জাকসু নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেন্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ — জাকসু নির্বাচনকে এই প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তে বিতর্ক তৈরী হয়েছে। জাকসু নির্বাচনে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায়।
প্রাথমিক ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অমর্ত্যর নাম ছিল। প্রার্থিতা বাছাইয়ের সময়ও তিনি বাদ পড়েননি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাতেও অমর্ত্যর নাম ছিল। কিন্তু নির্বাচনের চার দিন আগে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। সে কারণেই অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন।
অমর্ত্যর প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও পক্ষপাতমূলক’ আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কও ৮ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে অমর্ত্যর প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করে।
তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্রের ৮(চ) ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার হারিয়েছে, কারণ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর এই বিষয়ে কেবল উপাচার্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অমর্ত্যর রিট
কিছু গণমাধ্যমে জাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে অমর্ত্য রায়ের রিট দায়েরের খবর প্রকাশিত হলেও তিনি এটি অস্বীকার করেছেন। অমর্ত্য বলেন, ‘জাকসু স্থগিত চেয়ে রিট নয়, আমি আমার প্রার্থিতা পুনর্বহাল চেয়ে রিট করেছি।’
প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বিতর্ক
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি অমর্ত্য তিনবার স্নাতক চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হননি। জাকসু গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী তাকে ভোটার ও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) প্রকাশিত আরেক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ১ম পর্ব স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৪৭-তম ব্যাচে ভর্তিকৃত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন গত ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে স্নাতকোত্তর পর্বে ভর্তির জন্য আবেদন করলে তা বিবেচনার জন্য গত ০১-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত শিক্ষা পর্ষদের সভায় উপস্থাপিত হয়।
সভায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় যে, অমর্ত্য রায় জন ২০২১ সালে ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, এবং ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পান, অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। উক্ত পরীক্ষা ০৬-০৭-২০২৩ তারিখে শুরু হয়ে ১৭-০৮-২০২৩ তারিখে শেষ হয়েছিলো।
তিনি উল্লিখিত দু’টি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে ১ম বার ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার জন্য আবেদন করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করলে তিনি উক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে ওই দু’টি কোর্সে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন। কিন্তু তিনি আবারো উভয় কোর্সেই ‘এফ’ গ্রেড পান অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। উক্ত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০২৪ সালের ২৯ মে শুরু হয়ে জুনের ৯ তারিখে শেষ হয়েছিলো।
ওই দুটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে তিনি ২য় বার ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার আবেদন করেন এবং কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন দেয়। তিনি ৩য় বার (অর্থাৎ ২য় বার মানোন্নয়ন) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪০৭ নং কোর্সে কৃতকার্য ও ৪০৮ নং কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পান, অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। ওই পরীক্ষা এ বছরের মে মাসের ১২ এবং ১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২ (ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের পূর্বে ভর্তিকৃত একজন শিক্ষার্থী শুধু ২টি কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পেলে অর্থাৎ অকৃতকার্য হলে উক্ত ২টি কোর্সে একবারই মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাবেন। গত ০১-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত শিক্ষা পর্ষদের সভায় অমর্ত্য রায় জন-এর ২য় বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার বিষয়টি পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ অনুযায়ী বিধিবহির্ভূত বলে পরিগণিত হয়।
তবে শিক্ষা পর্ষদ তার শিক্ষাজীবনের বিষয়টি ‘মানবিক বিবেচনায়’ নিয়ে দ্বিতীয় বার দেয়া পরীক্ষা বিশেষ পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করবার জন্য সুপারিশ করে। এছাড়া ৪০৮ নং কোর্সে বিশেষ পরীক্ষা দেবার আবেদনটি ২য় বার বিশেষ পরীক্ষা দেয়ার আবেদন হিসেবে বিবেচনায় নেবার জন্য সুপারিশ করে। ওই সুপারিশ গত ০৪-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপিত হলে অনুমোদিত হয়।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২২-০২-২০২৪ তারিখে অমর্ত্য রায় জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। উক্ত বহিষ্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা করার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৪ সালের ২১ মার্চ আবেদনকারীর পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশনা প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন-এর ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সের প্রথম মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেয়া হয়েছিলো। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আশুলিয়া থানার মামলা নং ১৭/২৪-এ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে অব্যাহতি দিলে উক্ত রায়সহ তিনি তার বিরুদ্ধে দেয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদন দ্রুততার সঙ্গে এজেন্ডাভুক্ত করে ৩০-১২-২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় মানবিক বিবেচনায় নিয়ে উক্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২(ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী এবং বিশেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী জাকসু নির্বাচন কমিশন তাকে জাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাকসু নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেন্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ — জাকসু নির্বাচনকে এই প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তে বিতর্ক তৈরী হয়েছে। জাকসু নির্বাচনে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী অমর্ত্য রায়।
