alt

news » campus

চবিতে সংঘর্ষের পর থমথমে পরিস্থিতি, ভিসির পদত্যাগ চান শিক্ষার্থীরা

সেনা, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল অব্যাহত

প্রতিনিধি, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) : সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে গতকাল রোববারের ভয়াবহ সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে -সংবাদ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষের জেরে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া বর্তমানে পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। এছাড়া ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএনও।

সংর্ঘষের সূত্রপাত হয় গত শনিবার রাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট এলাকায় একটি ভবনের দারোয়ানের সঙ্গে এক ছাত্রী বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে তার জেরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামের স্থানীয়দের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল রোববার ও দিনভর একাধিকবার দফায় সংর্ঘষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল রোববার দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। বর্তমানে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির যৌথবাহিনী টহল দিচ্ছে। সোমবার,(০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে নীরবতা বিরাজ করছে। ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই সীমিত। শহীদ মিনার চত্বরে এবং জোবরা গ্রামে সেনা সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুরের চিত্রও দেখা গেছে।

চবির উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি আছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যৌথবাহিনী কাজ করছে।’

এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার গতকাল রোববার রাতে সাংবাদিকদের জানান, চাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই এ ঘটনা ঘটেছে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘হাটহাজারী থানা থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবি দেরিতে সাড়া দিয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবং ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (আজ) থেকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ ও দীর্ঘমেয়াদে সমাধানের জন্য ২১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন এ কমিটির দায়িত্বে আছেন।

সংর্ঘষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী থানার ওসি আবু মোহাম্মদ কাউসার হোসেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সংর্ঘষের পর চমেক হাসপাতালে ১১৪ জন এবং চবি মেডিকেল সেন্টারে ৩০০ এর অধিক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় চিকিৎসা নেন।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবির ছাত্র সংগঠনগুলো পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় তীব্র নিন্দা জানায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিসিসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশেষায়িত সেল গঠন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

জোবরা গ্রামবাসীও সাত দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সংঘর্ষে উসকানিদাতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, ভাড়া বাসায় শিক্ষার্থীদের শালীন আচরণ নিশ্চিত করা, অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ এবং প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করা।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত আটটা) পাওয়া খবর অনুযায়ী, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে নীরবতা বিরাজ করছে। সেনা, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল অব্যাহত আছে।

ছবি

জাবি শিক্ষার্থীদের কাছে মুচলেকা দিয়ে ছাড় পেল ২৮ বাস

ছবি

জাকসু নির্বাচন: সরগরম ক্যাম্পাস, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বাজেট-হুমকিতে নতুন মোড়!

ছবি

৯ সেপ্টেম্বরই ডাকসু নির্বাচন, চেম্বার আদালতের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল

ছবি

ডাকসু: কেন্দ্রের সংখ্যা ও দূরত্ব নিয়ে আপত্তি

ছবি

ডাকসু: ফের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, শুধু ভোটের দিন বন্ধ থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা

ছবি

বাকৃবি: সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ, কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে তালা

ছবি

জাকসু: প্রচারণায় বৈচিত্র্য, বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট

চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ: আট গ্রামবাসী গ্রেপ্তার

ছবি

ডাকসু: রিটকারীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, কে এই আলী হুসেন

ছবি

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিতই থাকল, ডাকসু নির্বাচনের বাধা কাটলো

ছবি

জাবি শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে আটকা ২৮ বাস

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহারে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন বাকৃবির শিক্ষার্থীরা

ছবি

ভিন্ন ইস্যুতে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা ও সংঘর্ষ: উদ্বেগ শিক্ষা উপদেষ্টার

ছবি

দায়িত্ব পালনে বাঁধা: ছাত্রদলের কর্মসূচি বয়কটের ডাক ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের

ছবি

রাকসুঃ প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরাও হচ্ছেন ভোটার , আবার পরিবর্তন তফসিল

ছবি

ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণার মাঝে হাসপাতালে মেঘমল্লার বসু, অপারেশন

ছবি

উত্তরা ইপিজেডে গুলিতে শ্রমিক নিহত: জগন্নাথে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

