ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ- জাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। এবার ২৫টি পদে ১৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বটতলা, মুরাদ চত্বর, টারজান পয়েন্ট এবং বিভিন্ন হল ও অনুষদে পোস্টার, লিফলেট, পথসভা, এবং আলাপচারিতায় মুখর শিক্ষার্থীরা।
অনলাইন এবং অফলাইনে ব্যতিক্রমধর্মী এবং দৃষ্টিনন্দন প্রচারণা যেমন- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যরসাত্মক ভিডিওচিত্র, প্রার্থী পরিচিতিমূলক ডকুমেন্টারি নির্মাণ নির্বাচনে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
তবে পরীক্ষার চাপে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এতে পুরোপুরি যুক্ত হতে পারছেন না। ভূগোল বিভাগের শিক্ষার্থী তাসিন বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা থাকায় নির্বাচনী উৎসব উপভোগ করা কঠিন। প্রশাসন দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।’
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরীক্ষার সময়সূচি সমন্বয়ের জন্য অনুরোধ করেছি।’ নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের হাতে নেই, তবে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’
প্রতিশ্রুতির বৈচিত্র্য
প্রার্থীদের ইশতেহারে বৈচিত্র্য এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণ। নারীকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও অধিকার, সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবন, সাহিত্যচর্চা, গবেষণা, হলভিত্তিক অবকাঠামো ও দৈনন্দিন সেবার উন্নয়ন- সব ক্ষেত্রেই প্রতিশ্রুতির ভিন্নতা চোখে পড়ছে।
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আতিকুর রহমান জনি আধুনিক প্রেস স্থাপন, আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলা, কর্মশালা এবং প্যালেস্টাইন-থিমযুক্ত ম্যাগাজিন প্রকাশের পরিকল্পনা করেছেন।
একই পদে মার্যিউর রহমান চৌধুরী ক্যাম্পাসে বইয়ের বাজার গড়ে তোলা, নিয়মিত জার্নাল প্রকাশ এবং টিএসসিকেন্দ্রিক সাহিত্য সংগঠন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ ইফরাত আমিন অক্ষর টিএসসির কক্ষ সঙ্কট নিরসন, বৈসাবি উৎসব উদযাপন, মুক্তমঞ্চ সংস্কার এবং জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. আনোয়ার হোসেন ওপেন মাইক্রোফোন ডে, হলভিত্তিক প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক সংযোগের পরিকল্পনা করেছেন।
কয়টি প্যানেল
জাকসু নির্বাচনে এবারে মোট আটটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ এবং চারটি আংশিক। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে ভিপি পদে শেখ সাদী হাসান এবং জিএস পদে তানজিলা হোসাইন বৈশাখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে ভিপি পদে আরিফুল্লাহ আদিব এবং জিএস পদে মাজহারুল ইসলাম। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’- ভিপি পদে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং জিএস পদে আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম লড়ছেন।
প্রগতিশীল ধারার ছাত্র ইউনিয়নের দুটি অংশ আলাদা হয়ে গঠন করেছে দুটি প্যানেল।’ সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে ভিপি পদে অমর্ত্য রায় এবং জিএস পদে শরণ এহসান নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেখানে সাতজন আদিবাসী এবং ছয়জন সনাতনী প্রার্থী রয়েছেন।
আর ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ এ জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাহিদুল ইসলাম ইমন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) আংশিক প্যানেল দিয়েছে। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. সজিব আহম্মদ জেনিচ এবং কার্যকরী সদস্য পদে রোকেয়া আমিন অনুসূয়া।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে দুটি ভিন্ন ধারা -‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ যেখানে ভিপি পদে আব্দুর রশিদ জিতু এবং জিএস পদে মো. শাকিল আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আর ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ যেখানে ভিপি পদে আছেন মাহফুজুল ইসলাম মেঘ।
নারী প্রার্থী
এবার মোট প্রার্থীর ৪৫ জন নারী। তবে ভিপি পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া এবং ছাত্রদল সমর্থিত তানজিলা হোসাইন বৈশাখী।
ডোপ টেস্ট
