কয়েক দফা পেছানোর পর ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে ঘোষিত ৩১ জুলাইয়ের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করা হয়েছে।
২৯ জুন রাত ৯টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ফেইসবুক পেইজে প্রকাশিত এক ঘোষণায় ৩০ এপ্রিল ঘোষিত তফসিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্য স্বাক্ষরিত ওই ঘোষণায় বলা হয়, উপাচার্য ও জাকসু সভাপতি অধ্যাপক কামরুল আহসানের চিঠির ভিত্তিতে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
ঘোষণায় বলা হয়, জাকসু ও হল সংসদের পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনের তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে।
কমিশন সদস্য অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার বলেন, ২৬ জুনের এক সভায় উপাচার্য নির্বাচনের তারিখ পেছানোর প্রস্তাব দেন। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে চিঠি আসে, যার ভিত্তিতে কমিশন তফসিল স্থগিত করে।
উপাচার্য যেহেতু জাকসুর সভাপতি, তাই গঠনতন্ত্র অনুসারে তিনিই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট দিনে ভোট হবে কি না, তা নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে শুরু থেকেই শঙ্কা ছিল।
গত ২৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপাচার্য কামরুল আহসান বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, বিচারকার্য শেষ করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারব। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় কিছু সময়ের প্রয়োজন। আপাতত জাকসু পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে যাচ্ছে। এতে অংশীজনদের ঐকমত্য রয়েছে।”
তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, জাকসু নিয়ে মতপার্থক্য কাটলেও নির্বাচন কেন পিছিয়ে গেল।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, “গণ অভ্যুত্থানের পর প্রশাসনের অঙ্গীকার ছিল বিচার আর জাকসু। বারবার তারা ব্যর্থ হয়েছে। আস্থা কমছে। এবারই শেষ সুযোগ দিয়েছি। এরপর আমরা যাব এক দফায়।”
ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতা বলেন, “জুলাইয়ে হামলার বিচার একটি নৈতিক দাবি। হামলাকারীরা এখনো ক্যাম্পাসে, হলে, এমনকি বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনে। বিচার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা পরিস্থিতি বানচাল করতে পারে।”
ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক বলেন, “জাকসু সংস্কার যেনতেনভাবে হয়েছে। ভোটার তালিকা ও আয়োজন—সবকিছুতে স্বচ্ছতার অভাব আছে।”
বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে না চালিয়ে উল্টো একটিকে আরেকটির বিপরীতে দাঁড় করানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) অমর্ত্য রায়।
তিনি বলেন, “জাকসু পেছানো এক ধরনের বার্তা দেয় যে নির্বাচন আর হবে না। প্রশাসন ও কিছু ছাত্রসংগঠনের ইচ্ছায়ই এমনটি হয়েছে। বিচার ও জাকসু একসঙ্গে করা সম্ভব ছিল। আমরা চাই—দুটোই তার সময়মতো হোক।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ১০ জানুয়ারি প্রকাশ হয় খসড়া ভোটার তালিকা। ফেব্রুয়ারিতে তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি। এরপর ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষিত হলেও ভোটের জন্য দেওয়া হয় ৩১ জুলাই তারিখ—এবার যা স্থগিত হলো।
উপাচার্য বলেন, “আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। বিচার ও জাকসু সংস্কার—দুই কাজই একসঙ্গে করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দেখলেই বুঝবে, জুলাই পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক কিছু করেছি। কিছুটা সময় লাগছে, সেটাই শুধু।”
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
কয়েক দফা পেছানোর পর ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে ঘোষিত ৩১ জুলাইয়ের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করা হয়েছে।
২৯ জুন রাত ৯টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ফেইসবুক পেইজে প্রকাশিত এক ঘোষণায় ৩০ এপ্রিল ঘোষিত তফসিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। নির্বাচন কমিশনের পাঁচ সদস্য স্বাক্ষরিত ওই ঘোষণায় বলা হয়, উপাচার্য ও জাকসু সভাপতি অধ্যাপক কামরুল আহসানের চিঠির ভিত্তিতে কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
ঘোষণায় বলা হয়, জাকসু ও হল সংসদের পুনঃনির্ধারিত নির্বাচনের তারিখ যথাসময়ে জানানো হবে।
কমিশন সদস্য অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার বলেন, ২৬ জুনের এক সভায় উপাচার্য নির্বাচনের তারিখ পেছানোর প্রস্তাব দেন। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে চিঠি আসে, যার ভিত্তিতে কমিশন তফসিল স্থগিত করে।
উপাচার্য যেহেতু জাকসুর সভাপতি, তাই গঠনতন্ত্র অনুসারে তিনিই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট দিনে ভোট হবে কি না, তা নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে শুরু থেকেই শঙ্কা ছিল।
গত ২৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ পেছানোর ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপাচার্য কামরুল আহসান বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, বিচারকার্য শেষ করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারব। তবে নানা প্রতিবন্ধকতায় কিছু সময়ের প্রয়োজন। আপাতত জাকসু পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে যাচ্ছে। এতে অংশীজনদের ঐকমত্য রয়েছে।”
তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, জাকসু নিয়ে মতপার্থক্য কাটলেও নির্বাচন কেন পিছিয়ে গেল।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্যসচিব তৌহিদ সিয়াম বলেন, “গণ অভ্যুত্থানের পর প্রশাসনের অঙ্গীকার ছিল বিচার আর জাকসু। বারবার তারা ব্যর্থ হয়েছে। আস্থা কমছে। এবারই শেষ সুযোগ দিয়েছি। এরপর আমরা যাব এক দফায়।”
ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতা বলেন, “জুলাইয়ে হামলার বিচার একটি নৈতিক দাবি। হামলাকারীরা এখনো ক্যাম্পাসে, হলে, এমনকি বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনে। বিচার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা পরিস্থিতি বানচাল করতে পারে।”
ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক বলেন, “জাকসু সংস্কার যেনতেনভাবে হয়েছে। ভোটার তালিকা ও আয়োজন—সবকিছুতে স্বচ্ছতার অভাব আছে।”
বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে না চালিয়ে উল্টো একটিকে আরেকটির বিপরীতে দাঁড় করানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) অমর্ত্য রায়।
তিনি বলেন, “জাকসু পেছানো এক ধরনের বার্তা দেয় যে নির্বাচন আর হবে না। প্রশাসন ও কিছু ছাত্রসংগঠনের ইচ্ছায়ই এমনটি হয়েছে। বিচার ও জাকসু একসঙ্গে করা সম্ভব ছিল। আমরা চাই—দুটোই তার সময়মতো হোক।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ১০ জানুয়ারি প্রকাশ হয় খসড়া ভোটার তালিকা। ফেব্রুয়ারিতে তফসিল ঘোষণার কথা থাকলেও তা হয়নি। এরপর ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষিত হলেও ভোটের জন্য দেওয়া হয় ৩১ জুলাই তারিখ—এবার যা স্থগিত হলো।
উপাচার্য বলেন, “আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। বিচার ও জাকসু সংস্কার—দুই কাজই একসঙ্গে করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দেখলেই বুঝবে, জুলাই পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক কিছু করেছি। কিছুটা সময় লাগছে, সেটাই শুধু।”