প্রাথমিক ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অমর্ত্যর নাম ছিল। প্রার্থিতা বাছাইয়ের সময়ও তিনি বাদ পড়েননি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাতেও অমর্ত্যর নাম ছিল। কিন্তু নির্বাচনের চার দিন আগে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। সে কারণেই অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন।
অমর্ত্যর প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ ও পক্ষপাতমূলক’ আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কও ৮ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে অমর্ত্যর প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করে।
তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনতন্ত্রের ৮(চ) ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার হারিয়েছে, কারণ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর এই বিষয়ে কেবল উপাচার্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অমর্ত্যর রিট
কিছু গণমাধ্যমে জাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে অমর্ত্য রায়ের রিট দায়েরের খবর প্রকাশিত হলেও তিনি এটি অস্বীকার করেছেন। অমর্ত্য বলেন, ‘জাকসু স্থগিত চেয়ে রিট নয়, আমি আমার প্রার্থিতা পুনর্বহাল চেয়ে রিট করেছি।’
প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বিতর্ক
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি অমর্ত্য তিনবার স্নাতক চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হননি। জাকসু গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী তাকে ভোটার ও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ সেপ্টেম্বর (সোমবার) প্রকাশিত আরেক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ১ম পর্ব স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৪৭-তম ব্যাচে ভর্তিকৃত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন গত ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে স্নাতকোত্তর পর্বে ভর্তির জন্য আবেদন করলে তা বিবেচনার জন্য গত ০১-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত শিক্ষা পর্ষদের সভায় উপস্থাপিত হয়।
সভায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় যে, অমর্ত্য রায় জন ২০২১ সালে ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, এবং ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পান, অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। উক্ত পরীক্ষা ০৬-০৭-২০২৩ তারিখে শুরু হয়ে ১৭-০৮-২০২৩ তারিখে শেষ হয়েছিলো।
তিনি উল্লিখিত দু’টি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে ১ম বার ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার জন্য আবেদন করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করলে তিনি উক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে ওই দু’টি কোর্সে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন। কিন্তু তিনি আবারো উভয় কোর্সেই ‘এফ’ গ্রেড পান অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। উক্ত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০২৪ সালের ২৯ মে শুরু হয়ে জুনের ৯ তারিখে শেষ হয়েছিলো।
ওই দুটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে তিনি ২য় বার ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ৪র্থ পর্ব স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষা অর্থাৎ ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার আবেদন করেন এবং কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন দেয়। তিনি ৩য় বার (অর্থাৎ ২য় বার মানোন্নয়ন) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪০৭ নং কোর্সে কৃতকার্য ও ৪০৮ নং কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পান, অর্থাৎ অকৃতকার্য হন। ওই পরীক্ষা এ বছরের মে মাসের ১২ এবং ১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২ (ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের পূর্বে ভর্তিকৃত একজন শিক্ষার্থী শুধু ২টি কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড পেলে অর্থাৎ অকৃতকার্য হলে উক্ত ২টি কোর্সে একবারই মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার সুযোগ পাবেন। গত ০১-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত শিক্ষা পর্ষদের সভায় অমর্ত্য রায় জন-এর ২য় বার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেবার বিষয়টি পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ অনুযায়ী বিধিবহির্ভূত বলে পরিগণিত হয়।
তবে শিক্ষা পর্ষদ তার শিক্ষাজীবনের বিষয়টি ‘মানবিক বিবেচনায়’ নিয়ে দ্বিতীয় বার দেয়া পরীক্ষা বিশেষ পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করবার জন্য সুপারিশ করে। এছাড়া ৪০৮ নং কোর্সে বিশেষ পরীক্ষা দেবার আবেদনটি ২য় বার বিশেষ পরীক্ষা দেয়ার আবেদন হিসেবে বিবেচনায় নেবার জন্য সুপারিশ করে। ওই সুপারিশ গত ০৪-০৯-২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপিত হলে অনুমোদিত হয়।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২২-০২-২০২৪ তারিখে অমর্ত্য রায় জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। উক্ত বহিষ্কারাদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা করার প্রেক্ষিতে আদালত ২০২৪ সালের ২১ মার্চ আবেদনকারীর পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশনা প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন-এর ৪০৭ ও ৪০৮ নং কোর্সের প্রথম মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেয়া হয়েছিলো। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আশুলিয়া থানার মামলা নং ১৭/২৪-এ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে অব্যাহতি দিলে উক্ত রায়সহ তিনি তার বিরুদ্ধে দেয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদন দ্রুততার সঙ্গে এজেন্ডাভুক্ত করে ৩০-১২-২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় মানবিক বিবেচনায় নিয়ে উক্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ এর ধারা ১০ (ii), ১২(ii) ও ১৩(iv) অনুযায়ী এবং বিশেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রেক্ষিতে অমর্ত্য রায় জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী জাকসু নির্বাচন কমিশন তাকে জাকসু নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে।