image

আনন্দ মোহন কলেজে সংঘর্ষ: সিট নবায়ন ইস্যুতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে হলের সিট নবায়নকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। রোববার বিকাল ৫টা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে, যাতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার সময় ক্যাম্পাসজুড়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় কাজ করছে প্রশাসন।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, হলের সিট নবায়নের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত চার্জ অন্যান্য কলেজের তুলনায় বেশি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের দাবি ছিল চার্জ কমানোর। রোববার দুপুর আড়াইটায় বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আকরাম হোসাইন অপু নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের আশপাশের অন্যান্য কলেজে সিট চার্জ ৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের ৭ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এটি কমানোর দাবিতে আমরা অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্যার আমাদের সঙ্গে না বসে ছাত্রদল ও সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে দুঃখ প্রকাশ করলেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।”

তিনি আরও বলেন, “হামলায় আমাদের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।”

ছাত্রদলের বক্তব্য:

অন্যদিকে, আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হাজ্জাতুল হাসান মুন অভিযোগ করেন, “হলে এখনো ছাত্রলীগের পদধারী নেতাকর্মীরা রয়েছে। তারা অন্যায়ভাবে অধ্যক্ষকে আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, তাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমন্বয়করা রয়েছেন।

সমন্বয়কের মন্তব্য:

কলেজে চলমান ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আশিকুর রহমান বলেন, “এটি মূলত নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণেই হয়েছে। আমাদের উচিত বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।”

প্রশাসনের বক্তব্য:

কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ বলেন, “হলের সিট নবায়ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়েছে।”

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান জানান, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা কাজ করছি। সেনাবাহিনীও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাস এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চলছে।”

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে মেহেদী হাসান শিমুল, আল আমিন, সবুজ, রিফাত, তানভীরসহ আরও কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তবে তাদের আঘাত কতটা গুরুতর তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হলের সিট নবায়নকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা থেকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

‘ক্যাম্পাস’ : আরও খবর

সম্প্রতি