ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নির্ধারিত সময়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালত যে আদেশ দিয়েছে, তা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান থাকবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার,(০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।
দুপক্ষের শুনানি শেষে আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘হাই কোর্টের আদেশের বিষয়ে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রইল। একইসঙ্গে হাই কোর্টের আদেশ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।’
আপিল বিভাগের আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন ঢাবির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত সোমবার ডাকসুর নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলো। এর ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে গিয়েছিল।
হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে সেদিনই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত নিয়মিত সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন (দেওয়ানি বিবিধ আবেদন) না করা পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। ফলে পূণরায় নির্বাচনের পথ খোলে।
গতকাল মঙ্গলবার সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন আদালতে দাখিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ, যা চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। এদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে। হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশের মেয়াদ এই সময় পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
বুধবার ঢাবি কর্তৃপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আদালতে ঢাবির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। আর রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানিতে ছিলেন। এ ছাড়া ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক শুনানি করেন।
আদেশের বিষয়ে মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী আর কোনো আইনি বাধা থাকল না। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ফ্রি, ফেয়ার এবং ইমপার্শিয়াল ওয়েতে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবেই।’
আদালতে শুনানির শুরুতে শিশির মনির আদালতকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। আর একাত্তরের পর এই ৫৪ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৭ বার।
তফসিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন এসএম ফরহাদ। তিনি ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিয়ে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট রিট করেন ডাকসু নির্বাচনে বামজোট মনোনীত ‘অপরাজেয় ৭১’, ‘অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম।
গত সোমবার রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। এতে ডাকসুর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় জিএস পদে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
হাইকোর্ট এসএম ফরহাদের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য তথা সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণাদিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে রিট আবেদনকারীকে নির্দেশ দেয়।
আদেশে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে অনুসন্ধান করবে। রিট আবেদনকারী, ফরহাদসহ অন্য নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনবেন। ২১ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দেবেন।
এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বনিন্ধতা করছে। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সদস্যপদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট এক হাজার ৩৫ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্ধিতায় আছেন।
ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো দুটি প্যানেল দিয়েছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে মোট প্যানেল ১০টির মতো।
####
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নির্ধারিত সময়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালত যে আদেশ দিয়েছে, তা বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান থাকবে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বুধবার,(০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।
দুপক্ষের শুনানি শেষে আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘হাই কোর্টের আদেশের বিষয়ে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রইল। একইসঙ্গে হাই কোর্টের আদেশ আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।’
আপিল বিভাগের আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন ঢাবির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত সোমবার ডাকসুর নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছিলো। এর ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে গিয়েছিল।
হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে সেদিনই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত নিয়মিত সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন (দেওয়ানি বিবিধ আবেদন) না করা পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। ফলে পূণরায় নির্বাচনের পথ খোলে।
গতকাল মঙ্গলবার সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন আদালতে দাখিল করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ, যা চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। এদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে। হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশের মেয়াদ এই সময় পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
বুধবার ঢাবি কর্তৃপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে ওঠে। আদালতে ঢাবির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। আর রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানিতে ছিলেন। এ ছাড়া ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী এসএম ফরহাদের পক্ষে আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক শুনানি করেন।
আদেশের বিষয়ে মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী আর কোনো আইনি বাধা থাকল না। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ফ্রি, ফেয়ার এবং ইমপার্শিয়াল ওয়েতে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবেই।’
আদালতে শুনানির শুরুতে শিশির মনির আদালতকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ৫০ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। আর একাত্তরের পর এই ৫৪ বছরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছে মাত্র ৭ বার।
তফসিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন এসএম ফরহাদ। তিনি ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিয়ে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট রিট করেন ডাকসু নির্বাচনে বামজোট মনোনীত ‘অপরাজেয় ৭১’, ‘অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম।
গত সোমবার রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। এতে ডাকসুর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় জিএস পদে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
হাইকোর্ট এসএম ফরহাদের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য তথা সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণাদিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে রিট আবেদনকারীকে নির্দেশ দেয়।
আদেশে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে অনুসন্ধান করবে। রিট আবেদনকারী, ফরহাদসহ অন্য নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনবেন। ২১ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দেবেন।
এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বনিন্ধতা করছে। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সদস্যপদে সবচেয়ে বেশি ২১৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট এক হাজার ৩৫ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্ধিতায় আছেন।
ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো দুটি প্যানেল দিয়েছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে মোট প্যানেল ১০টির মতো।
####