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাকসু নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট চালু করেছে। মাদকের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে বাতিল হবে প্রার্থিতা।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ- জাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। এবার ২৫টি পদে ১৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বটতলা, মুরাদ চত্বর, টারজান পয়েন্ট এবং বিভিন্ন হল ও অনুষদে পোস্টার, লিফলেট, পথসভা, এবং আলাপচারিতায় মুখর শিক্ষার্থীরা।
অনলাইন এবং অফলাইনে ব্যতিক্রমধর্মী এবং দৃষ্টিনন্দন প্রচারণা যেমন- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাস্যরসাত্মক ভিডিওচিত্র, প্রার্থী পরিচিতিমূলক ডকুমেন্টারি নির্মাণ নির্বাচনে অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
তবে পরীক্ষার চাপে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এতে পুরোপুরি যুক্ত হতে পারছেন না। ভূগোল বিভাগের শিক্ষার্থী তাসিন বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা থাকায় নির্বাচনী উৎসব উপভোগ করা কঠিন। প্রশাসন দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।’
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরীক্ষার সময়সূচি সমন্বয়ের জন্য অনুরোধ করেছি।’ নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের হাতে নেই, তবে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’
প্রতিশ্রুতির বৈচিত্র্য
প্রার্থীদের ইশতেহারে বৈচিত্র্য এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণ। নারীকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও অধিকার, সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবন, সাহিত্যচর্চা, গবেষণা, হলভিত্তিক অবকাঠামো ও দৈনন্দিন সেবার উন্নয়ন- সব ক্ষেত্রেই প্রতিশ্রুতির ভিন্নতা চোখে পড়ছে।
সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে আতিকুর রহমান জনি আধুনিক প্রেস স্থাপন, আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলা, কর্মশালা এবং প্যালেস্টাইন-থিমযুক্ত ম্যাগাজিন প্রকাশের পরিকল্পনা করেছেন।
একই পদে মার্যিউর রহমান চৌধুরী ক্যাম্পাসে বইয়ের বাজার গড়ে তোলা, নিয়মিত জার্নাল প্রকাশ এবং টিএসসিকেন্দ্রিক সাহিত্য সংগঠন চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ ইফরাত আমিন অক্ষর টিএসসির কক্ষ সঙ্কট নিরসন, বৈসাবি উৎসব উদযাপন, মুক্তমঞ্চ সংস্কার এবং জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে মো. আনোয়ার হোসেন ওপেন মাইক্রোফোন ডে, হলভিত্তিক প্রতিযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক সংযোগের পরিকল্পনা করেছেন।
কয়টি প্যানেল
জাকসু নির্বাচনে এবারে মোট আটটি প্যানেল অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ এবং চারটি আংশিক। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে ভিপি পদে শেখ সাদী হাসান এবং জিএস পদে তানজিলা হোসাইন বৈশাখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে ভিপি পদে আরিফুল্লাহ আদিব এবং জিএস পদে মাজহারুল ইসলাম। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’- ভিপি পদে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং জিএস পদে আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম লড়ছেন।
প্রগতিশীল ধারার ছাত্র ইউনিয়নের দুটি অংশ আলাদা হয়ে গঠন করেছে দুটি প্যানেল।’ সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলে ভিপি পদে অমর্ত্য রায় এবং জিএস পদে শরণ এহসান নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যেখানে সাতজন আদিবাসী এবং ছয়জন সনাতনী প্রার্থী রয়েছেন।
আর ‘সংশপ্তক পর্ষদ’ এ জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাহিদুল ইসলাম ইমন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্কসবাদী) আংশিক প্যানেল দিয়েছে। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে মো. সজিব আহম্মদ জেনিচ এবং কার্যকরী সদস্য পদে রোকেয়া আমিন অনুসূয়া।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে দুটি ভিন্ন ধারা -‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ যেখানে ভিপি পদে আব্দুর রশিদ জিতু এবং জিএস পদে মো. শাকিল আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আর ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ যেখানে ভিপি পদে আছেন মাহফুজুল ইসলাম মেঘ।
নারী প্রার্থী
এবার মোট প্রার্থীর ৪৫ জন নারী। তবে ভিপি পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া এবং ছাত্রদল সমর্থিত তানজিলা হোসাইন বৈশাখী।
ডোপ টেস্ট
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাকসু নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট চালু করেছে। মাদকের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে বাতিল হবে প্রার্থিতা।