প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪

পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ টি খাসি দিয়ে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। ঘোষণার পর সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। প্রশাসন আপ্যায়নের ঘোষণা দিলেও আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রশাসনের অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই আয়োজনে প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ফেসবুকে ট্রোল করছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, আর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ। এঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের খাসি আসলে কার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্যায়নের ঘোষণা দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৫ টি খাসির মাংস রান্না করে সাথে পোলাও-কোরমার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হবে বলে জানানো হয়। এর জন্য দেড় লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ৬ টি খাসি কিনেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন। ৬ টি খাসির মূল্য ৭০ হাজার টাকার বেশি নয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ৬ টি খাসি থেকে ৬৫-৬৮ কেজির মতো মাংস হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মাংস এবং পোলাও রান্না করে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিতরণও করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের পাতে মাংস দেয়া হয় মাত্র ২ পিস করে। সাথে পোলাও ও কোমল পানীয় এবং একটি করে ডিম দেয়া হয়।

এদিকে শাখা ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রচার করছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের ক্রেডিট নিতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কর্মীদের দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করানো হচ্ছে। তারা প্রশাসনকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে ছাত্রলীগ আপ্যায়ন করেছে বলে প্রচার করছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মীরা ফেসবুকে পোস্ট করে প্রশাসনের আয়োজন কোথায় জানতে চেয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের উদ্যোগটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এর জন্য তারা অর্থও বরাদ্দ দিয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে শাখা ছাত্রলীগ।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ব্যানার টানিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়েছে বলে পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। কোনো কোনো পোস্টে শিক্ষার্থীদের জন্য জবি প্রশাসন আপ্যায়নের কোনো ব্যবস্থা করেনি জানিয়ে ছাত্রলীগ থেকে সব আয়োজন করা হয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা জানান, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিস্ট আয়োজন করার আগ্রহ অনেক আগেই প্রকাশ করেন। ঈদের কিছুদিন আগে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আক্তার হোসাইনও একটি আয়োজনের বিষয়ে অনুরোধ করে প্রশাসনকে। তখন প্রশাসন থেকে বলা হয় উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীরা আবেদন দিলে ব্যবস্থা করা যাবে। পরে শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আবেদন দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবেদন মঞ্জুর করে।

ফিস্ট আয়োজনে উপাচার্যের আগ্রহের বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ঈদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আপ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তা বণ্টন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে আয়োজনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। রাতেও আমাদের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার ও মনির উপস্থিত থেকে দেখাশোনা করেছে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পক্ষ থেকে এমন একটি আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আমরা অনেক আগেই করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যকে জানালে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করি, প্রশাসন থেকে কন্ট্রিবিউশানও করা হয় বাকি টাকা আমরা ম্যানেজ করি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলছেন, আয়োজনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয়ই অর্থায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘আয়োজন আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে হয়েছে। অর্থায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও করেছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এই মহানুভবতার একটি কাজ করেছেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আয়োজনের দায়িত্বও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।’

back to top