ডাকসু: বুধবার স্থগিতাদেশ বাতিলের শুনানি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে

ছবি

ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের পর রিটকারী ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকি, তদন্তে দুটি কমিটি গঠন

ছবি

চবি প্রশাসনের নির্দেশ: লুট হওয়া রামদা, দা, রড ও দেশি অস্ত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দিতে হবে

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত ১১টার পর হলে প্রবেশ, ৯১ ছাত্রী তলব; সমালোচনার পর নোটিস প্রত্যাহার

ছবি

শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের বক্তব্যঃ নিরাপদ ক্যাম্পাস ও নারী শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে

ছবি

ডাকসু: রিটকারী ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকিদাতা ‘শিবিরের সঙ্গে জড়িত’, বললেন বাগছাসের কাদের

৬ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো রেলপথ অবরোধে বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

ছবি

ডাকসু নিয়ে সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই হবে: বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ

ছবি

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, প্রতিবাদ–সমালোচনা

ছবি

বাকৃবি ভিসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

ছবি

রাকসু: বাড়ছে মনোনয়ন ও ডোপ টেস্টের সময়

ছবি

জাকসু: প্রার্থিতা প্রত্যাহারে হুমকির অভিযোগ

ছবি

ডাকসু নির্বাচন: পক্ষে-বিপক্ষে উত্তাল ঢাবি

ছবি

ডাকসু: হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আটকালো আপিল বিভাগে, নির্বাচনে আপাতত বাধা নেই

ছবি

ডাকসু নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের আদেশে ঢাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ছবি

ডাকসু: রিটের সময় নিয়ে প্রশ্ন উমামার

ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ: আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন, তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী সংকটাপন্ন

tab

news » campus

চবিতে সংঘর্ষের পর থমথমে পরিস্থিতি, ভিসির পদত্যাগ চান শিক্ষার্থীরা

সেনা, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল অব্যাহত

প্রতিনিধি, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)

শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে গতকাল রোববারের ভয়াবহ সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে -সংবাদ

সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষের জেরে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া বর্তমানে পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। এছাড়া ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএনও।

সংর্ঘষের সূত্রপাত হয় গত শনিবার রাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেইট এলাকায় একটি ভবনের দারোয়ানের সঙ্গে এক ছাত্রী বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে তার জেরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামের স্থানীয়দের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল রোববার ও দিনভর একাধিকবার দফায় সংর্ঘষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল রোববার দুপুর ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। বর্তমানে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির যৌথবাহিনী টহল দিচ্ছে। সোমবার,(০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে নীরবতা বিরাজ করছে। ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই সীমিত। শহীদ মিনার চত্বরে এবং জোবরা গ্রামে সেনা সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও যানবাহন ভাঙচুরের চিত্রও দেখা গেছে।

চবির উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি আছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যৌথবাহিনী কাজ করছে।’

এদিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার গতকাল রোববার রাতে সাংবাদিকদের জানান, চাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই এ ঘটনা ঘটেছে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘হাটহাজারী থানা থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবি দেরিতে সাড়া দিয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে এবং ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার (আজ) থেকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ ও দীর্ঘমেয়াদে সমাধানের জন্য ২১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন এ কমিটির দায়িত্বে আছেন।

সংর্ঘষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী থানার ওসি আবু মোহাম্মদ কাউসার হোসেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সংর্ঘষের পর চমেক হাসপাতালে ১১৪ জন এবং চবি মেডিকেল সেন্টারে ৩০০ এর অধিক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় চিকিৎসা নেন।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবির ছাত্র সংগঠনগুলো পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় তীব্র নিন্দা জানায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিসিসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশেষায়িত সেল গঠন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

জোবরা গ্রামবাসীও সাত দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সংঘর্ষে উসকানিদাতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, ভাড়া বাসায় শিক্ষার্থীদের শালীন আচরণ নিশ্চিত করা, অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ এবং প্রশাসনিক তদারকি জোরদার করা।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত আটটা) পাওয়া খবর অনুযায়ী, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে নীরবতা বিরাজ করছে। সেনা, র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির টহল অব্যাহত আছে।

back to top